সিলেটে জঙ্গি আস্তানা ঘিরে দিনভর শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের মধ্যে সন্ধ্যায় ঢাকায় আত্মঘাতি বোমায় এক যুবক নিহত হয়েছে। এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস। আইএসের মুখপাত্র আমাকের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ এ খবর দিয়েছে।
এদিকে সিলেটের শিববাড়িতে জঙ্গি আস্তানা ঘিরে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে চলে রুদ্ধশ্বাস অভিযান। রাত ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চূড়ান্ত অভিযানে যায়নি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযানে অংশ নিতে গতকাল বিকালেই ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষ সোয়াত টিম সিলেটে পৌঁছে। অভিযানে সহযোগিতা করতে সেখানে সেনা বাহিনীর প্যারা কমান্ডো দলের সদস্যরাও যান। শুক্রবার ভোররাত থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর শিববাড়ির জঙ্গি আস্তানা ঘিরে রাখার খবরে দিনভর দেশবাসীর দৃষ্টি ছিল সিলেটে। এরমধ্যে সন্ধ্যায় হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের মূল সড়কে নিজের সঙ্গে থাকা বোমার বিস্ফোরণে যুবক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ওই ঘটনায় বোমাবহনকারী যুবক ছাড়া কেউ হতাহত হয়নি। যুবকের বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ বছর। ওই যুবকের পরনে ছিল জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্ট। বিস্ফোরণে তার নাড়িভুড়ি বের হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। আশকোনায় এক সপ্তাহ আগে র্যাবের একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে এক যুবক আত্মঘাতি হয়েছিল। পরের দিন র্যাবের চেকপোস্টে গুলিতে এক যুবক মারা যায়। র্যাব দাবি করেছিল ওই যুবকের সঙ্গেও বোমা ছিল।
এদিকে রাতে সরজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বিমানবন্দরের উল্টোপাশে এয়ারপোর্ট জোনের পেট্রল ইন্সপেক্টর, উত্তরা ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ের কয়েক গজের মধ্যেই ত্রিপল দিয়ে আত্মঘাতী যুবকের লাশ ঢেকে রাখা হয়। যেখানে বিস্ফোরণ হয়, সেখানেই ওই যুবকের লাশ পড়ে ছিল। ঘটনার সময় আশপাশে থাকা কয়েকজন জানিয়েছেন, তারা বেশ বড় শব্দ শুনতে পেয়েছেন। তবে কী ঘটেছে তা দেখেননি। পরে সেখানে এক যুবকের ছিন্নভিন্ন দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। বিস্ফোরণে আত্মঘাতী যুবকের কোমরের দিকে দেহ প্রায় দুই অংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনার সময় পুলিশ বক্সে থাকা একজন পুলিশ ও আনসার সদস্যের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ওই যুবক কিছু সময় পুলিশ বক্সের সামনে ঘুরাফেরা করছিল। তার গতিবিধি সন্দেহ হলে তাকে কি কারণে ঘুরাফেরা করছে তা জানতে চাওয়া মাত্র সঙ্গে থাকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
ঘটনার পরপরই সেখানে ছুটে যান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেখানে যান সিআইডি’র আলামত সংগ্রহকারী দল। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ঘটনাটি আত্মঘাতি হামলা না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর মনিটরিং এর কারণে ওই যুবক নিজের সঙ্গে থাকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
