দেশে পণ্য আমদানি হ্রাস পেয়েছে। ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে পণ্য বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে উদ্বৃত্ত অবস্থা বজায় থাকার সঙ্গে বেড়েছে পরিমাণও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লেনদেন ভারসাম্য সারণির হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই মাসে পণ্য বাণিজ্যে ১৯ কোটি ৫০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত রয়েছে। গত বছরের একই সময়ে ছিল ১২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের ঘাটতি। এ সময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ২৯৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১% কম। গত বছর জুলাই মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছিল ২৯৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আবার একই সময়ে পণ্য আমদানির জন্য ব্যয় করতে হয়েছে ২৭৭ কোটি ডলার, যেখানে গত বছর জুলাই মাসে ব্যয় করতে হয়েছিল ৩১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। অর্থাৎ আমদানি কমেছে প্রায় সাড়ে ১১%। আমদানি ও রপ্তানির এ হিসাব অবশ্য ফ্রি অন বোর্ড বা এফওবি-ভিত্তিক। এর মানে হলো, রপ্তানি ও আমদানির জন্য পণ্য জাহাজে তোলার পর পণ্যের যে মূল্য, সেটাই বিবেচ্য। আর তাই আমদানির কস্ট অ্যান্ড ফ্রেইট বা সিঅ্যান্ডএফ মূল্যের সঙ্গে এর পার্থক্য হয়। সিঅ্যান্ডএফ মূল্য হলো প্রকৃত মূল্যের সঙ্গে যুক্ত হওয়া পণ্যের জাহাজীকরণের খরচ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুলাই মাসে সিঅ্যান্ডএফ ভিত্তিতে আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১৪ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। এটিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯.৪৮% কম। আমদানির শ্রেণীভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ সময় বেশিরভাগ পণ্যের আমদানি কমে গেছে। খাদ্যশস্য আমদানি কমেছে প্রায় ২৮% ও ভোজ্য তেল প্রায় ৪১%। এ বছর জুলাই মাসে খাদ্যশস্যের মজুতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ লাখ ৯৪ হাজার টন। আর গত বছর জুলাই মাসে এর পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৮৪ হাজার টন। এ সময় জ্বালানি তেল ও সামগ্রী বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। তবে কমেছে কাঁচা তুলা, সুতা, বস্ত্র ও আনুষঙ্গিক সামগ্রী এবং মূলধনী যন্ত্রপাতি। দেখা যাচ্ছে, শিল্প উৎপাদনের কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে জুলাই মাসে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ১০২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত হয়েছে, যা গত বছর জুলাই মাসে ছিল ৫৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। পরিসংখ্যান আরও দেখা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছর শেষে চলতি হিসাবের ভারসাম্য দাঁড়িয়েছে ১৫৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা ২০১২-১৩ অর্থবছর শেষে ছিল ২৫২ কোটি ৫২ লাখ ডলার।