অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন ও জাগো ফাউন্ডেশনকে ই-মেইলের মাধ্যমে হুমকি প্রদানকারী তৌসিফ হোসেন সীমান্তকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগ। গত বৃহস্পতিবার বিকালে রামপুরার বনশ্রী এলাকায় তার বাসায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তৌসিফ হোসেন সীমান্ত পেশায় একজন ফ্রিল্যান্স আলোকচিত্রী। এ সময় তার কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন সেট ও রাউটার উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল তাকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত রিমান্ড শুনানি শেষে তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে সীমান্ত বলেন, জনৈক নুরুল হক মুন্না নামের একজনের কাছ থেকে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা করিয়ে দেয়ার নামে এক লাখ আশি হাজার টাকা নেন। পরে ভিসা করতে না পারলে মুন্না টাকার জন্য তাকে চাপ দিতে থাকেন। টাকা ফেরত দিতে না পেরে মুন্নাকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন সীমান্ত। কৌশলে মুন্নার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংগ্রহ করে বিপদে ফেলার জন্য মোবাইল নম্বর ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন ও জাগো ফাউন্ডেশনের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে হুমকি প্রদান করেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, অভিযুক্ত তৌসিফ হোসেন সীমান্ত পেশায় একজন ফ্রিল্যান্স আলোকচিত্রী। তিনি বেসরকারি ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেছেন। সীমান্ত দুটো ই-কমার্স সাইটে ফ্রিল্যান্স আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের দীঘলিয়ায়। বনশ্রীতে মা-বাবাসহ পরিবারের সঙ্গে তিনি থাকতেন। তার বাবা জনতা ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ছিলেন।
ডিএমপি সূত্র জানায়, গত ২৫শে এপ্রিল সকালে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতের ই-মেইলে বার্তা পাঠিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। অন্যথায় দূতাবাসে বোমা বিস্ফোরণের হুমকি দেয়া হয়। ই-মেইলটি পাওয়ার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তা পুলিশকে জানান অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশনের নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা ডেভিড জোনস। এ বিষয়ে গুলশান থানায় একটি জিডি করা হয়। তাৎক্ষণিক তদন্ত করে পুলিশ নুরুল ইসলাম মুন্না নামে এক ব্যক্তির মেইল থেকে এ হুমকি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে তদন্ত করে দেখা যায় ওই ব্যক্তি এ সংক্রান্তে কিছুই জানেন না। প্রকৃত ক্লু উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পরে বেরিয়ে আসে মূলত তৌসিফই নুরুলের মেইল আইডি ব্যবহার করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। একইভাবে পরদিন ২৬শে এপ্রিল জাগো ফাউন্ডেশনে একটি ই-মেইল প্রেরণ করা হয়।