ঘটনার পর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের এএসপি তারিক আহমেদ বলেন, ওই যুবক উত্তরার দিক থেকে আসছিল। এয়ার পোর্টের গোলচত্বরের কাছে আসার পরই সে বিস্ফোরণ ঘটায়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) শাহেন শাহ বলেন, বিস্ফোরণে তার শরীরের নাড়িভুড়ি বেরিয়ে গেছে। ধারণা করছি যে ওই যুবক বোমা নিয়ে এয়ারপোর্ট বা পুলিশ বক্সের দিকে যাচ্ছিল। হয়তো ওই বোমা বিস্ফোরণেই সে নিহত হয়েছে।
তবে বিমানবন্দরের কাছে ঘটনাটিকে আত্মঘাতি হামলা দাবি করে এর দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস। আইএসের মুখপাত্র আমাক নিউজের বরাতে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংস্থা সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ রাতে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
এদিকে এ ঘটনার পর যুক্তরাজ্য তাদের দেশের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা হালনাগাদ করেছে। এতে বলা হয়েছে, এ ঘটনার পর বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে বলে বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
সিলেটে জঙ্গি আস্তানা ঘিরে অভিযান
শ্বাসরুদ্ধ অপেক্ষা। চারদিকে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। সবার মাঝে অজানা শঙ্কা। এরই মধ্যে গ্রেনেড বিস্ফোরণ, গোলাগুলি। সময়ের সঙ্গে বাড়ছে উত্তেজনার পারদ। ঢাকা থেকে যোগ দিয়েছে সোয়াত টিম। যোগ দিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম টিমের সদস্যরা। দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টা বন্দি সিলেটের আতিয়ার ভিলার বাসিন্দারা। যেখানে রয়েছে জঙ্গি আস্তানা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আতিয়ার ভিলা ঘিরে ফেলে পুলিশ। এ ভিলার নিচতলার জঙ্গি আস্তানাকে ঘিরে গোটা সিলেট নগরীতে এখন টান টান উত্তেজনা। কি হয়, কি হচ্ছে- এমন প্রশ্ন সবার মনে। এ অবস্থায় রাত পৌনে ন’টায় উপস্থিত হন সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যরা।
রাত তখন সাড়ে তিনটা। গোটা সিলেট শহর ঘুমে আচ্ছন্ন। ওই সময় দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ী এলাকায় অভিযান শুরু করে ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম টিমের সদস্যরা। তল্লাশি করতে করতে আতিয়ার ভিলাতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায় তারা। ৫ তলা ওই ভবনের নিচতলায় জঙ্গি রয়েছে নিশ্চিত হওয়ার পর ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ করে দেয়। পরে বাসার ফটকেও তালা দেয়। একই সঙ্গে পাশের চারতলা ভবনে জঙ্গি থাকার ব্যাপারে সন্দেহ করে কাউন্টার টেররিজম দলের সদস্যরা। তারা ওই বাসাও তালাবদ্ধ করে দেয়। পরে সিলেট মহানগর পুলিশ ভোররাত থেকেই আতিয়ার ভিলাসহ দু’টি ভবন ঘেরাও করে রাখে। ভোরের দিকে পুলিশ ওই ভবনে ঢুকতে চাইলে জঙ্গিরা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে পুলিশকে লক্ষ্য করে পরপর কয়েকটি গ্রেনেড ও গুলিবর্ষণ করে। পুলিশও কয়েকরাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলি ও গ্রেনেডের শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। ভোরে গ্রেনেড ও গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। এ সময় শিববাড়ী থেকে পাঠানপাড়া রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়া হয়। পুলিশ আতিয়ার ভিলাকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে। মূল রাস্তার প্রবেশ পথে দেয়া হয় ব্যারিকেড। আর আতিয়ার ভিলার একটু দূরে আরেকটি ব্যারিকেড দেয়। পিছন দিক থেকে পুলিশ স্কুলের সামনে ব্যারিকেড বসায়। আতিয়ার ভিলার ঠিক পেছনের অংশেও দেয়া হয় ব্যারিকেড। ফলে চারদিকে অবরুদ্ধ থাকায় পুরো ৫ তলা বিশিষ্ট আতিয়ার ভবন ও পাশের চারতলা ভবনের সব পথই রুদ্ধ করে দেয়। ওদিকে থেমে থেমে চলছিল গুলিবিনিময়। কখনো ঘরের ভেতর থেকে আবার কখনো পুলিশ ছুড়ছিল। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ১৫ মিনিট পরপর গুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় পুলিশ পাশের ভবনের ছাদ, দেয়ালের কর্নার, পিছন দিকের দেয়ালের নিচের অংশে পজিশন নিয়ে বসে থাকে। সকাল ১০ টার দিকে ঘটনাস্থলে যান সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া, ডিআইজি কামরুল আহসান, অতিরিক্ত কমিশনার রোকনউদ্দিন, সিলেটের পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামানসহ সিলেট পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া। তিনি বলেন- পুলিশ আতিয়ার ভিলা ঘিরে রেখেছে। ভেতরে অনেকেই রয়েছেন। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে অভিযান চালানো হচ্ছে না। তিনি বলেন- ঢাকার কাউন্টার টেররিজম দলের সদস্যদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই জঙ্গি আস্তানার সন্ধান মিলে। এখানে দুইজন পুরুষ ও একজন মহিলা রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। কাউন্টার টেররিজম টিমের এক সদস্য জানিয়েছেন- চট্টগ্রামসহ অন্যান্য এলাকা থেকে আটক জঙ্গিদের তথ্যের ভিত্তিতে এখানে অভিযান চালানো হয়। তারা খবর পান মর্জিনার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল সিলেটে অবস্থান করছে। পরে তারা মর্জিনার নামে কোড ব্যবহার করে ডিভাইসের মাধ্যমে নিশ্চিত হন। এরপর তারা অভিযান শুরু করেন। কিন্তু অভিযানের সময় তাদের লক্ষ্য করে গুলি ও গ্রেনেড ছোড়া হয়। তিনি বলেন- আতিয়ার ভিলার ওই কক্ষে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণে সকল প্রস্তুতি নিয়েই অভিযান পরিচালনা করা হবে। সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের শিববাড়ী পয়েন্টের দুই গজের মধ্যেই এই ভবনের অবস্থান। আতিয়ার ভিলায় রয়েছে মোট ৩০টি ফ্ল্যাট। পাশে রয়েছে ৪ তলা ভবন। ওই ভবনে রয়েছে ১০টি ফ্ল্যাট। দু’টি ভবনের মালিক হচ্ছেন স্থানীয় উস্তার মিয়া। সিলেটে উস্তার মিয়ার রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। নগরীর উপ-শহরেও রয়েছে তার বাসা। উস্তার মিয়া তার মালিকানাধীন প্রতিটি ভবনেই ফ্ল্যাট নির্মাণ করে ভাড়া দেন। উস্তার মিয়ার বাসায় জঙ্গি আস্তানার খবর রটার পর তিনি নিজেও ছুটে যান ওখানে। তিনিও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। উস্তার মিয়া পরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন- তার মালিকানাধীন ৫ম তলা বাসায় রয়েছে মোট ৩০টি ফ্ল্যাট। এর মধ্যে নিচতলার একটি ফ্ল্যাট গত জানুয়ারি মাসে ভাড়া নেয় মর্জিনা নামের এক মহিলা। ওই মহিলার স্বামীর নাম কাওছার আলী। ভাড়া নেয়ার সময় মর্জিনা তার স্বামীকে ‘প্রাণ’ কোম্পানির কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। উস্তার জানান- ভাড়া নেয়ার সময় তিনি যথাযথ নিয়ম মেনেই বাসা ভাড়া দিয়েছেন। তারা প্রতি মাসে ভাড়াও দিয়েছে। এরা যে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত