মঙ্গলবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত করা হয়েছে।
ফান্টা ও পাওয়ারএডের মতো কোকা-কোলার ফল ও ক্রীড়া পানীয়গুলোতে ব্রোমিনমেশানো ভেষজ তেল ব্যবহার করা হয়।
এই রাসায়নিক পদার্থটি টেক্সটাইল ও প্লাস্টিকের মতো পদার্থে দাহ্য প্রতিরোধী হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে বলে দাবি করেছেন এই রাসায়নিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা।
কোকা-কোলার প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি পেপসিও গত বছর তাদের পানীয় গ্যাটোরেড থেকে এই রাসায়নিক প্রত্যাহার করে নেয়।
পেপসির এক মুখপাত্র বলেন, ব্রোমিনমিশ্রিত ভেষজ তেলের (বিভিও) ব্যবহার বন্ধে তাদের বিস্তৃত পরিকল্পনা রয়েছে। তারা কোম্পানির অন্যান্য পণ্য থেকেও এটা প্রত্যাহারের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চালু পেপসির ব্রান্ড পানীয় মাউন্টেইন ডিউ ও অ্যাম্প এনার্জিতে এই উপাদান ব্যবহার হয়।
তবে, কোকা-কোলার মুখপাত্র জশ গোল্ড দাবি করেছেন, বিভিও প্রত্যাহারের বিষয়টি নিরাপত্তার জন্য নয়।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “যে পানীয়গুলোতে বিভিও ব্যবহার করা হয়, সেগুলোসহ আমাদের সবগুলো পণ্য নিরাপদ এবং সেগুলো সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বিধান মেনেই বিক্রি করা হয়।”
ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়ে উপাদানগুলোর মধ্যে মিশ্রণ ধরে রাখতে স্থিতিস্থাপক হিসেবে বিভিও ব্যবহার করা হয়।
চিকিৎসা সেবা ও গবেষণা সংস্থা মায়ো ক্লিনিকের গবেষকদের মতে, অধিক পরিমাণে বিভিওযুক্ত কোমল পানীয় পানের ফলে স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে, যা মধ্যে স্মৃতিশক্তি হারানো, চর্ম ও স্নায়ুবিক সমস্যা রয়েছে।
খাদ্যে সম্পুরক হিসেবে বিভিওর ব্যবহার ইউরোপ ও জাপানে নিষিদ্ধ হলেও যুক্তরাষ্ট্রে এটা অনুমোদিত। তবে প্রতি মিলিয়নে সর্বোচ্চ ১৫ ভাগ পর্যন্ত ব্যবহার অনুমোদিত।
কোকা-কোলা বলছে, তারা তাদের পণ্যে এই পদার্থের পরিবর্তে ‘সুক্রোজ অ্যাসিটেট আইসোবুটিরেট বা গ্লিসেরোল এস্টার অব রোজিন’ ব্যবহার করবে, যা সাধারণত চুইংগামে ব্যবহার করা হয়।
আটলান্টাভিত্তিক এই কোম্পানিটি বলছে, ইতিমধ্যে তারা দুটি পানীয় থেকে বিভিও সরিয়ে এই উপাদান ব্যবহার করছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, জনগণের চাপের মুখে কয়েকটি কোম্পানি তাদের পণ্যে এধরনের উপাদান ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে কোকা-কোলাও বিভিও প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছে।
বিভিও ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রথম প্রচারে নামে মিসিসিপির তরুণী সারাহ কাভানা, যিনি পানীয়ে এই উপাদান ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বন্ধে অনলাইনে স্বাক্ষর অভিযানে নামে।
হাজার হাজার মানুষ এরই মধ্যে এই পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে।