ভারত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবে কি আনবে না, সেটা জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৩০ মে, বুধবার বিকেলে গণভবনে ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।
তিস্তার পানি চুক্তি, একাদশ সংসদ নির্বাচন, কথিত বন্দুকযুদ্ধসহ নানা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়।
সংবাদ সম্মেললে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারত আমাকে ক্ষমতায় আনবে কি আনবে না, সেটা জানি না। ২০০১ সালে আমেরিকান কোম্পানি এখানে গ্যাস উত্তোলন করেছিল এখানে, সেই গ্যাস বিক্রি করবে ভারতের কাছে। আমি কিন্তু রাজি হইনি, খালেদা জিয়া লিখে দিয়ে এসেছিল। আমি বলেছিলাম গ্যাসের মালিক এ দেশের জনগণ।’
সংবাদ সম্মেলনে ভারতের একটি দৈনিকের বরাত দিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, ‘ক্ষমতায় আসতে নরেন্দ্র মোদির কাছে প্রতিদান চান শেখ হাসিনা’। বিষয়টি সত্যি কি না।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিান বলেন, ‘আমি কোনো প্রতিদান চাই না। তাদের (ভারত) অনেক দিয়েছি। আমার দেওয়ার পরিমাণ বেশি, নেওয়ার পরিমাণ কম। ভারতের উত্তরপূর্বে সন্ত্রাস বন্ধ হয়েছে। ভারত এটি বুঝতে পারে এখন। কিন্তু তার বিনিময়ে কোনো প্রতিদান চাই না।’
তিস্তার পানি প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিস্তা ব্যারেজ কেন নির্মাণ করা হলো? ব্যারেজ করে কেন এখন পানি ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে? আগের সরকারগুলোর কাছে এর জবাব কী?
তিস্তার পানি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যৌথ নদী কমিশন গঠন করা হয়েছে। তারা এ নিয়ে আলোচনা করছে।’
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপির করা নানা অভিযোগের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি তো অনেক বুঝে তাহলে আর বলার দরকার নাই। তারাও তো কম যায় নাই। খালেদা জিয়া কি ভারতে যায় নাই?
জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করার ২ বছরের মধ্যেই ভারতে গিয়েছিল। কেন গিয়েছিল? সেটা বিএনপিকে জিজ্ঞেস করেন, ক্ষমতা দখল করেই ভারত গিয়েছিল।
বিএনপি এখন তিস্তার পানি কথা বলে, বিএনপি নেতাদের কি মনে নাই উনাদের নেত্রী ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গার পানির কথা ভুলে গিয়েছিলেন?’
কথিত বন্দুকযুদ্ধ নিয়ে সাংবাদিকের করা এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাদকের কারণে সমাজে আজ হাহাকার বইছে। মাদকের কারণে ছেলের হাতে বাবা, মেয়ের হাতে মা খুন হচ্ছেন। মাদক নিয়ে মিডিয়ায়ও তো তোলপাড়। তাহলে আজ অভিযান নিয়ে কেন এমন বিরোধিতা হচ্ছে।’
অভিযানে কোনো নিরীহ মানুষ মরছে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। আত্মরক্ষার অধিকার সবারই আছে।
আপনারাই পত্র-পত্রিকায় লিখেছেন এই মাদকের বিরুদ্ধে। কোনটা চান? অভিযানটা চলুক না বন্ধ হয়ে যাক? ১০ হাজারের ওপর এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে।
মাদক যারা পাচার করে তাদের ধরতে গিয়ে অনেক সময় অনেক কিছু ঘটতে পারে। আইনগত দিক থেকে এটা ঠিক না কিন্তু একটা অপারেশনে গেলে তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।’
২৫ মে, শুক্রবার দুই দিনের সফরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধন করেন।
পরে ২৬ মে, শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি গ্রহণ করেন।