খাবারে ভেজালের ফলে রোগে আক্রান্ত হয়ে আমরা ঔষধ খেতে যাই। তারপর আবার নতুন বিপত্তি ঘটে যখন দেখি যে সেই ওষধের মাঝেও ভেজাল। কিছুটা সরষের ভেতর ভূত থাকার মত অবস্থা। এই ধরনের উভয় সংকটে যখন মানুষ হিমশিম খাচ্ছে, তখন যদি সর্বরোগের ঔষধের কথা বলা হয়, তখন বিশ্বাস না হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এটা সত্যি। হ্যাঁ,বলছি কালিজিরার কথা।
কালিজিরা প্রায় ২০০০ বছর ধরে নানা রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বলা হয়,কালিজিরা নাকি মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের প্রতিষেধক। বিখ্যাত চিকিৎসা বিজ্ঞানী ইবনে সিনাও এই কথা বলে গেছেন। নিয়মিত কালিজিরা খাবার ফলে মানুষ সারাজীবন ব্যাপী সুস্থ জীবন উপভোগ করতে পারে।
চলুন জেনে নেয়া যাক কালিজিরার ৭টি বিশেষ গুনাবলীর কথা।
১.কালিজিরা বিশেষ করে সর্দি জনিত রোগের প্রতিকার করে। সর্দি জনিত কারনে নাক বন্ধ হয়ে গেলে কালিজিরার ভর্তা বিশেষ উপাদেয়। আবার কালিজিরার তেল নাকে দিলেও উপকার পাওয়া যায়।
২.এছাড়াও মাথা ব্যথা,দাঁতে ব্যথা,সহ চোখ ওঠার ওষধ হিসেবে কাজ করে কালিজিরা।
৩.এজমা, এলার্জি,ব্রংকাইটিস,বার্ড ফ্লু এর মত রোগের প্রতিষেধক হল কালিজিরা।
৪.কালিজিরা নিয়মিত খাওয়া,বা সেবনের ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমান কমে। তাছাড়াও রক্ত চাপ কমায় কালিজিরা। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে এটি বিশেষ উপকারী। তবে যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা লক্ষ্য রাখবেন যাতে বেশি না খাওয়া হয়। কেননা বেশি খাওয়ার ফলে রক্ত চাপ আরও কমে যেতে পারে, ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
৫.কালিজিরা মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এমনকি নিয়মিত কালিজিরা খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতাও মানবদেহে সৃষ্টি হয়।
৬.নারীদের ক্ষেত্রে পিরিয়ড জনিত সমস্যা দূর করতে কালিজিরা খাবার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিতসকরা। এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের বুকের দুধ উতপাদনে সহায়তা করে কালিজিরা। তাছাড়া জন্ম নিয়ন্ত্রনে কালিজিরা বিশেষ উপাদেয়।
৭.বড় ধরনের চিকিতসায় রোগীদের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কমানোর জন্যে ডাক্তার রা কালিজিরা খাবার কথা বলেন। কালিজিরায় সিস্টাইন,ভিটামিন সি,সেফ্রেইন থাকে, যা দিয়ে সিসপ্লেটিন নামক প্রতিষেধক হয়, যা কেমোথেরাপীর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দূর করে।
নিয়মিত কালিজিরার তেল ব্যবহারে ত্বক সুন্দর হয়। তবে অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে এলার্জির মত দাগ দেখা দিতে পারে। কালিজিরা রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। তাই যে কোনো ধরনের সার্জারির পর কালিজিরা না খাওয়ান ভালো, অন্ততপক্ষে সার্জারির পরের ২ সপ্তাহ। অনেকে কালিজিরা খেতে চান না, কিন্তু সুস্থ জীবন উপভোগ করতে চাইলে এর কোন বিকল্প নেই। তাই নিয়মিত কালিজিরা খান,সুস্থ থাকুন।
Posted by Ab Emon