শনিবার দলের এক অনুষ্ঠানে দলে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “রাষ্ট্রপতি জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে বলেছেন, ‘মেয়াদ শেষে নির্বাচন নিয়ে সংলাপ হবে। রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য জনগণের কথা নয়। জনগণের কথা হচ্ছে দেশে একটি দ্রুত নির্বাচন।’
“রাষ্ট্রপতি এ ধরণের কথা বলে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তার (রাষ্ট্রপতি) এহেন বক্তব্যের আমরা নিন্দা জানাচ্ছি।’’
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের মহাসচিব বান কি-মুনের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, সংলাপের ব্যাপারে সরকারের কোন কার্পণ্য নেই; তবে তা হবে বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষে। বৈঠকে পর জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি আব্দুল মোমেন একথা জানান।
রাষ্ট্রপতি মহাসচিবকে বলেন, “মেয়াদ শেষ হলেই বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের বিস্তারিত প্রক্রিয়া নিয়ে সরকার যে কোনো ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে সংলাপে রাজি আছে।”
নয়া পল্টনে হোটেলে ভিক্টোরীর হলরুমে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আয়োজনে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যাতে অংশ নিচ্ছেন বেসরকারি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষার্থী।
রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “রাষ্ট্রপতি নিরপেক্ষ ও দলমতের উর্ধ্বে উঠে কাজ করবেন- এটাই জনগণ চায়। তার ওপর সবার আস্থা থাকবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট সাহেব জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে যা বলেছেন। তাতে তিনি (রাষ্ট্রপতি) তার আস্থার জায়গাটা রাখলেন কোথায় ?
“তিনি এমন কথা জাতিসংঘের মহাসচিবকে বলে আসলেন, যা জনগণের কথা নয়। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে এমন বক্তব্য দুর্ভাগ্যজনক।’’
তিনি বলেন, “৫ জানুয়ারি শতকরা ৫ ভাগ মানুষ নির্বাচনে ভোট দিয়েছে। এই নির্বাচনে জনগনের অংশগ্রহণ ছিলো না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশও ওই নির্বাচনকে নির্বাচন হিসেবে মেনে নেয়নি। তারপরও সরকার অবৈধভাবে বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় বসে আছে।’’
দ্রুত নির্বাচনের দাবি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “বর্তমান সংকটের একমাত্র পথ একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন। আদালতে রায়ের অনেক কিছু হতে পারে। তবে রাজনীতি হতে পারে না। চলমান সংকটের সমাধানও ওই রায়ে আসবে না।
“আমরা মনে করি, রাজনৈতিক সংকটের সমাধান রাজনৈতিকভাবে করতে হবে না। সেই জন্য দ্রুত নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।”
প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক কবীর মুরাদ, যুব দলের সিনিয়র সহ সভাপতি আবদুস সালাম আজাদ ও মৎস্যজীবী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান উপস্থিত ছিলেন।
এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
২০১৩ সালে ডিসেম্বরে দলটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু করে। এ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের সহাস্রাধিক নেতা প্রশিক্ষণ নেন।