ত্রিদেশীয় সিরিজে ফাইনালে বাংলাদেশ আজ ফের শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি। এ টুর্নামেন্টে দুই দলের লড়াইয়ের ফলাফল সমানে সমান। প্রথম ম্যাচে লঙ্কানদের ১৬৩ রানে বড় ব্যাবধানে হারিয়ে রেকর্ড জয় তুলে নিয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু পরের ম্যাচে ঠিক বিপরীত চিত্র। এবার বাংলাদেশকে হজম করতে হয়েছে ১০ উইকেটে হারের লজ্জা। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে লজ্জার ব্যাটিংও। লঙ্কার বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে গুটিয়ে গেছে মাত্র ৮২ রানে। তাই ফাইনালের আগে দলের দুশ্চিন্তার নাম ব্যাটিং। অথচ এ আসরেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ উইকেটে ৩২০ রান করেছিল। টপ অর্ডারে ওপেনার তামিম হাঁকিছেন দু’টি ৮৪ ও একটি ৭৬ রানের ইনিংস। সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে আসে দুইটি ফিফটি। তবে মিডল অর্ডারে এক মাত্র সফল ব্যাটসম্যান বলতে মুশফিকুর রহীম। তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১টি মাত্র ফিফটি রানের ইনিংস। তারপরে ব্যাট হাতে আসা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেনরা দলের হাল ধরতে হয়েছেন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এছাড়া ওপেনিংয়ের চিন্তাও কম নয়। যে কারণে ফাইনাল ম্যাচে দলে থাকবেন কে কে আর উইকেট কেমন হবে হবে তা ছিল অন্যতম আলোচনার বিষয়। তাই অধিনায়ক মাশরাফির কাছেও ছুটে গেছে সেই প্রশ্ন। এ নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘একটা ম্যাচ হারার পর পুরো ব্যাপারটা এলোমেলো করার ইচ্ছা নাই। চার পেসারের জায়গায় এমন না যে একজন ব্যাটসম্যান বাড়িয়ে দেব। হয়তো মানুষ চেঞ্জ হতে পারে কিন্তু পেসারের জায়গায় পেসারই খেলাবো।’
অধিনায়ক মাশরাফির স্পষ্ট ইঙ্গিত ক্রিকেটার পরিবর্তন হলেও দলের কম্বিনেশনে খুব একটা পরিবর্তনের ইচ্ছে নেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে পারে এক স্পিনার ও চার পেসারই। তবে আবুল হাসান রাজুর পরিবর্তে দলে আসতে পারেন সাইফুদ্দিন। আবার আবুলকে ফাইনালে আরো একটি সুযোগ দেয়াও হতে পারে। শোনা গেছে নাসির হোসেনের পরিবর্তে দলে জায়গা নিতে পারে একজন বাড়তি স্পিনার। তবে নাসির যেহেতু অলরাউন্ডার সেই ক্ষেত্রে সুযোগ আসতে পারে মেহেদী হাসান মিরাজেরও।
দলের বোলিং শক্তি নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘স্পিনার তো সাকিব আছেই। সাথে একজন সবসময়ই খেলে আসছিল। ওখান থেকে বের হয়ে আসার সুযোগ নেই। স্পিনার (সাকিব ছাড়াও) একজন থাকবেই। বাড়তি স্পিনার কাম ব্যাটসম্যান নাসির ছিল। এখন কে আসবে নিশ্চিত নই। তিন পেসার না চার পেসার এটা নিয়ে আলোচনার ব্যাপার আছে। তবে আমরা এমন না যে একটা ম্যাচ হারার কারণে কম্বিনেশনের পুরো ব্যাপারটা এলোমেলো করতে হবে। তিনটা পেসার নিয়ে একটা ব্যাটসম্যান ঢুকবে কিনা সেটা আলোচনার সাপেক্ষে।’ গতকাল সকালে মেহেদী হাসান মিরাজ ইনডোরের নেটে লম্বা সময় ধরে ব্যাটিং অনুশীলন করে করেছেন। স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে নাসিরের জায়গায় মিরাজ চলে এলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
বলার অপেক্ষা রাখে না ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা থাকলেও মিডল অর্ডারে মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক ও সাব্বিরের উপরই ভরসা রাখতে হবে। তবে ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের নতুন সঙ্গী হতে পারেন ইমরুল কায়েস কিংবা মোহাম্মদ মিঠুন। এক্ষেত্রে ইমরুলের সম্ভাবনা বেশিই শোনা যাচ্ছে। চার ম্যাচে এনামুল হক বিজয়ের ব্যর্থতার কারণেই এ চিন্তা। তবে মাশরাফি বলেন, ‘বিজয় চারটা ম্যাচ খেলেছে। তবে এটা ঠিক, ও নিজের জন্য যে প্রত্যাশা নিয়ে খেলতে চেয়েছিল পারেনি। সে নিজেও অখুশি। বিজয় আরও বেশি অবদান রাখতে চেয়েছিল। তবে এর মানে ওকে বাদ দিয়ে আমরা চিন্তা করছি ব্যাপারটা তা না। ইমরুল এসেছে, মিঠুন আছে। দেখা যাক, এখনো আলোচনা হয়নি। তবে বার্তাটা এরকম না, ইমরুল আসা মানে ইমরুলই খেলবে।’
ফাইনালে উইকেট কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। আজ ম্যাচ হতে পারে মিরপুর শেরে বাংলার পাঁচ নম্বর উইকেটে। তবে যতটা জানা গেছে উইকেট হবে ব্যাটসম্যানদের সহায়ক এবং সুবিধা পাবে স্পিনারাও। এ ম্যাচে টস ভাগ্যের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তবে উইকেট যেমনই হোক নিজেদের সেরা ব্যাটিং ও বোলিং ছাড়া জয় সম্ভব নয় বলেই মনে করেন মাশরাফি।