বিমান ছিনতাই করতে গিয়ে কমান্ডো অভিযানে নিহত ছিনতাইকারীর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। মৃতদেহটি এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারি কমিশনার (কর্ণফুলী জোন) জাহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কমান্ডো অভিযানে নিহত ছিনতাইকারী কথিত মাহাদীর মরদেহ রবিবার রাতে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা প্রথমে সুরতহাল সম্পন্ন করি। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ চমেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে প্রেরণ করি। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ মর্গের হিমঘরে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পর্কে তিনি বলেন, লাশের নাভির উপরে ডানপাশে গুলিবিদ্ধ হওয়ার চিহ্ন আছে। এছাড়া শরীরে আর কোথাও আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই।তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে না আসায় এ ব্যাপারে আর কিছুই বলতে পারেননি জাহিদুল ইসলাম।
এদিকে ২৪ ঘণ্টা পার হলেও বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় এখনও কোন মামলা দায়ের হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার কথা রয়েছে। তারা এজাহার দাখিল না করায় মামলা হয়নি। অভিভাবক বা স্বজনদের কেউ মরদেহ শনাক্ত বা নিতে আসেনি।
নগরীর পতেঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উৎপল বড়ুয়া বলেন, আমরা লাশের সুরতহাল করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছিলাম। ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। যেহেতু লাশের কোনো মালিক পাওয়া যায়নি বা দাবিদার কেউ আসেনি, সেজন্য এটা হিমঘরে রেখেছি। যদি লাশের দাবিদার আসে, যাচাই বাছাই সাপেক্ষে লাশটা তাদের কাছে হস্তান্তর করব।
ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, অভিভাবক কিংবা আত্মীয়স্বজন কেউ চট্টগ্রামে এসে তার লাশ শনাক্ত করবেন। তবে নিহত ব্যক্তির নাম-ঠিকানা পাওয়ার পর পতেঙ্গা থানা পুলিশের একটি টিম নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে সোমবার দুপুরে রওনা দিয়েছে। নিহত পলাশের অভিভাক কিংবা স্বজনদের নিয়ে তাদের চট্টগ্রামে ফেরার কথা রয়েছে।
মামলা না হওয়া প্রসঙ্গে ওসি বলেন, সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন দুপুরে তারা মামলার এজাহার নিয়ে আসবেন। কিন্তু দুপুরে আবারও জানানো হয়েছে, তারা রাতে আসবেন। মামলা দায়ের হওয়ার পর আমরা তদন্তসহ আইনগত পদক্ষেপ নেব।
এদিকে অভিযানের পর জানানো হয়েছিল বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ব্যক্তির নাম মাহাদি। বয়স ২৬-২৭ বছর। তবে সোমবার র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম মো. পলাশ আহমেদ। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের দুধঘাটা এলাকার পিয়ার জাহান সরদারের ছেলে পলাশ।
রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ (বোয়িং-৭৩৭) ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাবার কথা ছিল। বিকেলে ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। এসময় দুজন কেবিন ক্রুকে জিম্মি করে রাখার কথাও বলা হয়।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিমানটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তখন পাইলটসহ যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়। শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনার মধ্যে সন্ধ্যার দিকে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে ছিনতাইকারী নিহত হয়। নিহত ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র বা জব্দ করা অন্য কোনো আলামত পুলিশের কাছে এখনও হস্তান্তর করা হয়নি বলে জানান ওসি।