ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ব্লাস্ট পোকার আক্রমণে কৃষক দিশেহারা; পর্যাপ্ত পরিমাণ কীটনাশক দিয়েও ফসল রক্ষা করতে পারছেন না। সন্ধ্যায় দেখে যাওয়া কৃষকের ক্ষেতের সোনালি ধানের ফসল সকালে চিটায় পরিণত হচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখে অনেক কৃষক ফসলের জমিতেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
সরেজমিন অচিন্তপুর ইউনিয়নে ও সহনাটী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, যেখানেই ব্রিধান-২৮ রোপণ করা হয়েছে, সেখানেই ব্লাস্ট আক্রমণ করেছে।
এদিকে ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর, গাভীশিমুল, বেকারকান্দা, মইলাকান্দা ইউনিয়নের শৌলগাই, টিকুরী, গোবিন্দপুর, বোকাইনগর ইউনিয়নের তেলিহাটি, ভাদেড়া গ্রামেও একই অবস্থা বিরাজ করছে।
অচিন্তপুর ইউনিয়নের কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান টিটু জানান, তিনি রাতেও দেখে আসছেন। কোনো রোগবালাই নাই। সকালে ঘুম থেকে উঠে গিয়ে দেখেন, ধানের শীষে সব চিটা হয়ে গেছে। শুধু তার নয় আশপাশের সব জমিনেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
লংক্ষাখোলা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের পুত্র কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তার ২ একর ৫০ শতাংশ জমিতে ব্লাস্টে আক্রমণ করেছে। জমিতে কাঁচি নিয়ে যাওয়ার অবস্থা নেই।
তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা না করলে তাদের উপায় থাকবে না।
কৃষক আজিবুর রহমান জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শক্রমে যত কীটনাশক দিচ্ছি, ক্ষেতের অবস্থা আরও খারা হচ্ছে। কীটনাশকও কোনো কাজে আসছে না।
অপরদিকে সহনাটী ইউনিয়নের সোনাকান্দি, ধোপাজাঙ্গালিয়া, বোকাইনগর ইউনিয়নের বাংলাবাজার, নাহড়া, কিসমত বড়ভাগ এলাকায়ও ধানক্ষেতে ব্লাস্টে আক্রমণ করেছে।
ধোপাজাঙ্গালিয়ার মোস্তাফিজুর রহমান বুরহান জানান, তিনি রোববার সকালে গিয়ে দেখেন ৬০ শতাংশ জমির ধান ব্লাস্টের কারণে ছিটা হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার জানান, এ বছর বোরো মৌসুমে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। বোরো আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর। এ পর্যন্ত ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে ১৫ হেক্টর।
তিনি জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ব্লাস্টে আক্রান্ত জমির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
তিনি আরও জানান, ব্রিধান ২৮ জাতে মূলত ব্লাস্ট আক্রান্ত হয়েছে। এ ধান চাষে কৃষকদের নিরুসাহিত করা হচ্ছে। এছাড়াও এ রোগ প্রতিরোধের জন্য কৃষকদের মাঝে লিফলেট ও চিকিৎসাপত্র দেওয়া হচ্ছে।