সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে।
৯ এপ্রিল, সোমবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে (ডেইরি গেট) এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ জলকামান, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে।
পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট ও টিয়ারশেলের আঘাতে আহত হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার ও সাভারে অবস্থিত এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে টিয়ারশেলের আঘাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইন আহত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ব্যানারে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেট দিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রবেশ করেন। এ সময় রাস্তার দু’পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনকারীরা পরে মহাসড়ক দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন। আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
মহাসড়ক অবরোধের কারণে দু’পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের অবরোধ তুলে নিতে বলেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে যাবেন না বলে জানান। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ আন্দোলনকারীদের জলকামান, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এদিকে শিক্ষার্থীরা পুলিশের দিকে পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হতে থাকে। পুলিশ ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর শতাধিক টিয়ারশেল এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এরপর আন্দোলনকারীরা মহাসড়ক ছেড়ে দিলে বেলা ২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখন পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং চল্লিশের অধিক শিক্ষার্থীকে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর।