মডেলিং ও অভিনয় দিয়ে বছর কয়েক আগেও দর্শক মাতিয়ে রাখতেন। অভিনয়শৈলী ও সৌন্দর্যগুণে বেশ প্রশংসাও পান। কিন্তু এখন তিনি কোথায়! মিডিয়ায় কোথাও আছেন বলে কোন খবরও কারো জানা নেই। বলা হচ্ছে টিভি মিডিয়ার আলোচিত-সমালোচিত মডেল-অভিনেত্রী শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নির কথা। একসময় মিডিয়াপাড়ায় যাদের বিচরণে চঞ্চল্যের সৃষ্টি হতো এখন তাদের অনেকেই নেই। সে দলেরই একজন তিন্নি। দীর্ঘদিন ধরে পর্দায় নেই। অবশ্য গত বছরের জুলাই মাসের শেষ দিকে প্রকাশ্যে দেখা দিয়েছিলেন পর্দাকন্যা। তবে কোনো অনুষ্ঠানে নয়। মেয়ে ও বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোই ছিল সে প্রকাশ্যে আসার একমাত্র উদ্দেশ্য। আর সেটা প্রকাশ পায় তিন্নিরই নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে। তার এ প্রকাশ্যে দেখা দেয়া অনেকটা মিডিয়ায় ফেরার ইঙ্গিতই দিয়েছিল। আর এ নিয়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয় সে সময়। অবশ্য ফিরেছিলেনও তিন্নি। ‘একই বৃন্তে’ শিরোনামের একটি নাটকের মধ্যদিয়ে আবারো অভিনয়ে নিয়মিত হয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ‘চেক পোস্ট’ নামের আরও একটি খণ্ড নাটকে অভিনয় করেন তিন্নি। মিডিয়ায় ফেরায় তার ভক্তকুলে বেশ উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, চায়ের আড্ডা সর্বত্র তাকে নিয়েই আলোচনায় মেতে ওঠেন সবাই। কিন্তু তিন্নি তার ভক্তকুলে এই উচ্ছ্বাসটা বেশিদিন স্থায়ী হতে দেননি। অল্প সময়ের জন্য ফিরে আবার আড়ালেই চলে গেছেন। তাই বলা চলে ফিরেও ফিরলেন না তিন্নি। এরই মধ্যে নতুন আরেক খবরে তিন্নিকে নিয়ে হইচইয়ের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। আর তা হলো নতুন বিয়ে। ঠিক নতুন বিয়ে নয়। ২০১৪ সালে আদনান হুদা সাদ নামের এক যুবককে বিয়ে করেছেন তিন্নি। সে সংসারে আরিশা নামের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। আর সুখবরটি তিন্নি নিজেই জানান দিয়েছেন। কিন্তু সাদের সঙ্গে সংসারও টিকলো না এই মডেল-অভিনেত্রীর। কিছুদিন আগেই তাদের ছাড়াছাড়ির খবর ভেসে বেড়ায় সর্বত্র। আর সেই জল্পনা অনেকটাই সত্যিতে রূপ দিয়েছেন তিন্নি। সামপ্রতিক সময়ে তার চলাফেরা ও আচার-আচরণে এমনটাই লক্ষ্য করা গেছে। সে সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, এ মুহূর্তে সাদের বাড়ি ছেড়ে মায়ের সঙ্গে থাকছেন তিন্নি। দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে আলাদা হওয়ার কারণ সমপর্কে সেই সূত্র আরও জানায়, তিন্নির অবাধ চলাফেরা সাদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ নিয়ে দুজনের বনিবনা হচ্ছিল না কিছুতেই। আর তাই আলাদা পথ বেছে নিয়েছেন সাদ-তিন্নি। এ মুহূর্তে বাইরে তেমন কোথাও দেখা না গেলেও ফেসবুকে ঠিকই সক্রিয় রয়েছেন আলোচিত এ মডেল অভিনেত্রী। মূলত অভিনেতা আদনান ফারুক হিল্লোলের সঙ্গে বিচ্ছেদে তার ছন্দপতন হয়। মিডিয়ায় তার অনুপস্থিতি তৈরি হয়। আর সেই অনুপস্থিতি জন্ম দেয় নানা গুঞ্জন। মাদকাসক্তি, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, গৃহবন্দি, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রাবাস ও নিত্যনতুন সম্পর্কের কথা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সময়ে। তবে এসব গুঞ্জন এখনও চলছে সর্বত্র। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ২৮শে ডিসেম্বর অভিনেতা হিল্লোলকে প্রথম বিয়ে করেন তিন্নি। এতে এতটুকু ভাটা পড়েনি তার ক্যারিয়ারে। তবে তাদের দাম্পত্য প্রেমের একটি ভিডিও প্রকাশ হয়ে গেলে বিতর্কিত হন এই জুটি। কিছুদিনের মধ্যেই সন্তান ধারণ করেন তিন্নি। জন্ম নেয় কন্যা ওয়ারিশা। দাম্পত্য কলহের জের ধরেই ২০০৯ সালের শেষের দিকে তিন্নি-হিল্লোল আলাদা থাকতে শুরু করেন। বিচ্ছেদে আগ্রহ না থাকা সত্ত্বেও ২০১২ সালের শুরুর দিকে হিল্লোলের পাঠানো ডিভোর্স লেটারে স্বাক্ষর করেন তিন্নি। মেয়ের অভিভাবকত্ব নিয়ে সাবেক স্বামীর সঙ্গে মামলা নিয়েও আলোচনায় আসেন এ তারকা। নেত্রকোনার মেয়ে তিন্নি মডেলিংয়ের মাধ্যমে অভিনয়ে আসেন। ২০০৪ সালে তিনি মিস বাংলাদেশ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর তিনি অসংখ্যা জনপ্রিয় টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন। বিশেষত মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নির্দেশনায় একটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হন তিন্নি। নূরুল আলম আতিকের ‘ডুবসাঁতার’, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ও সোহানুর রহমান সোহানের ‘সে আমার মন কেড়েছে’ চলচ্চিত্রগুলোতে অভিনয় করেও বেশ প্রশংসা কুড়ান তিনি।