ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর রাজধানী পোর্ট অব স্পেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংগঠন ‘এলায়েন্স ফর ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন’ (এএফআই) এর বিশ্বনীতি ফোরামে মঙ্গলবার এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, এএফআই এর এই পুরস্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজেরই স্বীকৃতি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ২৮টি ব্যাংক বাংলাদেশের ১ কোটি ৬৭ লাখ গ্রাহককে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন ২৮৪ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
আতিউর রহমান বলেন, বিশ্বে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নেতৃত্বে থাকা কেনিয়ার মতো দেশের চেয়েও বাংলাদেশে এ খাত দ্রুত বাড়ছে।
কম খরচে দ্রুত অর্থ স্থানান্তরের সেবা নিশ্চিত করতে ২০১০ সালে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। পরের বছর ২২ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে একটি নীতিমালা জারি করে, যাতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়।
গভর্নর বলেন, “আমাদের দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণমুখি ব্যাংকিং দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রকাশ ঘটেছে ওই নীতিমালায়।”
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অনুমতি পাওয়া ব্যাংকগুলো বর্তমানে ৪ লাখ ১৪ হাজার এজেন্টের মাধ্যমে সারা দেশে এ সেবা দিচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, “বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং মডেলটি সারাবিশ্বে একটি উদাহরণ হিসেবে আলোচিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংক মর্যাদাপূর্ণ এই আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হলো।”
অ্যালায়েন্স ফর ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন হলো বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক সংগঠন, যা বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষকে আর্থিক খাতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে কাজ করছে।
এর অংশ হিসাবে বাংলাদেশের দরিদ্র কৃষক, বর্গাচাষি, ক্ষুদ্র ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়ন বাড়ানোসহ আর্থিক সেবার বাইরে থাকা জনসাধারণকে এ সেবা পৌঁছে দিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গ্রামের গরিব কৃষকরাও এখন মাত্র দশ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ পাচ্ছেন। বর্তমানে এক কোটির বেশি কৃষকের এ ধরনের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুফল ভোগ করছে এমন ‘হতদরিদ্র’ ৩৬ লাখ মানুষের নামেও অ্যাকাউন্ট হয়েছে।