চুরির অপবাদ দিয়ে এক শিশুশিক্ষার্থীকে অমানুষিক নির্যাতন করেছেন তার শিক্ষক। বেদম পিটুনি শেষে তার মাথার চুলও কেটে দিয়েছেন তিনি। ঘটনার পর এলাকাবাসী মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
গত রোববার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শিশুটির নাম মো. আনোয়ার হোসেন (১২)। সে উপজেলার বগা ইউনিয়নের সাবুপুরা হাফেজিয়া মাদ্রাসার হেফজ শাখার ছাত্র। রাজনগর গ্রামের আবদুল খালেক হাওলাদারের ছেলে সে।
মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছিল আনোয়ার। গত রোববার বেলা ১১টার দিকে সে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যায় তার জামা-কাপড় আনার জন্য। তখন মাদ্রাসায় কেউ ছিলেন না। আনোয়ার কাউকে না জানিয়ে তালা খুলে তার জামা-কাপড় নিয়ে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে মাদ্রাসার শিক্ষক আল আমিন ক্ষুব্ধ হন। তিনি সন্ধ্যায় আনোয়ারকে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় ডেকে আনেন। প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা বলে, এরপর শিশুটির বিরুদ্ধে শিক্ষকের (আল আমিন) টাকা ও অন্য ছাত্রদের জামা-কাপড় চুরির অভিযোগ এনে তাকে বেদম পেটানো হয়। তখন শিক্ষকের নির্দেশে তাকে চেপে ধরে পাঁচ-ছয়জন শিক্ষার্থী। আনোয়ার চিৎকার করলে তার মুখের ভেতরে গামছা ঢুকিয়ে দিয়ে পেটানো হয়। একপর্যায়ে শিক্ষক ব্লেড এনে আনোয়ারের মাথার চুল কেটে দেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয়রা মাদ্রাসায় ছুটে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে শিক্ষক আল আমিন পালিয়ে যান। পরে আনোয়ারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান এলাকাবাসী।
গতকাল সোমবার হাসপাতালে আনোয়ারের বলে, ‘আমি কোনো চুরি করি নাই। এরপরও হুজুরে আমারে মারছে, মাথার চুল কাইটা দিছে। আমি এর বিচার চাই।’ মুঠোফোন বন্ধ থাকায় শিক্ষক আল আমিনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।