আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ অভাব-অনাটনের সংসারের হাল ধরে কৃষক পরিবারের সন্তান আলম মিয়া। পিতার সংসারের অভাব মোচনের জন্য লেখাপড়া শেষে যোগ দেয় কৃষি কাজে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ (বড়কুড়া) নামক গ্রামের সহজ-সরল কৃষক পরিবারের সন্তান আলম মিয়া। পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ৬/৭ বিঘা জমি নিয়ে সংসার পরিচালনার কাজ শুরু করেন। কৃষির উপরে বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ একাধিক বার লোকসান খেতে হয়। অবশেষে লোকসানের কবল থেকে পরিত্রান পেতে ধান চাষের পাশাপাশি অবশেষে তিনি নিজ জমিতে সবজি চাষ শুরু করেন। পর পর ২/১ বার সবজি চাষে লাভবান হওয়ায় এ গ্রামে আর ১০/২০ জন কৃষক আলম মিয়ার পিছু নেয়। উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের পরামর্শ ছাড়াই নিজ জ্ঞান-বৃদ্ধি দিয়ে সম্পূর্ণ জমিতে ২/৩ বছর ধরে বিভিন্ন প্রজাতির সিম ও সবজি চাষ শুরু করে আলম মিয়া। আলম মিয়ার এ গ্রামের একজন মডেল কৃষক হলেও উপ-সহকারি কর্মকর্তার সঙ্গে চিনা-জানা নেই তার। চলতি বছরে তিনি ৩ বিঘা জমিতে সিম চাষ করেছেন। সার প্রয়োগ, চারা রোপন থেকে বালাই নাশক ব্যবহার সমস্ত কাজ নিজে হাতেই করেন তিনি। ধান চাষের পাশাপাশি সবজি চাষ করায় দিন এখন ভালই চলে তার। দুই ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ মিটিয়ে সংসার পরিচালনাসহ প্রতিবছরেই তার আয় হয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে সিম চাষে খরচ হয় ৭/৮ হাজার টাকা। বাজার দর ভাল হলে প্রতি বিঘা জমিতে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ হয়। এ বছরেই তার রোপনকৃত জমিতে দেড়িতে হলেও সিম আসতে শুরু করেছে। প্রতি কেজি সিম ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। কৃষি বিভাগীয় পরামর্শ না নিয়েই বিভিন্ন পত্রিকায় কৃষি বিভাগের পরামর্শের ভিত্তিতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার, বিভিন্ন রোগ দমনের জন্য বালাই নাশক প্রয়োগ করেন। এব্যাপারে আলম মিয়া দৈনিক নয়া দিগন্তকে জানান-ধান চাষ না করে সবজি চাষ করায় তার সংসার ভাল চলছে। তবে কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতা পেলে আরও অধিকতর জমিতে সবজি চাষ করা যেত। আমার সঙ্গে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তার পরিচয় ঘটেনি। ফসল পরিচর্যার জন্য পরামর্শক হিসেবে আমরা যাকে পেয়েছি, সুন্দরগঞ্জের সার-কীটনাশক ব্যবসায়ী মেসাস সোনালী কৃষি ঘর এন্ড বীজ ভান্ডারের প্রোপাইটর শহিদার রহমান জাহাঙ্গীর ভাইকে। আমার সবজি চাষ দেখে এ গ্রামের অনেকেই সবজি চাষে উদ্ভুদ হয়েছে বলে গ্রামটি আজ সবজি পাড়া নামে পরিচিতি লাভ করেছে।