প্রতি বছর লাখো মুসল্লি মহান আল্লাহর প্রতি তাদের আত্মসমর্পণের উদ্দেশ্যে মক্কায় হজ করতে যান। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজিরা সাধারণত বিমানযোগেই মক্কা আসেন। কেউ কেউ আসেন সমুদ্রপথে। আর প্রতিবেশী দেশের মানুষ আসেন গাড়ি বা বাসে করে।
কিন্তু ইন্দোনেশিয়া হাকাম মাবরুপি (৩৫) ও তার স্ত্রী রফিনগাতুল ইসলামিয়াহর (৩৫) গল্প একটু ব্যতিক্রম। এই দম্পতি তাদের হাতে তৈরি বাইসাইকেলে চালিয়ে ১২ হাজার পথ পাড়ি দিয়ে সাত দেশ অতিক্রম করে মক্কায় ওমরা করতে এসেছেন। এজন্য এই দম্পতির সময় লেগেছে এক বছর
হাকাম-রফিনগাতুল দম্পতি ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ সালে তাদের যাত্রা শুরু করেন। পূর্ব জাভায়মালাংয়ে প্রস্তুতি নিতে দেড় মাস কাটান তারা। এই দম্পতিই তাদের স্বপ্নের বাইসাইকেলের নকশা করেন। পরে সেটি একটি বাইসাইকেল নির্মাতা কোম্পানির কাছে পাঠান তারা। ওই বাইসাইকেলে দুটি সিট রয়েছে। একটি লাগেজ রাখার জায়গা। আর রয়েছে দুই জোড়া প্যাডেল।
এদিকে তাদের এই উত্তেজনাকর সফরের জন্য বিভিন্ন এনজিও তাদের সহায়তা করেছে। হাকাম-রফিনগাতুল দম্পতি বলছেন, এই সফরের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ ও মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ হয়েছে তাদের। এরমধ্য দিয়ে তারা ইসলামের শান্তিপূর্ণ বার্তা সবার মাঝে পৌঁছে দিতে চেয়েছেন।
হাকাম বলেছেন, তারা এই সফরের জন্য বাইসাইকেল বেছে নিয়েছেন কারণ এটি বিবাহিত জীবনের ভারসাম্যের প্রতীক। জীবনের চাকা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে স্বামী-স্ত্রীর অনেক আপোষ ও বোঝাপড়া করতে হয়।
তিনি বলেন, ভালো ও মন্দ সময়ে কীভাবে পথ চলতে হয় বাইসাইকেল আমাদের সেটাই শেখায়। কখনো পরিশ্রম করতে হবে আবার কখনো জীবনের লাগাম টেনে ধরতে হবে। আর এই দর্শন জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োগ করা যেতে পারে।
এই দম্পতি ইন্দোনেশিয়া থেকে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার হয়ে ভারত আসেন। পরে তারা ভারত থেকে জর্ডান যান। সেখান থেকে মিশর। এরপরই অভীষ্ট লক্ষ্য সৌদি আরবে পৌঁছান এই দম্পতি।
কৃষি বিজ্ঞান থেকে পাস করা হাকামের স্ত্রী কিন্তু মনোবিজ্ঞানী। ওমরা তো হলো। এই দম্পতির পরবর্তী টার্গেট নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।
তবে এর আগে সেরে ফেলতে চান হজটাও। সেটিও আবার সাইকেল যোগে।