১৯৭৮ সালের মার্চে যাত্রা শুরু হয়েছিল দেশের সর্ববৃহৎ ক্রীড়া আসর বাংলাদেশ গেমস। প্রতি চার বছর অন্তর এ গেমস হওয়ার কথা। প্রথম ৭ আসর ঠিকঠাক মতোই হয়েছিল। তবে সপ্তম আর অষ্টম আসরের মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল ১১ বছর। ২০০২ সালে হয়েছে সপ্তম বাংলাদেশ গেমস, অষ্টম আসর হয়েছে ২০১৩ সালে। দেশের প্রধান গেমসটাই নিয়মিত আয়োজন করতে পারে না বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ)। এর বাইরে আরেকটি বড় যুব বাংলাদেশ গেমসের প্রচলনও করতে চায় বিওএ। অনেক দিন ধরেই বিওএ কর্মকর্তাদের মুখেমুখে যুব বাংলাদেশ গেমসের কথা লেগে থাকলেও ওই পর্যন্তই। মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা ঘোষণা দিয়েছিলেন ২০১৭ সালেই তারা যুব গেমস আয়োজন করবে। কিন্তু এ বছর যুব গেমস আয়োজন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বিওএর আগের কমিটির উপ-মহাসচিব বাদল রায় এবার সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। যুব গেমস আয়োজনের বিষয়ে কাজ করতে তাকে দায়িত্ব দিয়েছিল বিওএ। তিনি এখন গুরুতর অসুস্থ-চিকিৎসাধীন আছেন সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে। তবে বাদল রায়ের অসুস্থার কারণে নয়, এ বছর যুব গেমস অনিশ্চিত হয়েছে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ার কারণে। গেমসের জন্য ৫ কোটি টাকার মতো একটি বাজেট করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে জমা দিয়েছিল বিওএ। ওই প্রস্তাবনা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় হয়ে এখন আছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। ২০১৭ সালে গেমস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস। ‘বাজেটসহ যে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে তা অনুমোদন হয়নি এখনো। আমার মনে হয় না ২০১৭ সালে এই গেমস আয়োজন সম্ভব’। তবে গেমসের আয়োজক বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা আশা ছাড়েননি এখনো। নির্বাচনের পর ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় যেভাবে গেমস আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রায় আড়াই মাস সে কথাই বললেন দৃঢ়তার সঙ্গে ‘গেমস এ বছরই হবে।’ একটা বাজেট তো জমা দিয়েছেন, সেটার কী অবস্থা? ‘আমরা ওটা নিয়ে কাজ করছি। তবে এখনই সব বলতে পারব না। তারিখ নির্ধারণ হলে তখন সব জানাতে পারব। তবে ইনশাল্লাহ করে ফেলব। এ বছরই যুব বাংলাদেশ গেমস হবে’- বলেন তিনি। গেমস আয়োজনে প্রথম নিশ্চয়তা দরকার টাকার। বাজেট অনুমোদন না হওয়ায় গেমসের আকাশেও এখন অনিশ্চয়তার কালো মেঘ। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস মনে করছেন গেমস ২০১৮ সালে হলেই ভালো। ‘আমরা তো এ বছর সব ফেডারেশন নিয়ে বড় পরিসরে প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি করছি। আশা করছি এ কর্মসূচি থেকে অনেক নতুন খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে। যুব বাংলাদেশ গেমস পরের বছর হলে এই ক্রীড়াবিদরা অংশ নিতে পারবেন’। বিওএর পরিকল্পনা বাংলাদেশ গেমসের পাশাপাশি যুব গেমসটাও নিয়মিত আয়োজন করা। কিন্তু ২০১৩ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ গেমস হওয়ার পর চার বছর কেটে যাচ্ছে। সে হিসেবে এবছরই হওয়ার কথা বাংলাদেশ গেমস। কিন্তু হচ্ছে না। বাংলাদেশ গেমসই যেখানে নিয়মিত রাখতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে নতুন একটি গেমস প্রবর্তন করতে পারবে কি না বিওএ, সেটাই প্রশ্ন।
এই প্রশ্নের উত্তর আছে বিওএ উপ-মহাসচিব আশিকুর রহমান মিকুর কাছে। তারমতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) পরিচালিত প্রতিভা অন্বেষা কার্যক্রমে উঠে আসা ক্রীড়াবিদদের লড়াইয়ের মঞ্চ হতে পারে যুব বাংলাদেশ গেমস। প্রতিভা অন্বেষা কার্যক্রমে উঠে আসা অনূর্ধ্ব-১৬ বয়সী ক্রীড়াবিদদের সিনিয়র লেভেলে উঠে আসার আগে প্রতিযোগিতার স্বাদ দিতেই প্রথমবারের মতো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এ গেমস আয়োজনের। এটি হতে পারে উদীয়মান অ্যাথলিটদের উঠে আসার মঞ্চ।