আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্বদেশ নিউজ২৪.কম:
বরগুনার আমতলী উপজেলার পুর্ব পাতাকাটা এম,এ দাখিল মাদ্রাসার গণিত শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেনের কাছ থেকে জোড় পুর্বক পদত্যাগ পত্র রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার ওই শিক্ষককে পিটিয়ে মাদ্রাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি কালেমা তাইয়্যেবার“ ওয়া আন্না” শব্দ জুড়ে দিয়ে অইসলামিক কাজ করেছে। শিক্ষক বলছে হাদীস, মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষা বোর্ডের পাঠ্য বইতে “ওয়া আন্না” উল্লেখ রয়েছে। আমি কোন মনগড়া কথা বলিনি। অসহায় শিক্ষক সু বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। সুপারের হুমকিতে ওই শিক্ষক মাদ্রসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার পাতাকাটা এম.এ দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন শ্রেনী কক্ষে ছাত্রদের পাঠ্য বইয়ের কালেমা তাইয়্যেবা “ লা-ইলাহা ইল¬াল¬াহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদার রসুলুল¬াহু” উচ্চারন করে পাঠদান করান। এ নিয়ে ওই শিক্ষকের সাথে অন্য শিক্ষকদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। অন্য শিক্ষকদের কথা হচ্ছে কালেমা তাইয়্যেবায় “ ওয়া আন্না” শব্দ হবে না। এক পর্যায় ওই শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে তাড়ানোর জন্য ম্যানেজিং কমিটি’র কতিপয় সদস্য ও গ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষদের ক্ষেপিয়ে তুলে। এ ঘটনার জেড় ধরে গত ৩ নভেম্বর মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আবদুল হাই ও কয়েকজন স্থানীয় লোক ওই শিক্ষককে ধরে জোড় পুর্বক পদত্যাগ পত্র নিয়ে মাদ্রাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়। ঘটনার পরে ওইদিন সন্ধ্যায় শিক্ষক জাকির হোসেন ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে সুবিচার চেয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেন। নির্বাহী অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান ওই শিক্ষককে তার বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ দেখতে চাইলে তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদিস নং বুখারী ০৭,২৪,৫১,১৩০,৪৪৮,১২৮৫,১৪০৯, মুসলিম ০১, ২৩,২৪,২৯,৩৬,৪৬,৪৭ ও তিরমিজি ২৬১০,২৬১২,২৬৩৯ দেখান। এ ছাড়াও ৬ষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেনীর মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষা বোর্ডের ধর্মীয় পাঠ্য বইতে “ ওয়া আন্না” পরিস্কার উল্লে¬খের তথ্য প্রমাণ দেখাতে স্বক্ষম হয়েছে। ইউএনও বিষয়টি সুষ্টু নিস্পত্তি ও মাদ্রাসায় ওই শিক্ষককে নিয়মিত ক্লাশ করতে পারে তার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমতলী একে পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ রশিদকে দায়িত্ব দেয়।
শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন স্যারের নির্দেশ অনুসারে শনিবার সকালে মাদ্রাসায় যাই। বিকেলে ফেরার সময় কতিপয় লোকজন আমার মোটর সাইকেলের গতি রোধ (ভাড়ায় চালিত) এবং মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি আরও জানান ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে সরকারী পাঠ্য বইকে সুপার অবজ্ঞা করেছে। আমাকে মাদ্রাসা থেকে তাড়ানোই তার মূল লক্ষ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষক জানান পাঠ্য বই অনুসারে শিক্ষক জাকির পাঠদান করিয়েছে। তাতে দোষের কি? কিন্তু সুপার ওকে তাড়ানোর জন্য পদত্যাগ পত্র ও মারধরের ঘটনা ঘটিয়েছে।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবদুল হাই জানান তার কাছ থেকে আমি কোন পদত্যাগ পত্র রাখি নাই। তবে অভিভাবকরা রেখেছে। এ বিষয় আগামী মঙ্গলবার ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি আরও জানান কোন বইতে “ওয়া আন্না” শব্দ নেই। ওই শিক্ষক “ওয়া আন্না” শব্দ উচ্চারন করে কালেমা তাইয়্যেবা ছাত্রদের পাঠ করাচ্ছে। এটা ইসলাম বিরোধী। তবে তার কাছে পাঠ্য বইতে “ওয়া আন্না” শব্দ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার জানা নেই। যদি পাঠ্য বইতে থাকে তবে শিক্ষকের পাঠ করানে দোষ কি? এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এর কোন সদত্তর দিতে পারেনি।
আমতলী একে পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ রশিদ জানান ইউএনও সাহেবের নির্দেশ অনুসারে সুপারের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করে দিয়ে ছিলাম। কিন্তু এরপরের মারধরের ঘটনা আমার জানা নেই।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান জানান বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।