ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া আজ শনিবার বলেছেন, ভারতে প্রায় ৯ হাজার মানুষ মিউকোরমাইকোসিস বা ব্লাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই সংক্রমণ এবার খুব বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে এটা বেশি। এরই মধ্যে এই ফাঙ্গাস সংক্রমণের জন্য বিভিন্ন রাজ্যে কমপক্ষে ২৩ হাজার ৬৮০টি অতিরিক্ত ওষুধ পাঠানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে গুজরাট। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২২৮১। এই রাজ্যে পাঠানো হয়েছে ৫৮০০ ওষুধ। দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে মহারাষ্ট্র।
এরপরে রয়েছে যথাক্রমে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলাঙ্গনা। রাজধানী দিল্লিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯৭ জন। উল্লেখ্য, এই ব্লাক ফাঙ্গাস আক্রান্ত করে চোখ, নাক, চোয়াল এমনকি তা ব্রেনেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ফাঙ্গাস সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য ওষুধ প্রস্তুত করতে কমপক্ষে ১১টি কোম্পানিকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে ভারতে। কিছু চিকিৎসক বলেছেন, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহারের ফলে এই সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে ব্লাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তি হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
মূলত কোভিড আক্রান্তরাই এখন পর্যন্ত বেশি মাত্রায় এই ছত্রাকে সংক্রমিত হয়েছেন। কেন এমন ভয়াবহ হয়ে উঠছে এই সংক্রমণ? এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ভারতের নাক-কান-গলার চিকিৎসক বা ইএনটি চিরজিৎ দত্ত। তিনি বলছেন, আমাদের মুখের মধ্যে প্রায় ২৫০০ জীবাণু সব সময় থাকে। তাদের সঙ্গে আমরা খুব সহজেই মানিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের মতো ছত্রাকের সংক্রমণে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেই সব মানুষ, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কম। তার মতে, যারা নিয়মিত স্টেরয়েড নিতে বাধ্য হন, ক্যান্সারে আক্রান্ত বা ডায়াবেটিস আছে- তাদের জন্য সমস্যা বেশি। ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, তবে এই জাতীয় ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সবারই কিছু সাধারণ নিয়ম মনে চলা উচিত। এমনটাই মনে করছেন চিকিৎসকরা। চিরজিৎ বলেন, একদম সাধারণ কয়েকটি নিয়মই যথেষ্ট। দিনে ২ বার ভাল করে দাঁত মাজা, ২ বার মাউথওয়াশ দিয়ে কুলকুচি করা, আর মুখের ভিতরটি যাতে শুকিয়ে না যায়, সে দিকে খেয়াল রাখা। মুখ শুকিয়ে গেলেই অল্প করে জল খেতে হবে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের অতিরিক্ত সচেতন হতে হবে বলে মত চিরজিতের। তার পরামর্শ, এমন কেউ যদি কোনও সমস্যা লক্ষ্য করেন, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে পারিবারিক চিকিৎসক বা নাক-কান-গলার চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।