রোববার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন জমা দেওয়া হয় জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, “সোমবার চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।”
সুপ্রিম কোর্টের ৯ আইনজীবীর করা একটি রিট আবেদনে দেওয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বিশেষ বেঞ্চ বৃহস্পতিবার সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে।
সংসদের মাধ্যমে বিচারক অপসারণ প্রক্রিয়াকে ‘ইতিহাসের একটি দুর্ঘটনা’ বলা হয় ওই রায়ে।
রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, “আমরা এই রায়ে সংক্ষুব্ধ। আদালত আমাদের আপিল করার জন্য সার্টিফিকেট দিয়েছে। এখন এটি আপিল হিসেবে গণ্য হবে। এই রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে রোববারই আমরা চেম্বার আদালতে যাব।”
অন্যদিকে রিট আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, এই রায়ের ফলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণ পদ্ধতি বহাল হল।
ওই রায়ের পর জাতীয় সংসদেও তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক হাই কোর্টের ওই রায়কেই ‘সংবিধান পরিপন্থি’ বলেন।
রায়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিচারপতিদের বেতন-ভাতার বিল সংসদে উত্থাপনের সময় ওয়াকআউট করেন বিরোধী দলের সদস্যরা।
উচ্চ আদালতের বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
অসদাচরণের জন্য উচ্চ আদালতের কোনো বিচারককে কীভাবে অপসারণ করা যাবে, সে প্রক্রিয়া নির্ধারণে আরেকটি আইনের খসড়ায় সম্প্রতি সম্মতি দেয় মন্ত্রিসভা।
ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৫ নভেম্বর হাই কোর্টে এই রিট আবেদন হয়। প্রাথমিক শুনানির পর হাই কোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভম্বর রুল দেয়। রুলে ওই সংশোধনী কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
ওই রুলের ওপর শুনানি করে আদালত বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করে বলে, “আমাদের বলতে দ্বিধা নেই, ষোড়শ সংশোধনী একটি কালারেবল লেজিসলেশন (কোনো কাজ সংবিধানের মধ্যে থেকে করার সুযোগ না থাকলে আইনসভা যখন ছদ্ম আবরণে ভিন্ন প্রয়োজনের যুক্তি দেখিয়ে একটি আইন তৈরি করে), যা রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ নীতির লঙ্ঘন।