শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে উপজেলার ধনকুণ্ডি এলাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে পেন্টাগন হোটেলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে শেরপুর থানার ওসি খান মো. এরফান জানান।
আহতদের মধ্যে ছয়জনকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ১২ জনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওসি বলেন, রেখা পরিবহনের একটি বাস ঢাকা থেকে বগুড়ার দিকে আসছিল। আর পাথরবোঝাই একটি ট্রাক যাচ্ছিল সিরাজগঞ্জের দিকে।
“দুই বাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই দুই চালকসহ সাতজনের মৃত্যু হয়। আর শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও জিয়াউর রহমান হাসপাতালে দুইজন মারা যান।”
দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও ট্রাকের কারণে সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছু সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শাহ আলম জানান, ১০ জনের মধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয় জিয়াউর রহমান হাসপাতালে।
হাইওয়ে পুলিশ সুপার ইসমাইল হাওলাদার বলেন, ধারণা করা হচ্ছে বাসের চালক তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকায় দুঘর্টনাটি ঘটেছে।
নিহতদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
তারা হলেন বাসচালক দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আব্দুল হাফিজের ছেলে শামিম (৪০) ও ট্রাকচালক টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার আব্দুল মালেকের ছেলে ভোলা (৩৮), দিনাজপুর সদর উপজেলার নুরুল ইসলামের ছেলে নাজমুল (৩৯) ও শহরের মিস্ত্রিপাড়ার আব্দুল আজিজের ছেলে পারভেজ (৩৭), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার খলিলুর রহমানের ছেলে বেনজির (৩৫) ও জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার সানোয়ার হোসেনের ছেলে রাকিব (২৫)।
জিয়াউর রহমান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাসুদ আহসান সাংবাদিকদের জানান, এখানে ভর্তি ১২ জনের মধ্যে ১১ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
তারা হলেন চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার নুর মোহাম্মদ (২৮), দিনাজপুরের আইয়ুব আলী (৬০), দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বারেক (৩৫) ও নবাববগঞ্জ উপজেলার সাইদুল (৩০), ঠাকুরগাঁও জেলার আব্দুল লতিফ (৩০), টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার জাফর (২২), গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শাহিন (২৩) ও এরশাদ (২৮) এবং সাঘাটা উপজেলার শফিকুল (২৮), বগুড়ার শিবগঞ্জের রজ্জব আলী (৬৫) ও চাঁদপুরের মতলব উপজেলার হাসান (২৫)।
শেরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরও ছয়জন ভর্তি রয়েছে। তাদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালে গিয়ে আহত প্রায় সব যাত্রীর কাছেই তাদের আত্মীয়-স্বজনকে দেখা গেছে। মৃত অনেকের মোবাইল ফোন থেকে তাদের স্বজনদের খবর দেওয়ায় তারাও হাসপাতালে ভিড় করছে।
আহত শাহিনুর আলম (২৫) অভিযোগ করেন, বাসটি ঢাকা থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশে ছাড়ার কথা রাত ১১টায়। কিন্তু চালক রাত ১টায় রওনা হন। সময় কভার করার জন্য দ্রুতগতিতে বাস চালিয়ে আসে। বাসের অবস্থাও ভালো না।
“দ্রুতগামী বাসটি বিকট শব্দে চলছিল। চালকও ভালোভাবে গাড়ি চালাতে পারছিলেন না। গাড়িটি বারবার রাস্তার এদিক-ওদিক যাচ্ছিল। যাত্রীরা বারবার আস্তে চালাতে বললেও চালক কারও কথা শোনেননি।”