দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৭৫ রানের। ২০০৩-এ চট্টগ্রাম টেস্টে সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন খেলেন ওই ইনিংস। এবার তা ছাড়িয়ে গেলেন মুমিনুল হক। পচেফস্ট্রমে ৭৭ রানের ইনিংস খেললেন মুমিনুল। ১৫০ বলের ইনিংসে মুমিনুল হাঁকান ১২টি বাউন্ডারি। এতে লাঞ্চের পর বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২২৮/৫-এ। টেস্টে টানা ১১ ম্যাচে ৫০ ঊর্ধ্ব রানের ইনিংসের কৃতিত্ব তার। তবে টেস্টের শেষ ৭ ইনিংসে অর্ধশতকের দেখা পাননি একবারও। আর এবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের আগে দল থেকেই বাদ পড়েছিলেন মুমিনুল হক। অবশ্য শেষ পর্যন্ত দলে ফেরেন তিনি। টেস্টে ৭ ইনিংস পর অর্ধশতক হাঁকালেন মুমিনুল হক। পচেফস্ট্রমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে তৃতীয় দিনের লাঞ্চে মুমিনুল হকের সংগ্রহ ছিল ৭২ রান। ততক্ষণে আল শাহরিয়ার রোকনের এক রেকর্ড ছাড়িয়ে যান তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৭১ রানের ইনিংসটি ছিল রোকনের। ২০০২’র সফরে নিউল্যান্ডস ভেন্যুতে ওই ইনিংস খেলেন বাংলাদেশের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান আল শাহরিয়ার রোকন। পচেফস্ট্রমে চলতি সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে তিন নম্বরে ব্যাট হাতে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন তিনি। অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে ৬৭ ও তামিম ইকবালের সঙ্গে ৫৫ ও মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে তার জুটিতে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে জমা পড়ে ৬৭ রান। এতে লাঞ্চের আগেই বাংলাদেশের সংগ্রহ ২০০ রানের কোঠায় পেঁৗঁছে। ২১৮/৪ সংগ্রহ নিয়ে লাঞ্চে যান মুমিনুল ও মাহমুল্লাহ। এ সময় মুমিনুল ৭২ ও মাহমুদুল্লাহ ২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। মূল লড়াইয়ে নামার আগে বেনোনিতে প্রস্তুতি ম্যাচেও অর্ধশতক হাঁকান মুমিনুল হক।
পচেফস্ট্রমে প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ৪৯৬/৩ সংগ্রহের জবাবে আগের দিন ১২৭/৩ নিয়ে খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। আর গতকাল দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে যোগ হয় ৯১ রান। এ সময় উইকেট দেন কেবল তামিম ইকবাল। এতে ২১৮/৪ সংগ্রহ নিয়ে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ। ফলোঅন এড়াতে বাংলাদেশের তখন প্রয়োজন ছিল ৭৯ রান।
২০১৩’র মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক মুমিনুল হকের। ক্যারিয়ারের শুরুর এক বছরে টেস্টে চারটি সেঞ্চুরি কুড়ান তিনি। তবে গত তিন বছরে ব্যাট হাতে টেস্টে তিন অঙ্কের রানের দেখা পাননি মুমিনুল। বাঁ-হাতি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান মুমিনুল সর্বশেষ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ২০১৪ সালের নভেম্বরে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে। কিন্তু পরের ১২ টেস্টের ২০ ইনিংসে তিন অঙ্কের রানের দেখা পাননি তিনি। পচেফস্ট্রুমে পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরির মুমিনুলের হাতছানি সামনে। গতকাল ব্যক্তিগত ৭২ রানে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান মুমিনুল হক।
আর বিরতি থেকে ফিরে নিজের সংগ্রহে ৫ রান যোগ করে উইকেট দেন তিনি। এতে দেশের বাইরে মুুমিনুলের সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা বাড়ে ভক্তদের। ক্যারিয়ারে চার সেঞ্চুরির তিনটি এসেছে তার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী ভেন্যুতে। অপর সেঞ্চুরিটি পেয়েছেন তিনি মিরপুর শেরে বাংলা মাঠে। ক্যারিয়ারের শুরুর ১১ টেস্টে ব্যাট হাতে ৫০ ঊর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেন মুমিনুল হক। এমন রেকর্ড রয়েছে কেবল ভিভ রিচার্ডস, গৌতম গম্ভীর ও জো রুটের। সর্বাধিক টানা ১২ টেস্টে ৫০ ঊর্ধ্ব রানের রেকর্ড প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্সের।