স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের সেটেলমেন্ট অফিসে শুনানীর জন্য যেমন কারো অপেক্ষা করতে হয় ১যুগ, কারো বা আবার জমির দলিল জাল হয়েছে মর্মে বিজ্ঞ আদালত রায় দিলেও আমলে নেয়া হয় না এই সেটেলমেন্ট অফিসে। জাল দলিলের বিষয়টি অবগত হওয়া স্বত্ত্বেও অপরকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার পুর্বক ৩০ ধারায় জমি রেকর্ড করে দেয়া হচ্ছে অন্যদের নামে। আবার কারো কারো জমির আপিল শুনানী নিস্পত্তি করতে ঘুষ না দেয়ায় তা পাঠানো হয় যশোর জোনাল অফিসে। চক্রাকার অনিয়মের মাঝে আবার দেখা গেছে সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বেশি মূল্যে বিক্রয় করা হচ্ছে মৌজা ম্যাপ ও পর্চা। আর এ মাধ্যমে জমির মালিক ও সাধারণ কৃষকদের নিকট থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা ।। প্রতিটি মৌজা ম্যাপ ৩শ টাকার পরিবর্তে ৩শত ৫০ টাকা কখনো চারশ’ টাকা, প্রতিটি প্রিন্ট পর্চা ৬৫ টাকার পরির্বতে একশ’ টাকা হারে বিক্রয় করে থাকেন। ঝিনাইদহের শৈলকুপার নাকোল, ফলিয়া, শ্রীরামপুর সহ বিভিন্ন মৌজার তামাদি মামলা যশোর জোনাল অফিস ঘুরে শৈলকুপা আসলেও তা ফাইলবন্দী হয়ে আছে বছরের পর বছর। পেশকার জাহাঙ্গীর হোসেন এর হাতে চাপা পড়ে আছে ফাইলগুলি। এসব ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা বারবার আবেদন নিবেদন করেও তামাদি মামলার ব্যাপারে কোন অগ্রগতি করতে পারছেন না। উৎ কোচ না দিলে কোন ফাইল আমলে আনা হচ্ছে না। শৈলকুপা সেটেলমেন্ট অফিসে বিভিন্ন ধরনের ৪হাজার ৫শ ২৫টি কেস রয়েছে। যার অধিকাংশই ঝুলে আছে। প্রায় সব ধরনের অনিয়ম আর দূর্ণীতির সাথে শৈলকুপা সেটেলমেন্ট অফিসের উপসহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা নজমুল হক, উপসহকারী কর্মকর্তা নওশের আলী এবং যশোর জোনালের খলিলুর রহমান এর নামই ঘুরেফিরে আসছে। ঝিনাইদহ শহরে সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা নজমুল হকের বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে, যশোর জোনালের কর্মকর্তা খলিলুর রহমান যিনি শৈলকুপাতেও নানা দুর্ণীতি করেছেন বলে অভিযোগ যশোরে তারও বহুতল ভবন রয়েছে। এসব অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন অনেকেরই। শৈলকুপা সেটেলমেন্ট অফিসের রেকর্ড কিপার বশির আহমেদ, পেশকার জাহাঙ্গীর, বেঞ্চ ক্লার্ক আব্দুল মজিদ ও পিওন খয়বার হোসেন, নাইট গার্ড মো: বাটুল জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িত। কর্মকর্তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে নানা ঘুষ-দুর্ণীতির অডিও রেকর্ড, আদালত কিম্বা দুদকে অভিযোগ অনেক কিছুই করছে ভুক্তবোগীরা। তবে দ্রুত তার তদন্ত বা অগ্রগতি নেই। দুদকের সহযোগী সংগঠন দুর্ণীতি প্রতিরোধ কমিটি শৈলকুপা উপজেলা শাখার সভাপতি প্রভাষক আব্দুল ওহাব জানান, শৈলকুপা সেটেলমেন্ট অফিসে নানা দুর্ণীতির খবর তারা বিভিন্ন সময়ে পাচ্ছেন ভুক্তভোগীদের মাধ্যমে।
বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে গ্রামের কাগজের সিরিজ নিউজের প্রথম দিনেই অবশ্য শৈলকুপা সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানিয়েছিলেন, তাদের কিছুই করার নেই। জোনাল অফিসে ভুক্তবোগীরা অভিযোগ দিতে পারে এবং তারাই তদন্ত করেন। কেউ ঘুষ দুর্ণীতির সাথে জড়িত থাকলে যশোর জোনাল অফিস ব্যবস্থা নিতে পারেন।