ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেমিফাইনালে ব্যাট হাতে বড় শটই পার্থক্য গড়েছে দু’দলে। পুরো ইনিংসে ভারতীয়রা দৌড়ে রান সংগ্রহ করেছে ৯৫। পক্ষান্তরে ক্যারিবীয়রা ইনিংসে দৌড়ে নেয় ৪৪ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পুরো ইনিংসে বাউন্ডারি থেকে আসে ১৪৬ রান। আর ভারতীয়রা বাউন্ডারি থেকে পায় ৯২। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে ১৯৩ রানের টার্গেট তাড়া করে জয় পায় ক্যারিবীয়রা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের টার্গেটে জয়ের রেকর্ড এটি। এমন শীর্ষ রেকর্ডটি রচিত হয় এবারের বিশ্বকাপে মুম্বইয়ের একই মাঠে। গ্রুপপর্বে ওয়াংখেড়ে মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৩০ রান তাড়া করে জয় পায় ইংল্যান্ড। আর ২০০৭ বিশ্বকাপে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা জয় কুড়ায় ২০৬ রান তাড়া করে। এবারের বিশ্বকাপে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ফাইনালে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবারের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মোট রানের ৭৬.৮৪% আসে বাউন্ডারি থেকে। টি-টোয়েন্টিতে ১৭৫ রানের ১২৬ ইনিংসে বাউন্ডারি থেকে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ২০১৪ বিশ্বকাপে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাউন্ডারি থেকে নেদারল্যান্ডসের সংগ্রহ ছিল দলের মোট রানের ৮৫.৭১%। গত বছর জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৩২ রানের টার্গেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ৭৮.২২ রান আসে বাউন্ডারি থেকে। রেকর্ডে উল্টো চিত্র ভারতীয়দের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেমিফাইনালে বাউন্ডারি থেকে ভারতের সংগ্রহ ইনিংসের ৪৯.১৯%। কমপক্ষে ১৭৫ রানের ইনিংসে এটা বাউন্ডারি থেকে সবচেয়ে কম রানের রেকর্ড। এমন ইনিংসে বাউন্ডারি থেকে ৫০%-এর কম রানের নজির ছিল না। সেমিফাইনালে ভারতের ইনিংস শেষ হয় ১৯২/২ সংগ্রহ নিয়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাঁচ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সর্বোচ্চ। ২০০৭ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ডারবানে ভারতের সংগ্রহ ছিল ২১৮/৪। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারতের সর্বোচ্চ সংগ্রহটা ছিল ২০১১ সালে ত্রিনিদাদে ১৫৯/৬। ওয়াংখেড়ে মাঠে সেমিফাইনালে সিঙ্গেল, দুই ও তিন রান থেকে ভারতের স্কোর বোর্ডে জমা পড়ে ৯৫ রান। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে ইনিংসে ব্যাট হাতে দৌড়ে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের নজির। এর শীর্ষ দুই রেকর্ড ইংল্যান্ডের। ২০১১ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯৯ ও ২০০৯ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৯৬ রান। বৃহস্পতিবার ইনিংসে ভারতীয়রা ব্যাট হাতে দৌড়ে নেন ৫৪ সিঙ্গেলস, ১৯ বার দুই ও একবার তিন রান। ভারতের ইনিংসে ডটবল ছিল ২৯। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা ছাড়েন ৫০ ডটবল। ইনিংসে ক্যারিবীয়রা হাঁকান ২০টি চার ও ১১টি ছক্কা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতের বিপক্ষে এটি দ্বিতীয় সর্বাধিক ছক্কার রেকর্ড। ২০১০ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ১৬টি ছক্কা হাঁকান অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা।
বোলারদের ‘রেকর্ড ভোগান্তি’
ম্যাচের দুই ইনিংসে ৩৯.৪ ওভারে দু’দলের মোট সংগ্রহ ৩৮৮ রান। কিন্তু দুই ইনিংসে সাকুল্যে দেখা গেলো মাত্র ৫ উইকেটের পতন। অর্থাৎ ৭৭.৬০ রানে এক উইকেট। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে উইকেট প্রতি রানের এটি রেকর্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে উইকেট প্রতি ৫০.০০ রানের ঘটনা রয়েছে মাত্রই একবার। ২০০৭ সালে সংক্ষিপ্ত ঘরানার ক্রিকেট বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম ম্যাচে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুখোমুখি হয় ওই ম্যাচে। বৃহস্পতিবার ম্যাচে ব্যক্তিগত ৪০ রানের কোঠায় পৌঁছেন দু’দলের ৬ ব্যাটসম্যান। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এমন দেখা গেলো মাত্রই দ্বিতীয়বার। এমন অপর ঘটনাটি দেখা গেছে ২০১৪’র বিশ্বকাপে সিলেটে আয়ারল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস ম্যাচে।
বিশ্বকাপে বড় টার্গেটে জয়
দল স্কোর প্রতিপক্ষ টার্গেট ভেন্যু আসর
ইংল্যান্ড ২৩০/৮ দ. আফ্রিকা ২৩০ মুম্বই ২০১৬
দ. আফ্রিকা ২০৮/২ ও. ইন্ডিজ ২০৬ জোহানেসবার্গ ২০০৭
ও. ইন্ডিজ ১৯৬/৩ ভারত ১৯৩ মুম্বই ২০১৬
অস্ট্রেলিয়া ১৯৭/৭ পাকিস্তান ১৯২ গ্রস আইলেট ২০১০
নেদারল্যান্ডস ১৯৩/৪ আয়ারল্যান্ড ১৯০ সিলেট ২০১৪