পুরো চলচ্চিত্র শিল্পে এখন দারুণ হতাশা। এ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের কথা একটাই- এভাবে চলতে থাকলে ধ্বংস হয়ে যাবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র। ২০১৫ সালের চলচ্চিত্র শিল্পকে ভয়াবহ ব্যবসায়িক বিপর্যয়ের আরেকটি বছর হিসেবে চিহ্নিত করছেন চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীরা। এ বছর ৬১টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে ১০টি ছবির প্রযোজক হয়তো তাদের লগ্নিকৃত পুঁজি তুলতে সমর্থ হয়েছেন। ৫টির মতো ছবি পুঁজি তুলে লাভের মুখ দেখেছে। বাকি সব ছবিই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। নিম্নমানের চলচ্চিত্র, দর্শক পছন্দের তারকাদের অভাব, অধিকাংশ প্রেক্ষাগৃহে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ছবি প্রদর্শনের ব্যবস্থা না থাকার পাশাপাশি ভিডিও পাইরেসি, যৌথ প্রযোজনার ছবির সঠিক নীতিমালা না মানাসহ বেশ কিছু কারণে পুরো বছরটাই খারাপ সময় পার করেছে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প।
মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির তালিকা
২০১৫ সালে ভারত থেকে তিনটি ছবি আমদানি করা হয়। তাই এগুলোসহ মোট এ বছর আজ পর্যন্ত ৬৮টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এগুলো হচ্ছে গেইম, পুত্র এখন পয়সাওয়ালা, রোমিও বনাম জুলিয়েট, ওয়ান্টেড, কমিশনার, বিগব্রাদার, জিরো ডিগ্রি, ভালোবাসা সীমাহীন, কার্তুজ, ডন ২ (ভারত), এই তো প্রেম, হৃদয় দোলানো প্রেম, পাগলা দিওয়ানা, হরিযুপিয়া, গুণ্ডা, ছুঁয়ে দিলে মন, চিনিবিবি, খোকা ৪২০ (ভারত), ওয়ার্নিং, বোঝে না সে বোঝে না, আয়না সুন্দরী, অ্যাকশন জেসমিন, অচেনা হৃদয়, ঘাসফুল, সুতপার ঠিকানা, দুই বেয়াইয়ের কীর্তি, ইউটার্ন, ভালোবাসার চ্যালেঞ্জ, মনের অজান্তে, দুই পৃথিবী, পদ্ম পাতার জল, লাভ ম্যারেজ, অগ্নি টু, অমি ও আইসক্রিমওয়ালা, নদীজন, প্রার্থনা, ভালো আমাকে বাসতেই হবে, খোকাবাবু, ব্ল্যাকমানি, আরো ভালোবাসবো তোমায়, ব্ল্যাকমেইল, লাভার নাম্বার ওয়ান, দ্য স্টোরি অব সামারা, ভালোবাসতে মন লাগে, মা বাবা সন্তান, জালালের গল্প, রাজাবাবু, আশিকী, সুরিনগর, ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল, রানআউট, নগরমাস্তান, আজব প্রেম, ভালোবাসার গল্প, অশান্ত মেয়ে, চুপি চুপি প্রেম, অন্তরঙ্গ, পাকড়াও, আই লাভ ইউ প্রিয়া, মহুয়া সুন্দরী, গ্যাংস্টার রিটার্নস, ব্ল্যাক, এপার ওপার, শোভনের স্বাধীনতা, অনিল বাগচীর একদিন, নয় ছয়, লালচর, বাপজানের বায়েস্কোপ, স্বর্গ থেকে নরক।
৩০ নতুন পরিচালক
২০১৫ সালে ৩০শে জন নতুন পরিচালকের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। তারা হলেন রয়েল-অনিক (গেইম), শাহ আলম মণ্ডল (ভালোবাসা সীমাহীন), বাপ্পারাজ (কার্তুজ), সোহেল আরমান (এই তো প্রেম), শিহাব শাহীন (ছুঁয়ে দিলে মন), নজরুল ইসলাম বাবু (চিনিবিবি), মকবুল হোসেন (আয়না সুন্দরী), এস আই খান (অচেনা হৃদয়), আলভী আহমেদ (ইউটার্ন), তন্ময় তানসেন (পদ্ম পাতার জল ও রানআউট), রিকিয়া মাসুদো (স্টোরি অব সামারা), আলী আজাদ (ভালো আমাকে বাসতেই হবে), আকরাম খান (ঘাসফুল), প্রসূন রহমান (সুতপার ঠিকানা), অনিমেষ আইচ (জিরো ডিগ্রি), আবদুল আজিজ (রোমিও বনাম জুলিয়েট ও আশিকী), সুমন ধর (অমি ও আইসক্রিমওয়ালা), সৈকত নাসির (দেশা দ্য লিডার), মিনহাজ কিবরিয়া (সুরিনগর), শাহরিয়ার নাজিম জয় (প্রার্থনা), এ আর মুকুল নেত্রবাদী (মা বাবা সন্তান), সাইফ চন্দন (ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল), আবু শাহেদ ইমন (জালালের গল্প), এফ জাহাঙ্গীর (অশান্ত মেয়ে), শামীম আরা নীপা (মহুয়া সুন্দরী), নাদের চৌধুরী (লালচর), রিয়াজুল রিজু (বাপজানের বায়েস্কোপ), কিবরিয়া লিপু (ব্ল্যাক), রাফায়েল আহসান (নয় ছয়), ড. অরূপ রতন চৌধুরী (স্বর্গ থেকে নরক)।
৩২ নতুন নায়ক-নায়িকা
২০১৫ সালে ৩২ জন নতুন নায়ক-নায়িকার আবির্ভাব ঘটেছে। তারা হলেন পরীমনি (ভালোবাসা সীমাহীন, পাগলা দিওয়ানা ও আরো ভালোবাসবো তোমায়), অমৃতা খান (গেইম ও গুণ্ডা), মৌসুমী নাগ (রানআউট ও প্রার্থনা), নুসরাত ফারিয়া (আশিকী), আলিশা প্রধান (অন্তরঙ্গ), সোহান খান ও রিক্তা (কার্তুজ), তানিয়া বৃষ্টি ও কাজী আসিফ (ঘাসফুল), মৌসুমী হামিদ (ব্ল্যাকমেইল, ব্ল্যাকমানি ও জালালের গল্প), সজল (রানআউট), অপূর্ব (গ্যাংস্টার রিটার্নস), আশিক চৌধুরী (আয়না সুন্দরী ও হৃদয় দোলানো প্রেম), সবুজ খান (পাগলা দিওয়ানা), সাব্বির আহমেদ (হরিযুপিয়া), তানিয়া (আয়না সুন্দরী), রাভিনা (মনের অজান্তে), অনন্যা ও সীমান্ত (ভালো আমাকে বাসতেই হবে), শিবা (স্টোরি অব সামারা), হৃদয় চৌধুরী ও নির্জনা (ভালোবাসতে মন লাগে), চমক তারা (মা বাবা সন্তান), মিনহাজ কিবরিয়া, নায়লা ও নীপা (সুরিনগর), জয় ও মাহিয়ান চৌধুরী (অবাস্তব ভালোবাসা), মোহনা মীম (লালচর), সানজিদা তন্ময় (বাপজানের বায়স্কোপ), মুনিয়া আফরিন (ভালোবাসার গল্প), আরেফ সৈয়দ (অনিল বাগচীর একদিন)।
পরিচালকের নাম ও ছবি মুক্তির সংখ্যা
৩টি করে ছবি পরিচালনার মাধ্যমে শীর্ষস্থানে রয়েছেন একজন পরিচালক। তিনি হলেন সাফিউদ্দিন সাফি (বিগব্রাদার, ওয়ার্নিং ও ব্ল্যাকমানি)। দুটি করে ছবি মুক্তি পেয়েছে আবদুল আজিজ (রোমিও বনাম জুলিয়েট ও আশিকী), অনন্য মামুন (ভালোবাসার গল্প ও ব্ল্যাকমেইল), ওয়াজেদ আলী সুমন (পাগলা দিওয়ানা, আজব প্রেম) ও তন্ময় তানসেন (পদ্ম পাতার জল ও রানআউট)। বাকিদের একটি করে ছবি মুক্তি পেয়েছে। তারা হলেন রয়েল ও অনিক (গেইম), নার্গিস আক্তার (পুত্র এখন পয়সাওয়ালা), আনোয়ার সিরাজী (কমিশনার), অনিমেষ আইচ (জিরো ডিগ্রি), শাহ আলম মণ্ডল (ভালোবাসা সীমাহীন), বাপ্পারাজ (কার্তুজ), সোহেল আরমান (এই তো