এশিয়ান গেমসে এখন পর্যন্ত আলো দেখাতে পারেনি কোন ডিসিপ্লিন। শুটিংয়ে আশা ছিল, তারাও বিদায় নিয়েছে কোয়ালিফাইং রাউন্ডে খেলে। ফুটবল হকির পারফরমেন্স মন ভরাতে পারেনি। ভরসা- সবেধন নীলমনি ক্রিকেট। অলিম্পিক ডিসিপ্লিন না হলেও এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের প্রথম স্বর্ণ এসেছে ওই ক্রিকেট থেকেই। এবারও ক্রিকেটেই পদকের প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ। বাকি ডিসিপ্লিনগুলো বাদ দিয়ে ক্রিকেট নিয়েই লাফালাফি করছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ)’র কর্মকর্তারা। অন্যসব ভেন্যুতে না গেলেও ক্রিকেট দেখতে ঠিকই ছুটে গেছেন বিওএ’র মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। তার উপস্থিতিতেই গতকাল জয় দিয়ে শুরু করেছে মহিলা ক্রিকেট দল। ইউনহুই ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনালে শুকতারা, সালমারা জিতেছেন ৮১ রানে। আগে ব্যাট করে ১০৭ রানের মামুলি পুঁজি গড়লেও নেপালকে ২৬ রানে গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ে আজই সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে সালমা বাহিনী। জিতলে আগামীকাল স্বর্ণ জয়ের লড়াইয়ে দেখা হবে চীন-পাকিস্তানের জয়ী দলের সঙ্গে। 
ক্রিকেট এক অপ্রচলিত খেলা দক্ষিণ কোরিয়ায়। শতকরা একজন মানুষও পাওয়া যাবে না যারা ক্রিকেট বোঝেন। তবে এশিয়ান গেমসকে ঘিরে সুন্দর অবকাঠামো তৈরি হয়েছে এখানে। ইনচন শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অস্থায়ী ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে এশিয়ান গেমসের ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এখানে পদকের লড়াইয়ে নামবেন সাকিব ও মাশরাফিরা। গত আসরে স্বর্ণ জয় করায় এবার বাংলাদেশ সরাসরি খেলবে নকআউট পর্বে। গুয়াংজু এশিয়ান গেমসের ফাইনালিস্ট হওয়ায় সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনালে খেলছে মহিলা ক্রিকেট দলও। 
গতকাল দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ। ‘ডি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নেপালের বিরুদ্ধে আয়শা রহমান শুকতারার হাফ সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১০৭ রান সংগ্রহ করেন তারা। স্লো আউটফিল্ড আর নিচু হয়ে যাওয়া উইকেটে এ সংগ্রহকেই নেপালের সামনে পাহাড় সমান হিসেবে করে দেন বাংলাদেশের বোলাররা। সালমা, রুমানা ও জাহানারার মারাত্মক বোলিংয়ে ২৬ রানেই গুটিয়ে যায় নেপাল। অধিনায়ক সালমা খাতুন, রুমানা আক্তার তিনটি করে আর জাহানারা ও ফাহিমা দুটি করে উইকেট লাভ করেন। এর আগে শুকতারা ও শাহানাজ উদ্বোধনী জুটিতে ৩৮ রান সংগ্রহ করলেও যা ছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেমানান। ২৫ বলে ১২ রান করে শাহানাজ বিদায় নিলেও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শুকতারা। তার ৬০ বলে ৫১ রানের ইনিংসেই ১০০ রানের কোটা অতিক্রম করে বাংলাদেশ। ম্যাচের দুটি বাউন্ডারিও এসেছে শুকতারার ব্যাট থেকে। উইকেটে বল নিচু হওয়ার কারণে রান কম হয়েছে বলে দাবি করেছেন ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরি করা শুকতারা। ‘উইকেটে অনেক লো। এখানে ব্যাটিং করা অনেক কষ্টের। আমার মনে হয় সবাই যদি ডাউন হয়ে খেলি সহজভাবে খেলা যাবে। এ কারণে বল দেখে খেলতে গিয়ে রান একটু কম হয়েছে’- বলেন তিনি।
সেমিফাইনালে এমন খেললে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জেতা যাবে কিনা জানতে চাইলে এ ওপেনার বলেন, ওদের বোলিং সাইড, ফিল্ডিং সাইড, ব্যাটিং সাইড বেশ ভাল। দেখে খেললে সমস্যা হবে না। ওদের সঙ্গে আমরা বিশ্বকাপে জিতেছি। আমার মনে হয় এখানে সবাই যদি সিরিয়াসলি ১০০ ভাগ দিয়ে খেলি ইনশাআল্লাহ জেতা সম্ভব। গতকাল বাংলাদেশের ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ রান এসেছে অতিরিক্ত থেকে। এ ছাড়া সালমা ৭ ও লতা মণ্ডলের ব্যাট থেকে এসেছে ১১ রান।