তিনি মেয়েদের সঙ্গে কথা কম বলতেন। কাজের বিষয়ের বাইরে ইউনিটে আমার সঙ্গে অন্য কোনো বিষয়ে কথা হতো না। সেই সময়ে তিনি শুধু কাজের মধ্যে মনোযোগী থাকতেন। কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ প্রসঙ্গে এভাবে বললেন মঞ্চ-টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ডলি জহুর। ১৩ই নভেম্বর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। এই কথা সাহিত্যিকের বেশ কিছু গল্প ও তার নির্মাণে অভিনয় করেছেন ডলি জহুর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকের মাধ্যমে আমি হুমায়ূন আহমেদের কাজের সঙ্গে যুক্ত হই। এর আগে আমি তাকে সেভাবে চিনতাম না।বিটিভির প্রডিউসার মোস্তাফিজুর রহমান আমার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সেই ধারাবাহিকের নিলু চরিত্রটির জন্য। পরবর্তিতে তার পরিচালনায় ‘অগুনের পরশমনি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি। সব কিছুতে তিনি ছিলেন দারুণ অভিজ্ঞ এবং অসম্ভব মেধাসম্পন্ন একজন মানুষ। খুব কাছ থেকেই তাকে দেখেছি। নাটক লেখা ও পরিচালনার প্রতি তার অদ্ভুত এক নেশা ছিল। এদিকে এটিএন বাংলায় ডলি জহুরের ‘মেঘে ঢাকা শহর’ ও আরটিভিতে ‘নোয়াশাল’ শিরোনামের দুটি ধারাবাহিক নাটক প্রচার হচ্ছে। চলতি মাসে নতুন আটটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করার প্রস্তাব পেয়েছেন বলে জানান তিনি। কিন্তু কোনোটিতে অভিনয় করছেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আগামী ১৯ই নভেম্বর আমি অষ্ট্রেলিয়ায় চলে যাচ্ছি। সেখানে আমার ছেলে ও তার স্ত্রী থাকে। সেখানে আমাকে বেশ কিছু দিন থাকতে হবে। তাই নতুন কোনো ধারাবাহিকের কাজ হাতে নিইনি। একটি কাজ শুরু করার পর ভালোভাবে শেষ করতে না পারলে নির্মাতাকে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। আমার জন্য কেউ ক্ষতির মুখে পড়–ক আমি চাই না। এই সময়ে চলচ্চিত্র এবং টিভি মিডিয়া কোনোটিতেই ভালো পরিবেশে নেই বলে অনেকে মন্তব্য করেন। টিভি নাটকগুলো বেশি নির্মাণ হচ্ছে নায়ক-নায়িকা কেন্দ্রিক। এই প্রসঙ্গে ডলি জহুরের অভিমত চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে অনেক বলেছি। এগুলো নিয়ে কথা বলে এখন আর কোনো লাভ নেই। কে কাকে পরিবর্তন করবে! যখন একজন মানুষ আমাকে মান্য করবে তখন আমি তাকে যে কোনো বিষয়ের ভালো মন্দ বোঝাতে পারি। যদি সে না শোনে তাহলে এটি নিয়ে বলার কোনো মানে হয় না। যে নিয়মের মধ্য দিয়ে আমরা হাঁটছি এভাবে চলা যায় না। এমন চলতে থাকলে এক সময় আমাদের অস্তিত্বের সংকটে পড়তে হবে। পরিবর্তন অনেক বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে। পরিবর্তন না এলে নিজেদের ক্ষতি নিজেরাই করছি বলে মনে করবো। চলচ্চিত্রে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করলেও ডলি জহুর বেশ কয়েক বছর এ মাধ্যমটিতে নেই। শেষ কবে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন সেটিও তিনি মনে করতে পারছেন বলে জানান। তবে তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র হলো ‘দুই পৃথিবী’। এটি নির্মাণ করেছেন এফ আই মানিক। চলচ্চিত্রে অভিনয় না করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১২ সালে হজে যাওয়ার আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম দেশে ফিরে আর চলচ্চিত্রে অভিনয় করব না। তারপর থেকে আমি আর বড় পর্দায় অভিনয় করিনি। আর করবও না। যে ক’দিন বাঁচি চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকব। আলাপানে এই অভিনেত্রী তার শারীরিক অবস্থা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, কখনো ভালো থাকি, কখনো আবার অসুস্থ হয়ে পড়ি। সত্যি বলতে দেশে আমি একা থাকি। এই সমেয় একা থাকলে যা হয় আমারো সেটি হচ্ছে।