প্রেম), আবুল কালাম আজাদ (হৃদয় দোলানো প্রেম), গোলাম মোস্তফা শিমুল (হরিযুপিয়া), ইস্পাহানী আরিফ জাহান (গুণ্ডা), শিহাব শাহীন (ছুঁয়ে দিলে মন), নজরুল ইসলাম বাবু (চিনিবিবি), মনতাজুর রহমান আকবর (বোঝে না সে বোঝে না), মকবুল হোসেন (আয়না সুন্দরী), ইফতেখার চৌধুরী (অ্যাকশন জেসমিন), এস আই খান (অচেনা হৃদয়), আলভী আহমেদ (ইউটার্ন), আকরাম খান (ঘাসফুল), প্রসূন রহমান (সুতপার ঠিকানা), প্রয়াত আবদুল্লাহ আল মামুন (দুই বেয়াইয়ের কীর্তি), আবদুল মান্নান (ভালোবাসার চ্যালেঞ্জ), জাকির খান (মনের অজান্তে), এফ আই মানিক (দুই পৃথিবী), রিকিয়া মাসুদো (স্টোরি অব সামারা), শাহিন সুমন (লাভ ম্যারেজ), ইফতেখার চৌধুরী (অগ্নি টু), সুমন ধর (অমি ও আইসক্রিমওয়ালা), শাহরিয়ার নাজিম জয় (প্রার্থনা), আলী আজাদ (ভালো আমাকে বাসতেই হবে), শাহনেওয়াজ কাকলী (নদীজন), এস এ হক অলিক (আরো ভালোবাসবো তোমায়), ফারুক ওমর (লাভার নাম্বার ওয়ান), কালাম কায়সার (ভালোবাসতে মন লাগে), এ আর মুকুল নেত্রবাদী (বাবা সন্তান), আবু শাহেদ ইমন (জালালের গল্প), বদিউল আলম খোকন (রাজাবাবু), মিনহাজ কিবরিয়া (সুরিনগর), সাইফ চন্দন (ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল), রকিবুল আলম রাকিব (নগর মাস্তান), এফ জাহাঙ্গীর (অশান্ত মেয়ে), মোস্তাফিজুর রহমান মানিক (চুপি চুপি প্রেম), চাষী নজরুল ইসলাম (অন্তরঙ্গ), হারুন উজ্জামান (পাকড়াও), মামুন খান (আই লাভ ইউ প্রিয়া), শামীম আরা নীপা (মহুয়া সুন্দরী), আশিকুর রহমান (গ্যাংস্টার রিটার্নস), কিবরিয়া লিপু (ব্ল্যাক), দেলোয়ার জাহান ঝন্টু (এপার ওপার), মানিক মানবিক (শোভনের স্বাধীনতা), মোরশেদুল ইসলাম (অনিল বাগচীর একদিন), নাদের চৌধুরী (লালচর), রাফায়েল আহসান (নয় ছয়), রিয়াজুল রিজু (বাপজানের বায়োস্কোপ) ও ড. অরূপ রতন চৌধুরী (স্বর্গ থেকে নরক)।
আলোচিত দশ ছবি
১। রাজাবাবু ২। জিরো ডিগ্রি ৩। লাভ ম্যারেজ ৪। আরো ভালোবাসবো তোমায় ৫। রোমিও বনাম জুলিয়েট ৬। আশিকী ৭। অগ্নি টু ৮। ছুঁয়ে দিলে মন ৯। চুপি চুপি প্রেম ও ১০। জালালের গল্প।
সর্বাধিক ছবি ইমপ্রেস টেলিফিল্মের
সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র প্রযোজনা পরিবেশনা সংস্থা ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লি. এ বছরও সর্বাধিক ছবি উপহার দিয়েছে। ২০১৫ সালে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লি. প্রযোজিত পরিচালিত ৯টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। ছবিগুলো হচ্ছে হরিযুপিয়া, ঘাসফুল, নদীজন, অমি ও আইসক্রিমওয়ালা, জালালের গল্প, প্রার্থনা, গাড়ীওয়ালা, সুরীনগর, একাত্তরের মা জননী। উল্লিখিত ৯টি ছবির মধ্যে ৫টিতেই নতুন পরিচালক উপহার দিয়েছে ইমপ্রেস। তারা হলেন আকরাম খান, সুমন ধর, আবু শাহেদ ইমন, শাহরিয়ার নাজিম জয়, আশরাফ শিশির।
শাকিব ও পরীমনি সর্বাধিক
