আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ জামায়াত-শিবির অধ্যূষিত শক্ত ঘাঁটি বলে গোটা দেশে ‘টপটেন’-এর মধ্যে অন্যতম ও সহিংস ঘটনায় ব্যাপক পরিচিত গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা এলাকা। নানা জল্পনা-কল্পনা, সন্দেহ-দ্বিধা ও সংশয়সহ টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে সম্ভাব্য সহিংস সংঘর্ষ ছাড়াই গতকাল বুধবার শান্তিপূর্ণভাবে দিনটি অতিবাহিত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের মানবতা বিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গত ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্র“য়ারী রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদী আপিল করলে শুনানী শেষে গত ১৬ এপ্রিল তা রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখে আপিল বিভাগ। সাঈদীর রায়কে কেন্দ্র করে সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদারে রেড-এলার্ট জারি করা হয়। সম্ভাব্য যে কোন সংঘর্ষ এড়াতে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই বিপুল সংখ্যক বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মাজহারুল ইসলাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হুদা, মাকরুল হাসান আব্বাসী ও মেজবাহ উদ্দিন। বুধবার ভোর থেকেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সমূহে প্রহরারত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কড়া নজরদারি শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথেই বেড়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বহনে নিয়োজিত সারিবদ্ধ সাজোয়া সেনা যানবাহনের টহল। ফাঁসির রায় পুনর্বহালের পরিবর্তে গতকাল বুধবার সকাল ১০টা ৫মিনিটে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান বিচারপতি মোঃ. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বেঞ্চ সাঈদীর আমৃত্যু কারাদন্ডাদেশের রায় ঘোষণা করেন। এর পর পরেই ক্ষুব্ধ উপজেলা জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা দুপুর ১২টার দিকে রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন শ্লোগানসহ প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল সদরের কালীবাজারে বিভিন্ন অলি-গলি প্রদক্ষিণ করে। অপরদিকে, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের আপিল বিভাগের পূর্ব ঘোষিত চুড়ান্ত রায় মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড বহাল না রাখার প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও নির্বাচনী এলাকার জাতীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি প্রভাষক শামিকুল ইসলাম লিপনের নেতৃত্বে প্রতিবাদী মুক্তিযোদ্ধা জনতার একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন শ্লোগানসহ সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শেষে সদরের চৌমাথা মোড়ে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তারা কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর ফাঁসির রায় পুনর্বহালের জোর দাবী জানান। দিনভর থমথমে ভাব বিরাজ করলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলার কোথাও কোন সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।