নারীপ্রধান ছবির কথা বলতে গেলে অনেক অভিনেত্রীর মধ্যে একজনের নাম অবশ্যই বলতে হবে। তিনি হচ্ছেন প্রিয়দর্শিনীখ্যাত নায়িকা মৌসুমী। নারীকেন্দ্রিক গল্পের বেশকিছু ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। এই ধরনের গল্পে সাধারণত মুখ্য অংশজুড়ে থাকেন একজন নারী। নারীপ্রধান ছবি ‘গরিবের রানী’, ‘লাট সাহেবের মেয়ে’, ‘বিদ্রোহী বধু’, ‘মোল্লাবাড়ির বউ’, ‘বউয়ের সম্মান’, ‘গোলাপী এখন বিলেতে’, ‘মেহের নিগার’, ‘খায়রুন সুন্দরী’, ‘লিডার’ এবং সবশেষ ‘রাত্রীর যাত্রী’ ছবিতে তাকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতে দেখেছেন দর্শকরা। এসব ছবিতে অভিনয় করে তিনি বেশ প্রশংসাও পেয়েছেন। আগামীকাল আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
এ উপলক্ষে তার কাছে প্রথমেই জানতে চাওয়া হয়, এ ধরনের ছবি করতে গিয়ে অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? জবাবে তিনি বলেন, অভিজ্ঞতা বেশ ভালো।কারণ একটা সময় দর্শকরা এ ধরনের ছবি খুব পছন্দ করেছেন। প্রতিটি ছবি মুক্তির পর হিট ও সুপারহিট হয়েছে। দর্শকরা পছন্দ করেছেন বলেই নির্মাতারা এ জাতীয় ছবি নির্মাণও করেছেন। আর নারীকেন্দ্রিক ছবি সবসময়ই বেশ চ্যালেঞ্জিং। সবশেষ ‘রাত্রীর যাত্রী’ ছবির গল্পটিও এ ধরনের। হাবিবুল ইসলাম হাবিব পরিচালিত এই ছবির পটভূমি ঢাকা। এই শহরে একজন নারীর অবাক রাতের গল্প নিয়ে তিনি এটা নির্মাণ করেছেন। আমি নারীকেন্দ্রিক যেসব ছবিতে অভিনয় করেছি সেসবের প্রতিটিতেই একজন নারীর সংগ্রাম, শ্রম, কষ্টের কথা তুলে ধরেছেন চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক। আর তা সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলার দায়িত্ব ছিল আমার।
আমি সেই চেষ্টাই করেছি। মৌসুমী আরো বলেন, এখন তো নারীরা অনেক এগিয়ে যাচ্ছে এবং সফলতাও পাচ্ছে। বর্তমানে সংসদে নারী সংরক্ষিত আসন রয়েছে। নারীরা পাইলট, বৈজ্ঞানিক, প্রশাসন, সাংবাদিকতা সব জায়গাতেই মেধার স্বাক্ষর রাখছেন। অবলা নারীর ওপর অত্যাচার এখন অনেক কমেছে, নারীদের জন্য আইনও এখন বেশ শক্ত। আর চলচ্চিত্রে তো নারীপ্রধান গল্পের সায়েন্স ফিকশন ছবিও তৈরি হয়েছে। নারীপ্রধান ছবিতে অভিনয় করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি এ ধরনের ছবিতে আরো কাজ করতে চাই। ঢাকাই চলচ্চিত্রের নন্দিত এই নায়িকা সম্প্রতি একটি ভিডিওচিত্রে কাজ করেছেন। এ প্রসঙ্গে বলেন, এটিও বলতে গেলে একজন নারী ও তার সন্তানের গল্প। এর নাম ‘লাইজু’। এটি পরিচালনা করেছেন ফাহমিদা প্রেমা।
আরএফএল স্টোভ এটি প্রযোজনা করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার জন্য এটি তৈরি হয়েছে। আর সামনে সাকিব সনেটের ‘নোলক’ নামে একটি ছবি মুক্তি পাবে আমার। এর শুটিং শেষ করেছি। সামনে ডাবিং শুরু হবে। এ ছবিতে আমার বিপরীতে ওমর সানি অভিনয় করেছেন। শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনে আপনি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হবেন? মৌসুমী বলেন, আমি এখনো এই নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুত নই। এ ব্যাপারে আমি এখনো কাউকে কিছু বলিনি। আমি এবার নির্বাচন করব কি না, তা এখনো ঠিক হয়নি। এখনো সময় আছে, করতেও পারি। দেখা যাক। এদিকে চলচ্চিত্রের চলমান সংকট থেকে মুক্তির উপায় কি জানতে চাইলে মৌসুমী বলেন, আমি বিশ্বাস করি চলচ্চিত্রের সংকট কেটে যাবে। হয়তো সময় লাগবে। কৌশল করে সংকট থেকে তো অবশ্যই আমাদের বের হতে হবে। ইন্টারনেটের সুবাদে বিনোদন এখন কম টাকায় হাতের মুঠোতে পাচ্ছেন অনেকে।
তারপরও হলে গিয়ে নতুন সিনেমা দেখার আনন্দই আলাদা। আর আমি একজন শিল্পী হিসেবে বলতে চাই, ভালো কাজের বিকল্প নেই। কিন্তু ভালো কাজ দেখার মতো দর্শকদের জন্য সর্বত্র উন্নত প্রযুক্তির সিনেমা হল নেই। সুন্দর পরিবেশ সব জেলা বা থানাশহরের অনেক সিনেমা হলেই নেই। তাই দেশের বিভিন্ন জায়গায় সিনেপ্লেক্সের পাশাপাশি ডিজিটাল সিনেমা হল যেখানে কম টাকায় দর্শকরা ছবি দেখতে পাবেন সেসব নির্মাণও বেশ জরুরী। হয়তো অচিরেই না হলেও সামনে এই সংকট কেটে যাবে।