ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকায় সিমেন্টবোঝাই ট্রাক উল্টে একই পরিবারের পাঁচজনসহ ১০ জন নিহত হয়েছে। এ সময় আরো চার যাত্রী আহত হন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, হতদরিদ্র পরিবারগুলো ট্রাকে থাকা সিমেন্টের বস্তার ওপর বসে ময়মনসিংহ ও শেরপুরে যাচ্ছিল। রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরগামী সিমেন্টবোঝাই ট্রাকটি মেহেরবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এ সময় সিমেন্টের বস্তার নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে ৯ জন নিহত হন। খবর পেয়ে ভালুকা ও ত্রিশালের ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার যাত্রাবাজার এলাকার একই পরিবারের পাঁচ সদস্য- আজিজুল হক (৩৫), স্ত্রী রেজিয়া আক্তার (৩০), ছেলে মেহেদী হাসান (১১), মিজান (৮) ও সিজার (৪) এবং ময়মনসিংহ সদরের চরশিকতা গ্রামের জোসনা বেগম (৫৫), সিরাজুল ইসলাম (১৮) ও অজ্ঞাত দুজনসহ নয়জনের লাশ উদ্ধার করে। গুরুতর আহত পাঁচজনকে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকশি গ্রামের শাহজাহান হোসেন (৪০) মারা যান। গুরুতর আহত সলিম (৩৩), কদ্দুস আলী (৩৫), জহুরউদ্দিন (২৫), ইমাজউদ্দিন (৪০)কে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত আজিজুল হকের শ্যালক জানান, আজিজুল ঢাকায় রিকশা চালাতো। তার স্ত্রী নিহত রেজিয়া বাসা বাড়িতে বুয়ার কাজ করতেন। বড় ছেলে নিহত মেহেদী একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতো। ১ মাস আগে তারা ঢাকায় গিয়েছিল। ২৬শে সে মার্চসহ ৩ দিনের ছুটিতে যানবাহনে ভিড় থাকায় স্বল্প ভাড়ায় তারা ট্রাকে করে অসুস্থ শ্বশুরকে দেখতে বাড়ি যাচ্ছিল।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ও ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু জাফর রিপন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে ফোরলেন সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি করে ধীরগতিতে সংস্কার কাজ করার কারণে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। ভালুকা ফায়ার সার্ভিসের অফিসার রেজাউল করিম জানান, সিমেন্টের বস্তা চাপায় অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে । ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোরার্জি দেশাই বর্মণ জানান, নিহতদের অধিকাংশই হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য। লাশ বহনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে । নিহতদের পরিবারকে জনপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা করা হবে।