রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের উপর খোলা ডাস্টবিন আর ময়লার কনটেইনার রাখায় ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ, হচ্ছে পরিবেশ দূষণ আর ব্যাহত হচ্ছে সড়কে স্বাভাবিক চলাচল।
জনগণের অসচেতনতা আর স্থান সংকটের কথা বলে সিটি করপোরেশন দায় এড়াতে চাইলেও পরিবেশবিদরা বলছেন, নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখার পুরো দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতে থাকায় এরকম দায় সারা উত্তর কোনভাবেই কাম্য নয়। এছাড়া, দিনের পরিবর্তে রাতের বেলা বর্জ্য অপসারণের পরামর্শ তাদের।
রাজধানীর রামপুরা বাজার এলাকা। প্রধান সড়কের উপর রাখা সিটি করপোরেশনের ডাস্টবিন। এর পাশেই বসেছে ভাসমান মাছের বাজার। ডাস্টবিন, মাছের বাজার আর ক্রেতা, সবমিলিয়ে চলাচলের রাস্তা প্রায় অর্ধেক বেদখল। একই দৃশ্য দেখা যায় নগরীর প্রায় সব এলাকাতেই।
সিটি করপোরেশনের তথ্যানুযায়ী রাজধানীতে দুই সিটি করপোরেশনের অধীনে ডাস্টবিন রয়েছে ৬শ’ উপরে আর কনটেইনার আছে প্রায় ৫শ’। এছাড়া ব্যক্তিগত ডাস্টবিনের সংখ্যা দুই শতাধিক। এসবের অধিকাংশই রাখা কোন না কোন সড়কের উপর। এরকম যেখানে সেখানে ডাস্টবিন, উন্মুক্ত স্থানে ময়লার স্তূপ আর খোলা ট্রাকে বর্জ্য অপসারণের ফলে যেমন হচ্ছে পরিবেশ দূষণ তেমনি ভোগান্তি বাড়ছে নগরবাসীর।
নগরবাসীর এই ভোগান্তির দায় নিতে রাজি নয় সিটি করপোরেশন। সাধারণ মানুষের অসচেতনতা, জনবল সঙ্কট আর সিটি করপোরেশনের স্থান সঙ্কটের কথা বলে দায় এড়াতে চাইলেন দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনছার আলী খান।
তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব হলো ২৪ ঘণ্টায় একবার সিটি পরিষ্কার করা। এগুলো রাখার জায়গা নেই। এক্ষেত্রে সকলকেই সচেতন হতে হবে।’
নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখার পুরো দায়িত্ব ও ক্ষমতা সিটি করপোরেশনের হাতে থাকার পরও স্থান সঙ্কট আর জনবলের অভাবের কথা বলে তারা দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করে পরিবেশবিদদের। পাশাপাশি পরামর্শ দিলেন, দিনে নয় বর্জ্য অপসারণ করতে হবে রাতে।
এই বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের নির্বাহী সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান বলেন, ‘লোকবল, যানবাহনের অজুহাত না দিয়ে বরং যেগুলো আছে সেগুলোরই যথাযথ ব্যবহার করা দরকার।’
একটি আদর্শ নগরীর ২৫ ভাগ রাস্তা প্রয়োজন হলেও আমাদের আছে মাত্র ৮ ভাগ। তার উপরে যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং ও রাস্তার উপরে কন্টেইনার ও অবৈধ ভাসমান বাজারের ফলে যা আছে, তার অর্ধেকটাই বেদখল।
ফলে কোনোভাবেই যেনো দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না নগরবাসীর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বল্প সম্পদের সঠিক ব্যবহার আর কর্তা ব্যক্তিদের আরেকটু দায়িত্বশীল ভূমিকা হয়তো কিছুটা হলেও ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে পারে নগরবাসীকে।