অজয় কুন্ডু মাদারীপুর প্রতিনিধি:
দুর্ভোগের অপর নাম মাদারীপুরের খাগদী-চরমুগরিয়া-শ্রীনদী-রাজৈর সড়ক। খানা খন্দকে ভরা যোগাযোগের অনুপযোগী গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে অহরহ ঘটছে দুঘর্টনা।মাদারীপুর জেলার ১৫ ইউনিয়নের জনগনের যাতায়াতের অন্যতম এই রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে প্রায় ৮ বছর আগে। মাহিন্দ্র,ইজিবাইক,অটোভ্যান ও টেম্পুসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতে হিমশিম খাচ্ছে এ সড়কে।এ সড়ক পথে হাজার হাজার যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় মাদারীপুর সদর উপজেলার খাগদী-চরমুগরিয়া-শ্রীনদী সড়কটি প্রায় ১০ বছর আগ থেকেই যোগাযোগের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যে যাও মেরামতের কাজ করা হয় তাতে বাস চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে ৮ বছর যাবৎ। খাগদী-চরমুগরিয়া-শ্রীনদী-রাজৈর পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৮ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা ভয়াবহ খারাপ।এ সড়ক পথে জনগনের যাতায়াতের এক মাত্র মাধ্যম হচ্ছে মাহিন্দ্র,ঈজিবাইক,অটোভ্যান ও ভটভটি।মাদারীপুরের চরমুগরিয়া থেকে হাউসদি বাজার পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে কয়েক মাস আগে। হাউসদি বাজার থেকে শ্রীনদী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানা খন্দকের। পুরো সড়কের পিচ ঢালাই উঠে গিয়ে এবরো থেবরো হয়ে পড়েছে সড়কটি। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের উপর বড় বড় জলাশয়ের রূপ নেয়। এ সময় জরাজীর্ণ এ সড়কে যানবাহন চলাচলে নিতে হয় বাড়তি সতর্কতা।
রাজৈর-শ্রীনদী ৮ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ইশিবপুর ইউনিয়নের মাঝকান্দি এলাকার একটি জরাজীর্ণ সেতুসহ ১ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা ভয়াবহ খারাপ। কয়েক বছর আগে মাঝকান্দি কালভার্টের দুই পাশের ক্ষতিগ্রস্থ এপ্রোজ সড়কের মেরামত করা হলেও বর্তমানে কালভার্টের দুই পাশের এপ্রোজ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কালভার্টটি।অপ্রশস্ত ও খানা খন্দকে ভরা এ সড়কে যাত্রীবাহী মাহিন্দ্র,ইজিবাইক ও অন্যান্য ছোট ছোট যানবাহনকে সাইড দিতে গিয়ে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা।গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দীর্ঘদিন যাবৎ যোগাযোগের অনুপযোগী হওয়া সত্তে¡ও মেরামতের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি কর্তৃপক্ষ। খাগদী-চরমুগরিয়া-শ্রীনদী-রাজৈর সড়ক পথে নিয়মিত মাদারীপুর সদর ও রাজৈর উপজেলার পঞ্চাশটিরও অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে থাকে। জরাজীর্ণ এ সড়কে মাহিন্দ্র,ইজিবাইক ও অন্যান্য যানবাহনকে শিশু,বৃদ্ধ ও রোগী নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে অত্যন্ত ঝুকি নিয়ে।চলতে হচ্ছে মালবাহী ভারী যানবাহনকে। এতে যানবাহনেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।আর অসুস্থ রোগি নিয়ে এ সড়কে যাতায়াত করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ¯^জনদের।মাদারীপুর জেলা শহর ও উপজেলায় যাতায়াতের বিকল্প কোন পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে জনগনকে জরাজীর্ণ এ সড়ক পথেই যাতায়াত করতে হচ্ছে।
এ রুটের মাহিন্দ্র চালক আল আমিন মাতুব্বর জানান,এ রুটে মাহিন্দ্র চালালে পার্স পাট্রা ভেঙ্গে যায়। গাড়ির মারাত্মক ক্ষতি হয়।সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানান।
ঈজি বাইকের চালক নূরুজ্জামান ফকির জানান,জরাজীর্ণ সড়কে ঈজিবাইক চালানোর সময় গাড়ির নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখতে না পারায় প্রায়ই দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়।দুর্ঘটনার হাত থেকে যানমাল রক্ষার জন্য সড়ক মেরামত করা আশু প্রয়োজন।
মিঠাপুর ল²ী নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র মিঠুন জানায়,খানা খন্দকে ভরা এ সড়ক পথে যাতায়াত করে যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়া যায়না। যেহেতু এ সড়ক পথে বাস চলে না,তাই মাহিন্দ্র,ঈজিবাই,অটো ভ্যান চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানান তিনি।
এ সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী শিক্ষিকা শ্রাবন্তি রায় জানান, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের অবস্থা নাজুক থাকা আদৌ কাম্য নয়।সড়কটি দ্রুত মেরামত করা দরকার।
কালির বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহসিন জানান,ভাংগা চূড়া সড়ক পথে টেকেরহাট,চরমুগরিয়া বা মাদারীপুর থেকে মালামাল আনা নেওয়ায় খরচ বেশী হয়ে যায়। যাতে লোক সানের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
হোন্ডা চালক অলিয়ার রহমান জানান,এ সড়কের অবস্থা এতই খারাপ যে,হোন্ডা চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। জরুরী সড়কটি মেরামত করা দরকার।
কালিরবাজারের চিকিৎসক তাপস রায় জানান,অসুস্থ রোগী নিয়ে এ সড়কে যাতায়াত করতে হচ্ছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে।সড়কটি দ্রুত মেরামত করা দরকার।
মাদারীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী নির্মল কুমার বিশ^াস জানান, চলতি অর্থ বছরে ১৯ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৭ কিলোমিটার সড়কের মেরামত কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বাস দেন এ কর্মকর্তা।
শুধু এই সড়কই নয়।জেলার অভ্যন্তরীণ রুটের বেশ কিছু সড়কের একই অবস্থা। এসকল সড়কগুলোর দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত মেরামতের জোরদাবি এলাকার সর্বস্তরের মানুষের।