শিবনারায়ন চন্দরপলকে ব্যাটিং গ্রেট ভারতীয় শচিন টেন্ডুলকারের মতো স্মরণীয় বিদায় জানানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ক্যারিবিয় ক্রিকেটর বরপুত্র ব্রায়ান চার্লস লারা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ১২ সদস্যের অনুশীলন স্কোয়াড ঘোষণা করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড (ডব্লিউআইসিবি)। সেই স্কোয়াডে অভিজ্ঞ শিবনারায়ন চন্দরপলকে না রাখায় এমন মন্তব্য করেন লারা। সেই সাথে এই সিরিজে দলে জায়গা না পাওয়ায় অনেকের মতো লারাও মনে করছেন তার ক্যারিয়ার শেষ। তবে চন্দরপলকে বোর্ডের জাঁকজমকপূর্ণভাবে বিদায় জানানো উচিত বলে জানান লারা, ‘চন্দরপলের কাছে ঋণী ডব্লিউআইসিবি ও ক্যারিবীয়রা। তার বিদায়টা আরও ভালোভাবে করা উচিত।’
১৯৯৬ সালে টেস্ট অভিষেক ঘটে চন্দরপলের। এরপর থেকেই নিজের জাত চেনাতেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। খুব দ্রুতই দলের মধ্যে আস্থাটা তৈরিও করে ফেলেন চন্দরপল। এতটাই যে, লারা থাকাকালীন ও বিদায়ের পরও দলের একমাত্র ভরসার নাম ছিলো চন্দরপল। দলের ইনিংসকে বড় সংগ্রহে নিয়ে যেতে গেলো ২১ বছর ব্যাট হাতে রানের ফুলঝড়ি ফুটিয়েছেন তিনি। ক্যারিবিয় খেলোয়াড়দে মধ্যে টেস্ট ক্রিকেটে রান সংগ্রহের দিক দিয়ে টেস্টে বর্তমানে লারার পরই তার অবস্থান। লারার সাথে চন্দরপলের রানের ব্যবধান ৪৫। তাই অনেকেই ভেবেছিলেন আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজে টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে যাবেন চন্দরপল।
কিন্তু সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার সিরিজের দলেই রাখা হয়নি চন্দরপলকে। তাই অনেকে স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছেন ‘ক্যারিয়ার শেষ চন্দরপলের’। এমনটা মনে করছেন স্বয়ং লারা নিজেও। তবে চন্দরপলের বিদায়টা বোর্ডের আরো ভালোভাবে করা উচিত বলে জানান লারা, ‘রান বা সংখ্যাটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। দলের জন্য দীর্ঘদিন নিজের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছে চন্দরপল। তাই চন্দরপলের কাছে ঋণী ডব্লিউআইসিবি ও ক্যারিবীয়রা। এ জন্য বিদায়টা আরও ভালোভাবে করা উচিত। সে সম্মান-মর্যাদা সবই পাওয়ার যোগ্য। তাকে স্মরণীয়ভাবে-জাকজমকভাবে বিদায় দেয়া উচিত।’
চন্দরপলকে ভালোভাবে বিদায় দেয়ার কথা বলে ভারতের শচীন টেন্ডুলকারের বিদায়ের মঞ্চের উদাহরণ টানতেও ভুল করেননি লারা। ২০১৩ সালে জাঁকজমকভাবে বিদায় দিয়েছিলো বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। তাই টেন্ডুলকারের মতোই চন্দরপলকে বিদায় দেয়া উচিত বলে জানান লারা, ‘বিসিসিআই কি করেছিলো? তা সবাই দেখেছিলো। টেন্ডুলকারকে সম্মান জানিয়েই সিরিজটি আয়োজন করেছিলো এবং যথাযথ সম্মানে বিদায় জানিয়েছিলো তাকে। বোর্ড কখনো আশাও করেনি সে খুব ভালো খেলবে অথবা ডাবল-সেঞ্চুরি করবে বা ডাক মারবে। কতটা ভালো খেললো এটা কোন বিষয় নয়। কারণ, সিরিজটিই ছিলো টেন্ডুলকারের বিদায়ী সিরিজ। এমন বিদায় টেন্ডুলকারের প্রাপ্য ছিলো। ঠিক তেমনই করা উচিত চন্দরপলের ব্যাপারেও। সিরিজ আয়োজন করে চন্দরপলকে বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখা উচিত।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১৬৪টি টেস্ট, ২৬৮টি ওয়ানডে ও ২২টি টুয়েন্টি টুয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন চন্দরপল। টেস্টে ৩০টি সেঞ্চুরি ও ৬৬টি হাফ-সেঞ্চুরির সহায়তায় ১১,৮৬৭ রান, ওয়ানডেতে ১১টি সেঞ্চুরি ও ৫৯টি ৮৭৭৮ রান এবং টি২০তে েেসঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি ছাড়া ৩৪৩ রান করেন তিনি। বল হাতে টেস্টে ৯ ও ওয়ানডেতে ১৪ উইকেট শিকার করেছেন ৪০ বছর বয়সী চন্দরপল।
আগামী ৩ জুন ডোমিনিকায় শুরু হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার প্রথম টেস্ট।
দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জ্যামাইকায় শুরু হবে ১১ জুন।
Posted by Ab Emon