সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বা কো-অরডিনেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট প্লান (সিবিএমপি) নিয়ে মায়ানমারকে একটি সমঝোতার প্রস্তাব দেবে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি তোলা হবে। মায়ানমার এ বিষয়ে রাজি থাকলে এ বৈঠকেই সিবিএমপি নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাবনা দেবে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
আগামী ১০ জুন থেকে ১৪ই জুন দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৈঠকে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেবেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ। অন্যদিকে মায়ানমারের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন দেশটির সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মহাপরিচালক।
বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বা সিবিএমপি মূলত দুই দেশের সীমান্তে ইস্যুগুলো নিয়ে একটি গাইড লাইন। এর মধ্যে সীমান্ত দিয়ে মাদক, নারী বা অস্ত্র পাচারসহ যাবতীয় অবৈধ কাজ চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধ বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া সীমান্তে শান্তি-শৃংঙ্খলা বজায় রাখা, অরক্ষিত স্থানগুলো চিহ্নিত করা, সমন্বিত পেট্রোলিং এবং গোয়েন্দা তথ্যের আদান-প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হবে। সিবিএমপি নিয়ে মায়ানমার রাজি থাকলেই তাদের একটি খসড়া প্রস্তাব দেওয়া হবে।
এবারের বৈঠকে বিজিপির সঙ্গে বিজিবির সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন বিষয়ক একটি সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হবে। যেমনটি বিজিবির সঙ্গে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিএসএফের আছে। এছাড়া, ভবিষ্যতে সীমান্তে গুলিবর্ষন বন্ধে সাম্প্রতিক ঘটনাটিও তুলে ধরা হবে। বৈঠকে বিজিপির কাছে সীমান্তে এলাকায় ইয়াবা তৈরির কারখানাগুলোর তালিকা হস্তান্তর করা হবে। এগুলো বন্ধের বিষয়েও আলোচনা হবে।
এছাড়া, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এমআরও ন্যাশনাল পার্টির প্রশিক্ষণ বন্ধ, সীমান্ত দিয়ে মাদক ও মাদকদ্রব্য এবং অবৈধ অস্ত্রের চোরাচালান বন্ধ নিয়েও আলোচনা হবে। সর্বশেষ হয়ে যাওয়া পতাকা বৈঠকের বাস্তবায়ন নিয়েও আলোচনা হবে। পুরো বৈঠক জুড়ে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে আস্থা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। তবে সীমানা চিহ্নিতকরণ নিয়ে ১৯৬৬ সালে সীমানা প্রটোকল চুক্তি স্বাক্ষর হলেও এর অনুসমর্থন এখনও বাকি রয়েছে। দ্রুত এর অনুসমর্থনের বিষয়ে দুই দেশই একমত বলে জানা গেছে।