সেটি তারা বুঝতে পারেননি। উস্তার মিয়ার ছেলে কাওছার আহমদ রিপন জানিয়েছেন- ভাড়া দেয়ার সময় আমরা তাদের সন্দেহ করতে পারিনি। এছাড়া তাদের আইডি কার্ড রেখে দিয়েছিলাম। এদিকে- অভিযান সম্পর্কে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুছা মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ‘রাতে জঙ্গি সন্দেহে প্রথমে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরপর পুলিশ বাধার মুখে পড়ে। পড়ে যখন বাড়ির মালিকের কাছ থেকে তাদের ছবি দেখলাম তখন পুরোপুরি নিশ্চিত হলাম যাদের খুঁজছিলাম তারা এখানে রয়েছে।’ তিনি বলেন- ওরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ও গুলি ছুড়েছে। এদিকে- সকালের দিকে বোমা ও গুলির শব্দের পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ আতিয়ার ভিলার আশপাশের সব ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে দেয়। এছাড়া সামনের দোকানপাটও খোলা হয়নি। সকাল ৯টার দিকে পুলিশ আতিয়ার ভিলার পাশের চারতলা ভবনের বাসিন্দাদের উদ্দেশে মাইকে ঘোষণা দেয় বেরিয়ে আসার জন্য। এ সময় পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাসার ভেতর থেকে একে একে বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা। পুলিশ কর্মকর্তা জেদান আল মুছা জানিয়েছেন- সকাল ৯ টার দিকে তারা অন্তত ৩০ জনকে ওই বাসার ১০টি ফ্ল্যাট থেকে বের করে নিয়ে আসেন। এর মধ্যে শিশুদের পুলিশ কর্মকর্তারা গিয়ে নিয়ে আসেন। তাদের নিরাপদে উদ্ধারের পর পেছনের স্কুলে নিয়ে রাখা হয়। তবে আতিয়ার ভিলার কাউকে তারা উদ্ধার করতে পারেননি। ওই বাসায় ৫ তলায় শতাধিক লোক আটকা রয়েছেন। দিনভর তারা কেবল মোবাইল ফোনে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। দুপুরের দিকে মাইক নিয়ে আতিয়ার ভিলার পাশে যান এক সাব-ইন্সপেক্টর। তিনি ওই সময় হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দিয়ে বলেন- ‘আপনারা এসে আত্মসমর্পণ করুন।’ এতে কোনো সাড়া মেলেনি। একপর্যায়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন- ‘মর্জিনা বেগম আপনার চার দিক ঘিরে রাখা হয়েছে। আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করুন।’ তার এই ঘোষণার পর বাড়ির ভেতর থেকে মহিলা কণ্ঠের আওয়াজ আসে। ভেতর থেকে জবাব দেয়া হয়। বলা হয়- ‘আপনারা শয়তানের পথে আর আমরা হলাম আল্লাহ্র পথে।’ এরপর ওই মহিলার কাছ থেকে আরেক পুরুষ কণ্ঠের আওয়াজ ভেসে আসে। পুরুষ কণ্ঠ থেকে বলা হয়- ‘দেরি করছো কেন- তাড়াতাড়ি সোয়াট পাঠাও।’ বিকাল ৪ টার দিকে সেখানে আসেন সোয়াটের সদস্যরা। ঢাকা থেকে সড়ক পথেই তারা সিলেটে পৌঁছেন। এরপর তারা প্রথমে পুরো এলাকা রেকি করে অভিযান শুরু করেন। প্রথমে তারা দু’টি ভবনের মধ্যে চারতলা ভবনটি দখলে নেন। ওই ভবন দখলের সময় তারা তল্লাশিও করেন। কিন্তু কিছু পাননি। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা চারতলা ভবনটি তল্লাশির পর অভিযান বিরতি দেন। পুলিশ কর্মকর্তা জেদান আল মুছা জানান- ‘আমাদের ধারণা- জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র ও বিস্ফোরক রয়েছে। যেহেতু ওই ভবনে অনেক লোক আটকা রয়েছেন তাদের কারণে অভিযানে বিলম্ব হচ্ছে।’ এদিকে- রাত ৭ টার দিকে আতিয়ার ভবনে যান সেনাবাহিনীর একটি প্যারা কমান্ডো দল। তারা অভিযানে সহায়তা করতে গেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।