পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া যাওয়ার পথে পদ্মা নদীতে আজ রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এমভি মোস্তফা নামে যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ ডুবে গেছে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করা এক শিশুকে হাসপাতালে নেওয়ার পর সে মারা যায়। তবে লঞ্চে কতজন যাত্রী ছিল, তা এখনো জানা যায়নি।
বিকেলে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা জানান, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয় জন ২৮ জন পুরুষ, ছয় জন নারী ও চার জন শিশু আছে ।
লঞ্চ থেকে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের কয়েকজন জানান, কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়। পরে এটি উল্টে ভেসে ওঠে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্ধারকারী জাহাজ আইটি ৩৮৯ ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে তীরে আনার চেষ্টা করছে। ঢাকা থেকে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের ১৫-১৬ জন ও স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
উদ্ধারকারী জাহাজ আইটি ৩৮৯ থেকে মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করে মানিকগঞ্জ ও গোয়ালন্দ প্রতিনিধি জানান, ঘটনার পরপরই নদীতে থাকা অন্যান্য লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলার গিয়ে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধার করে। তবে কতজন এখনো নিখোঁজ, তা জানা যায়নি।
গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার কিয়াম শিকদার জানান, নিহত শিশুটির নাম স্মৃতি। তার বাবার নাম ফারুক শেখ। তাদের বাড়ি এই ওয়ার্ডেই। ফারুক তাঁর ছেলেমেয়ে, স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ দুর্ঘটনায় তিনি বেঁচে গেলেও তাঁর স্ত্রী ও শাশুড়ি এখনো নিখোঁজ। ছেলেকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে উদ্ধার পাওয়া যাত্রী হাফিজুর রহমান শেখের ভাষ্য, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাটুরিয়া ঘাট থেকে লঞ্চটি দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছাড়ে। রওনা হওয়ার ১৫ মিনিট পরে আড়াআড়িভাবে আসা একটি কার্গো জাহাজ লঞ্চটির মাঝখান বরাবর আঘাত করে। এতে লঞ্চটি উল্টে যায়। তিনি লঞ্চের ডেকে ছিলেন। ধাক্কায় তিনি নদীতে পড়ে যান। তিনি আরও জানান, যাঁরা লঞ্চের ডেকে ছিলেন, তাঁরা বের হতে পেরেছেন। তবে ভেতরে থাকা যাত্রীরা কেউ বের হতে পারেননি। হাফিজুরের বাড়ি বাগেরহাটে।
এদিকে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন নৌ-মন্ত্রী শাহজাহান খান।