প্রিন্স,স্বদেশ নিউজ২৪ ডটকমঃ আগামি ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আবারও শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনে পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে সাড়া জাগানো আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গীতবিষয়ক অনুষ্ঠান ‘উই- অব চেইঞ্জ- সিজন ৩’। ব্যাপকভাবে সাড়াজাগানো এই অনুষ্ঠানটির দু’টি প্রি-সিজনসহ সিজন-১ এবং সিজন-২ ইতোপূর্বে প্রচারিত হয়ে দেশের সঙ্গীতাঙ্গনসহ আন্তর্জাতিক সঙ্গীত অঙ্গনে ব্যাপক সমাদৃত, আলোচিত ও দর্শক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে।
ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় ওঠে। ইতোমধ্যে অনলাইনে ‘উই- অব চেঞ্জ’-এ সারা বিশ্বের কোটি কোটি ভিউয়ার যুক্ত হয়ে এই অনুষ্ঠানটিকে নিয়ে গেছে বিশ্বের বিভিন্ন জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের মতোই ঈর্ষনীয় উচ্চতায়। দেশ-বিদেশের অগণিত দর্শক কমেন্টের মাধ্যমে ‘উই- অব চেঞ্জ’-এর ব্যাপারে তাদের ভাললাগা এবং নানা প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।
অগণিত দর্শক-শুভাকাক্সক্ষীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা যন্ত্রশিল্পীদের সঙ্গে দেশের স্বনামধন্য, জনপ্রিয়ও প্রতিশ্রুতিশীল কণ্ঠশিল্পীদের নির্বাচনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। দেশের সঙ্গীত বিষয়ক সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম ‘উই- অব চেঞ্জ’-এর এবারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- খ্যাতনামা প্রবীণ শিল্পীদের পাশাপাশিবর্তমান প্রজন্মের জনপ্রিয় শিল্পীদের অংশগ্রহণ। বর্তমানে এই অনুষ্ঠানের জন্য শিল্পী নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। তবে আয়োজক কর্তৃপক্ষসূত্রে জানা গেছে, এবারের সিজনটিতে পূর্বের সিজনগুলো থেকে ভিন্ন কিছু মাত্রা যুক্ত হবে। তবে সেটি কী- তা খুলে না বললেও আয়োজকরা জানিয়েছেন, ‘এবারের আয়োজনে বাড়তি সংযোজন হিসেবে বড় ধরণের কিছু চমক রয়েছে। এগুলো দর্শকদের সত্যিকার অর্থেই যেমন অবাক করবে, তেমনি বাংলা সঙ্গীতের জগতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে।’
ইতোপূর্বে ‘উই- অব চেইঞ্জ’-এর বিভিন্ন সিজনে নমস্য সঙ্গীতশিল্পী ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী, বারী সিদ্দিকী, জানে আলম, অদিতি মহসিন, সুবীর নন্দী, কৌশিক হোসেন তাপস, জেমস, আইয়ুব বাচ্চু, হাবিব, বালাম, চিরকুটহৃদয় খান,চিশতী বাউল, তপু, এলিটা, পথিক নবীসহ এই প্রজন্মের অনেক জনপ্রিয় শিল্পী অংশগ্রহণ করেছেন। যন্ত্রসঙ্গীতে অংশ নিয়েছেনবিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা যন্ত্রশিল্পীরা। এ তালিকায় ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের চেলো বাদক আট ইউম মেনিকিয়ান, লাটভিয়ার পিয়ানোশিল্পী এনা ভাইভ, যুক্তরাষ্ট্রের ড্রামার টনি পার্কার, রাশিয়ার অপেরাশিল্পী এনা এমিলিয়া নোভা, একই দেশের ভায়োলিন বাদক এনা রাকিতা, ড্রামার নেলিবুভুজাংকা ও বেজ গিটারিস্ট আন্তন ডেভিডিয়ান্স, অপেরা শিল্পী এনা এমিলিয়া নোভা,এডেলিনা, ভারতের খ্যাতিমান একুইস্টিক গীটারিস্ট সঞ্জয় দাস, বেইজ গীটারিস্ট মোহিনী দে, ইলেকট্রিক গীটারে রিদম শ’, সেতারে পূর্বায়ন ট্যাটার্জি, সন্তুরে সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়, এ¯্রাজে আরশেদ খান এবং ম্যা-োলিনে রাজেস উপ্পালাপু।
‘উই- অব চেইঞ্জ’-এরসঙ্গীত পরিচালক ও অনুষ্ঠান পরিচালক হিসেবে যথারীতি নেতৃত্ব দেবেন গান বাংলা টেলিভিশন-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপস। এবারের আয়োজন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উইন্ড অব চেঞ্জ’-এর আগের দুটি প্রি-সিজনসহ সিজন-১ ও সিজন-২ ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেছে। দেশ-বিদেশের নানা সঙ্গীতজনের কাছ থেকে আমি প্রচুর প্রশংসা ও প্রেরণা পেয়েছি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় যন্ত্রশিল্পীরা এই অনুষ্ঠানে বাজানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন দেশ থেকে ‘উই- অব চেইঞ্জ-এর পুরো দল নিয়ে বড় বড় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পেয়েছি। এতে আমি দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি এবং আরও বর্ণাঢ্য আয়োজনে সিজন-৩ আয়োজনে প্রয়াসী হয়েছি।এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেবাংলাদেশের গানগুলোকে শ্রোতাদের সামনে নতুন করে, নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরাই আমাদের উদ্দেশ্য। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে বাংলা গানকে সম্মানজনক উচ্চতায় তুলে ধরাও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। আমার বিশ্বাস, আমরা আমাদের লক্ষ্য পুরণে অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছি।’
পরিবর্তনের ধারায় বাংলা গানকে নতুনরূপে উপস্থাপনের এই বৃহত্তর আয়োজনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন গান বাংলা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন ও উইন্ড অব চেইঞ্জের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ফারজানা মুন্নী। মূলত তাঁর ক্রিয়েটিভ ডিজাইন ও পরিকল্পনাতেই দৃষ্টিনন্দন ও হৃদয়গ্রাহী হয়ে ওঠে এই আয়োজন। শিল্পী ও কলাকুশলীদের মেকওভার, ড্রেস ডিজাইন থেকে শুরু করে সেট ডিজাইন, আলোক-প্রক্ষেপণ পরিকল্পনা তথা ক্রিয়েটিভ সকল আয়োজন শিল্পীত হয়ে ওঠে তাঁরই তত্ত্বাবধানে। শিল্প নির্দেশনা সম্পর্কে ফারজানা মুন্নী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে এতোদিন বাংলা গান নিয়ে এত বড় আয়োজন ছিল না বললেই চলে, কিন্তু এখন ‘উই- অব চেইঞ্জ’ নিয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। কোটি কোটি দর্শক উই- অব চেইঞ্জ দেখছেন, তাদের ভাললাগার অনুভূতি জানাচ্ছেন। বিশ্বের সেরা যন্ত্রশিল্পীরা এসে এখানে বাজাচ্ছেন। আমরা এটাই চেয়েছিলাম। আর এ জন্য অনুষ্ঠানটি হৃদয়গ্রাহী করে তুলতে আমি আমার সর্বোচ্চ শিল্পভাবনা এখানে প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছি।’