ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পক্ষে টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে ব্যাঙ্গালুরু থেকে এক ভারতীয় যুুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সিরিয়ায় ও ইরাকে কথিত ‘জিহাদি’ লড়াইরত গোষ্ঠীটির পক্ষে মেহেদি মাশরুর বিশ্বাস নামে এই যুবক ‘@শামিউইটনেস’ নামে প্রচারণা চালানো ও খবর পোস্ট করতেন। শুক্রবার রাতে ২৪ বছর বয়সি এই যুবককে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু মেহেদি দাবি করছেন, আইএসের টুইটার পরিচালনায় তার কোনো হাত নেই। সংবাদসূত্র : ইনডিয়া টাইমস, জি-নিউজ, টাইমস অব ইনডিয়া
এর আগে, ব্যাঙ্গালুরু থেকে এক ভারতীয় টুইটার অ্যাকাউন্টটি পরিচালনা করেন বলে জানিয়েছিল ব্রিটিশ নেটওয়ার্ক চ্যানেল ফোর। এরপরই তার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেন পরিচালনাকারী মাশরুর। চ্যানেলটির জানিয়েছে, ‘শ্যামিউইটনেস’ নাম নিয়ে ওই ব্যক্তির টুইট মাসে অন্তত ২০ লাখ জন ফলো করে। সম্ভবত আইএসের সবচেয়ে প্রভাবশালী টুইটার অ্যাকাউন্ট চালান এই যুবক। এর ফলোয়ারের সংখ্যা ১৭ হাজার ৭০০। চ্যানেল ফোরে ভারতীয় ওই ব্যক্তির নাম ‘মেহেদি’ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও ভারতীয় পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতের পুরো নাম প্রকাশ করে গণমাধ্যমে তার একটি ছবি দিয়েছে।
কীভাবে তার খোঁজ পাওয়া গেল? ব্রিটিশ চ্যানেলটি জানাচ্ছে, তারা খবর পায় ‘@শামিউইটনেস’ নামে অ্যাকাউন্টটি যার, সেই ব্যক্তিরই এক সময় এল-সালতাদোর নামেও টুইটার অ্যাকাউন্ট ছিল। একই নামে ফেসবুক ও গুগল প্লাসেও অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন তিনি। সেই সূত্র ধরেই তার আসল পরিচয় খুঁজে বের করা হয়। তার ছবি এবং অবস্থানও জানা যায়।
ব্রিটেনের চ্যানেলটিতে দাবি করা হয়, আইএসের সবচেয়ে জনপ্রিয় টুইটার পরিচালনার অন্তরালে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে ব্যাঙ্গালুরু শহরে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। ওই টিভি চ্যানেলকে মেহেদি জানিয়েছেন, তিনি নিজেও আইএসে যোগ দিতে উৎ?সাহী ছিলেন। কিন্তু পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য হওয়ায় দেশ ছেড়ে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। নিজের সমর্থন ছড়িয়ে দিতে তাই তিনি বেছে নিয়েছেন ওয়েব দুনিয়াকে।
ভারতীয় গোয়েন্দারা জানান, এই নামটি আগেও তাদের হাতে এসেছিল। মহারাষ্ট্র থেকে আইএসে যোগ দিতে যাওয়া চার যুবকের মধ্যে যিনি দেশে ফিরেছেন, সেই আরিব মাজিদ জেরার সময় ওই টুইটার হ্যান্ডলের কথা বলেছিলেন। ওই অ্যাকাউন্টের অধিকারী যে ব্যাঙ্গালুরুর বাসিন্দা, এমন কথাও তিনি শুনেছেন বলে জানিয়েছিলেন মাজিদ।
টুইটারে তার এই অ্যাকাউন্টটি চালু হয়েছিল গত বছর। এরপর থেকে প্রতিদিন আইএসের সমর্থনে হাজার হাজার টুইট করতেন মেহেদি। পোস্ট করতেন ছবি এবং ভিডিও। আমেরিকান স্বেচ্ছাসেবী পিটার কাসিগের শিরশ্ছেদের ভিডিওটি তিনি বেশ কয়েকবার পোস্ট করেছিলেন। আর প্রতি মাসে প্রায় ২০ লাখ মানুষ সেসব টুইট পড়েছেন। তার টুইট পড়ে অনেকেই আইএসে যোগ দিতে উৎ?সাহী হয়েছেন বলে ব্রিটেনের ওই চ্যানেলটি দাবি করেছে।
অন্য একটি বস্নগেও জিহাদি আদর্শের কথা নিয়মিত লিখতেন মেহেদি। তবে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আর পাঁচ জনের অ্যাকাউন্টের কোনো পার্থক্য নেই। বিভিন্ন ধরনের জোকস, মজার ছবি এবং সিনেমা নিয়ে মন্তব্য বা বন্ধুদের সঙ্গে পিৎ?জা খাওয়ার দৃশ্যই ছিল তার পোস্টের বিষয়।
Post by আশিকুর রহমান চৌধুরী স্বদেশনিউজ২৪.কম