দেশে জঙ্গি তৎপরতা আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়লেও এখনো নানা জটিলতার কারণে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ব্যবহারই শুরু হয়নি। এ আইনে বিচার কাজ শুরু করতে হলে প্রয়োজন সরকারের পূর্বানুমতি। যা কিছুটা হলেও বিচার কাজ বিলম্বিত করে বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা।
আইনটি সংশোধনের পাশাপাশি জঙ্গি দমনে প্রয়োজনে বিশেষ আদালত স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবীরা। তবে বর্তমান আইনেই জঙ্গি দমন সম্ভব বলে মনে করে আইন মন্ত্রণালয়।
এ মাসের শুরুতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারি ও শোলাকিয়া ঈদগা মাঠে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার মধ্য দিয়ে জঙ্গিরা তাদের বীভৎসতার জানান দেয়। এরপরই ফের আলোচনায় আসে দীর্ঘদিন ধরে গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গি নেতাদের বিচার প্রক্রিয়ার বিলম্ব নিয়ে।
জঙ্গি বা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িতদের বিচার করতে ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জারি করা অধ্যাদেশটি ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সন্ত্রাস বিরোধী আইন হিসেবে জাতীয় সংসদে অনুমোদন পায়। এ আইনে সন্ত্রাসীদের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করতে হলে রাষ্ট্রের অনুমতি নিতে হয়। যা জঙ্গিদের বিচারের ক্ষেত্রে বাধা বলে মনে করেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘এ আইনকে সংশোধনের মাধ্যমে আরো শক্ত করা দরকার। তাহলে আর বিচারকাজে বিলম্ব হবে না।’
তবে এর সাথে দ্বিমত পোষণ করে বর্তমান আইনকেই যথেষ্ট বলছেন বর্তমান আইনমন্ত্রী। অন্যদিকে জঙ্গিদের বিচার দ্রুত শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে একটি বিশেষ আদালত স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন অন্যতম সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন।
সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি মনে করি সর্বোচ্চ আদালত ও আমাদেরর সাবেক প্রধান বিচারপতিদের পরামর্শ নিয়ে এ আইনকে কার্যকরভাবে প্রয়োগের ব্যবস্থা করা দরকার।’
বর্তমান আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ‘পেনাল কোড প্রভিশন আছে, স্পেশাল পাওয়াক অ্যাক্ট ১৯৭৪ এ প্রভিশন এবং অ্যান্টি টেরিরিজম অ্যাক্ট আছে। আর এগুলোর বিচার যাতে দ্রুত হয় তার জন্য আমাদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টও আছে। আমাদের কিন্তু আইনের কোন কমতি নেই।’
অনুমতির অভাবে এখন পর্যন্ত দেশে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে কোন শীর্ষ জঙ্গির বিচার কাজ শুরু করতে পারে নি আদালত।