ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের রোগীরা চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় কাটিয়েছেন। এতে গরমে চরম দুর্ভোগে পড়েন হাসপাতালে ভর্তিকৃত শিশু ও বয়ষ্ক রোগীরা। ব্যাহত হয় জরুরি বিভাগের চিকিৎসা সেবা। থেমে যায় সব ধরনের অপারেশন। বৃহস্পতিবার রাতে এ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ঘুরে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে জেলার উপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এসময় প্রচণ্ড বৃষ্টিও হয়। ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল। কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিহীন থাকার পর হাসপাতালের নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে রাত ১০টার দিকে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়।এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে আবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় হাসপাতাল। সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এ অবস্থ চলে। এরপর আসে বিদ্যুৎ। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন হাসপাতালে ভর্তি শিশু ও বয়ষ্কসহ সব বয়সের রোগীরা। অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। বন্ধ থাকে সব ধরনের অপারেশন। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের স্বজনরা জানান, অন্ধকার আর গরমে রোগীদের প্রচণ্ড সমস্যা হয়। ঠিকমত ওষুধ খাওয়াতে পারেনি। নার্সরা ঠিকমত আসেনি। বিশেষ করে অ্যাজমা ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুদের বেশি সমস্যা হচ্ছে। রোগীরা ঘেমে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. রেজা সেকেন্দার বলেন, জেলা সদর হাসপাতালে যাতে করে বিদ্যুতের অভাবে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত না হয় সে ব্যাপারে আমরা সব সময় তৎপর। ঝিনাইদহ বিদ্যুৎ অফিসকে একাধিকবার মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে যেন হাসপাতালের লাইনটিতে বিদ্যুৎ না যায়। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথা শুনছে না। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তারা হাসপাতালের লাইনে বিদ্যুৎ দিচ্ছে না।” তিনি আরো বলেন, “আমাদের হাসপাতালের একটি জেনারেটর থাকলেও আমরা সব সময় তা চালাতে পারি না। কেন না আমাদের তেলের অভাব রয়েছে, যার দরুন আমরা রাতের বেলায় মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য জেনারেটর চালায়। সরকার প্রতি মাসে জেনারেটর চালানোর জন্য ১০ হাজার টাকার তেল দেয়, যা চাহিদার তুলনায় কয়েকগুন কম। প্রতি ঘণ্টা জেনারেটর চালাতে পাঁচ লিটার তেলের প্রয়োজন হয়। ফলে চাহিদা মতো তেল না পাওয়ায় রাতের বেলায় বিদ্যুৎ না থাকলে আমরা নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পারি না। ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে তো আর জেনারেটর চালানো সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সরকার যদি তেলের বরাদ্দটা আরো বাড়ায় তাহলে সবসময় জেনারেটর চালাতে পারব।” হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. ইমদাদুল হক বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকার কারণে আমাদের চিকিৎসা দিতে একটু সমস্যা হলেও কিছু করার নেই। কারণ তেল নেই তাই জেনারেটর বন্ধ রাখা হয়েছে।” অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকার বিষয়ে বিদ্যুৎ অফিসের হট লাইন নম্বরে (০৪৫১৬২০৪৩) ফোন করা হলে সেখান থেকে জানানো হয়, ঝড়ের কারণে হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। লাইনম্যানরা খোঁজ নিয়ে যখন আমাদের জানাবে লাইন ঠিক আছে তখনই বিদ্যুৎ দেওয়া হবে।” এর পর ফোন রেখে দেন তিনি।