ছবির নায়ক-নায়িকা
জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাকিব খান এক যুগ ধরে ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিচ্ছেন। পাশাপাশি বছরজুড়ে ছবি মুক্তির দিক দিয়েও তিনি এগিয়ে। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। ২০১৫ সালে শাকিব অভিনীত পাঁচটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এর মধ্যে অন্তত তিনটি পেয়েছে ব্যবসায়িক সাফল্য। মুক্তির ক্রমানুসারে শাকিবের ছবিগুলো হলো- ‘এই তো প্রেম’, ‘দুই পৃথিবী’, ‘লাভ ম্যারেজ’, ‘আরও ভালোবাসবো তোমায়’ এবং ‘রাজা বাবু’। শাকিবের পরই যার নাম আসে তিনি হলেন অপু বিশ্বাস। অপুর তিন ছবি ‘দুই পৃথিবী’, ‘লাভ ম্যারেজ’, ‘রাজা বাবু’র দর্শক বছরের অন্য ছবিগুলোর চেয়ে বেশি। তবে সংখ্যার দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়েছেন এ নায়িকা। তাকে টপকে গেছেন নবাগতা পরীমনি। অভিষেক বছরেই এই সুন্দরীর ছয়টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। পরীর অভিষেক ছবি ‘ভালোবাসা সীমাহীন’। এরপর বছরজুড়ে পর্যায়ক্রমে বড় পর্দায় এসেছে তার ‘পাগলা দিওয়ানা’, ‘আরো ভালোবাসবো তোমায়’, ‘লাভার নাম্বার ওয়ান’, ‘নগর মাস্তান’, ‘মহুয়া সুন্দরী’। এদিকে ‘অগ্নি’খ্যাত নায়িকা মাহিয়া মাহির বছরটা কেটেছে মোটামুটি। তার আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদ, ফেরা না ফেরার গুঞ্জন, ভিডিও স্ক্যান্ডাল, চলচ্চিত্র ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা, হঠাৎ ছবি কমে যাওয়া, প্রেমের গুঞ্জন- এমন বেশকিছু নেতিবাচক বিষয় সামাল দিতে হয়েছে তাকে। মাহির বাঁকবদলের ছবি ‘কৃষ্ণপক্ষ’ এ বছরই মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও তা পায়নি। এ বছর তার মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলো হচ্ছে- ‘বিগ ব্রাদার’, ‘ওয়ার্নিং’ এবং ‘অগ্নি-২’। এর মধ্যে ‘অগ্নি-২’ ছিল তার জন্য ধামাকা। অন্য দুটি গড়পড়তা। শাবনূর অভিনীত কোন ছবি এ বছর মুক্তি পায়নি।
বাকি তারকাদের বছরজুড়ে হালচাল
বছরজুড়ে আলোচনায় ছিলেন আরিফিন শুভ। তবে ছবি হিট বা ব্যবসাসফলতা দিয়ে না, এ বছর কলকাতায় বিয়ে করেন এ তারকা। তার স্ত্রীর নাম অর্পিতা। আর ফেরদৌস অভিনীত এ বছরের ছবি দুটি। ‘শোভনের স্বাধীনতা’ ও ‘স্বর্গ থেকে নরক’। অন্যদিকে, আনিসুর রহমান মিলন, নিরব, বাপ্পি ও সাইমন এ বছর তেমন ঝলক দেখাতে পারেননি। মিলনের ‘লালচর’ এবং নিরবের ‘গেইম’ ও ‘নদীজন’ ছবি দুটি তেমন ব্যবসা সফল হয়নি। আর বাপ্পি ও সাইমনের তিনটি করে ছবি মুক্তি পেয়েছে এবার। এরমধ্যে বাপ্পি অভিনীত ‘গুণ্ডা দ্য টেরোরিস্ট’, ‘লাভার নাম্বার ওয়ান’, ‘আজব প্রেম’ ছবিগুলো সাফল্যের মুখ দেখেনি। আর সাইমন অভিনীত ‘অ্যাকশন জেসমিন’, ‘ব্ল্যাকমানি’ ও ‘চুপি চুপি প্রেম’ ছবিগুলোর মধ্যে ‘চুপি চুপি প্রেম’ ছবির গল্পটা শুধু দর্শকরা গ্রহণ করেছেন। ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’, ‘অচেনা হৃদয়’, ‘পদ্মপাতার জল’, ‘অন্তরঙ্গ’-এই চারটি ছবির নায়ক ইমন। ছবিগুলো তাকে আলোচনায়ও রেখেছে। এসবের মধ্যে ‘পদ্মপাতার জল’ ছবিটি আলোচনায় আসে। অন্যদিকে বিদ্যা সিনহা মিম এ বছর ‘পদ্ম পাতার জল’ ও বছর শেষে সোহমের বিপরীতে ‘ব্ল্যাক’ ছবি দুটি নিয়ে বছরজুড়ে আলোচনায় ছিলেন। তবে ছবি দুটি তেমন ব্যবসা করেনি। সবশেষে কয়েক জন চিত্রনায়িকার নাম উল্লেখ করতে হয়। তারা হলেন পপি, মৌসুমী , নিপুণ, কেয়া, ববি, জাকিয়া বারী মম, জয়া আহসান, মৌসুমী হামিদ, অর্পণা ঘোষ, নুসরাত ফারিয়া। এরমধ্যে চিত্রনায়িকা পপির এ বছর একটি ছবি মুক্তি পায়। এটি প্রয়াত চলচ্চিত্র পরিচালক ও অভিনেতা আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘দুই বেয়াইয়ের কীর্তি’। মৌসুমী বছরজুড়ে নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্র নিয়ে আলোচনায় থাকলেও তার অভিনয়ে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ছবি ‘আশিকী’ শুধু এ বছর মুক্তি পায়। নিপুণের এ বছর দুটি ছবি মুক্তি পায়। ছবি দুটি হচ্ছে ‘শোভনের স্বাধীনতা’ ও ‘স্বর্গ থেকে নরক’। আর কেয়া, মম, জয়া, মৌসুমী হামিদ, নুসরাত ফারিয়া ও অপর্ণা ঘোষের একটি করে ছবি মুক্তি পায়। কেয়া অভিনীত ‘ব্ল্যাকমানি’, মম অভিনীত ‘ছুঁয়ে দিলে মন’, জয়া আহসানের ‘জিরো ডিগ্রি’, মৌসুমী হামিদের ‘জালালের গল্প’, ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘ব্ল্যাকমানি’ ছবিগুলো মুক্তি পায়। এরমধ্যে জয়ার ‘জিরো ডিগ্রি’ ও মৌসুমী হামিদের অভিনীত ‘জালালের গল্প’ ছবিটি প্রশংসিত হয়। অন্যদিকে, নুসরাত ফারিয়ার অভিষেক হয় ‘আশিকী’ ছবির মাধ্যমে। এ ছবির গান ও ফারিয়ার অভিষেক দর্শকরা গ্রহণ করেছে। আর অপর্ণা ঘোষ অভিনীত ‘সুতপার ঠিকানা’ ছবিটি মুক্তি পায়। এ ছবি সুবাদে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেরেও সার্বিক বিচারে চলচ্চিত্রের চেয়ে তিনি নাটকে বেশি প্রশংসা কুড়ান। আর ববি এ বছর ‘অ্যাকশন জেসমিন’ ও ‘ব্ল্যাকমেইল’ ছবি দুটিতে অভিনয় করলেও একটি ছবিও আশানুরূপ প্রত্যাশা পূরণ করেনি। সবশেষে, আলিশা প্রধানের ‘অন্তরঙ্গ’ এবং জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়ার ‘গ্যাংস্টার রিটার্নস’-এর কথা বলতে হয়। ছবি দুটি হঠাৎ করেই মুক্তি দেয়া হয়। অপূর্বকে নিয়ে বড় পর্দায় ‘গ্যাংস্টার রিটার্নস’ ছবিতে এবং সজলকে নিয়ে ‘রানআউট’ ছবিতে অনেকে আশা করলেও শেষ পর্যন্ত ছবিটি নিয়ে নির্মাতারা নিজেরাই হতাশ হন।
যাদের হারিয়েছি
মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন (চলচ্চিত্র সাংবাদিক-২রা অক্টোবর), নাগমা (মহিলা ভিলেন ২৮শে সেপ্টেম্বর), আদিল (অভিনেতা-৩রা অক্টোবর), মিঠুন (অভিনেতা-২৫শে মে), চাষী নজরুল ইসলাম (নির্মাতা-১১ই জানুয়ারি)।