বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) শেষ আসরে নতুন নাম ও নতুন মালিকানায় অংশ নেয় খুলনা টাইটানস। প্রথম আসরে শিরোপার বেশ কাছে গিয়ে তা ধরতে পারেনি। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রাজশাহী কিংসের কাছে হেরে ফাইনালে খেলার আশা শেষ হয়ে তাদের। কিন্তু এবার তাদের চেষ্টা শিরোপা ঘরে তোলার। যে কারণে বিপিএলের ৫ম আসরের ৪ মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। গতকাল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে আনুষ্ঠানিকভাবে আইকন ক্রিকেটার ও অধিনায়ক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন দলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদ। অবশ্য রিয়াদ প্রথম আসরেও ছিলেন টাইটানসের অধিনায়ক। শুধু তাই নয়, দুই বছরের জন্য প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট লিজেন্ডস মাহেলা জয়াবর্ধনেকে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে মাহমুদুল্লাহ ও মাহেলাকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন খুলনার টিম ম্যানেজম্যান্ট। মূলত অনুষ্ঠানে আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিলেন লঙ্কান লিজেন্ড মাহেলা। আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে চ্যাম্পিয়ন করা এই কোচ বিপিএলের দায়িত্ব নিয়ে বলেন, ‘ধন্যবাদ আমাকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য। বাংলাদেশে বহুবার এসেছি। এখানে সুখস্মৃতি আছে। আশা করি এবারো ভালোস্মৃতি নিয়েই শেষ করতে পারবো। আমি গতবারও এখানে খেলেছি। এখানে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিপূর্ণ টুর্নামেন্ট হয়। গতবার ক্রিকেটার হিসেবে খেললেও এবার কোচ হিসেবে আছি। আর রিয়াদ অসাধারণ একজন অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে খুলনা ভালো কিছু করে দেখাবে। আমি সেই চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে আছি।’
বিপিএলে নিলামে সাধারণত আইকন ক্রিকেটারদের দলগুলো বাছাই করে নেয়। কিন্তু এবার বিসিবি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল ঘোষণা দিয়েছে আগের আসরে খেলা আইকন ক্রিকেটারসহ চারজনকে ইচ্ছা করলে দল রেখে দিতে পারবে, বা তাদের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করতে পারবে। সেই হিসেবে গত আসরে খুলনায় খেলা মাহমুদুল্লাহ এবারও এই দলে খেলছেন বলেন জানান কাজী ইনাম। তিনি বলেন, ‘আসলে বিসিবি অনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে গত আসরের আইকনসহ চারজন ক্রিকেটার প্রত্যেকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি রেখে দিতে পারবে। সেই হিসেবে আমরা বিসিবির অনুমতি নিয়েই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে রেখেছি এবং তাকে অধিনায়ক হিসেবেই দায়িত্ব দিয়েছি।’ গত আসরের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে এবারও দারুণ কিছুর আশায় দলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। যে কারণে তার চেষ্টা ছিল শেষ আসরে টিম ম্যানেজম্যান্টের বেশির ভাগ সদস্যকেই রেখে দেয়ার। উপদেষ্টা হিসেবে তাই এবারো খুলনার সঙ্গে আছেন জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাসার সুমন ও ম্যানেজার হিসেবে সাবেক তারকা নাফীস ইকবাল। এছাড়াও দায়িত্বে রেখে দেয়া হয়েছে গত আসরের মিডিয়া ম্যানেজার মিনহাজ উদ্দিন খান ও সহকারী কোচ ইমদাদুল বাশার রিপনকে। তিনি বলেন, ‘গত বছরের অভিজ্ঞতায় আমরা বুঝতে পেরেছি আসন্ন বিপিএলে কীভাবে কাজ করতে হবে। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা হাবিবুল বাশার ও টিম ম্যানেজমেন্ট-এর সঙ্গে কথা বলেই দল সাজাচ্ছি। তার ধারাবাহিকতায় বিদেশি কিছু খেলোয়াড় আমরা দলে নিয়েছি। তবে গত আসরে কোচ স্টুয়ার্ট ল’কে এবার আমরা পাইনি তিনি ব্যস্ত থাকায়। শেষ আসরে যে টিম ম্যানেজম্যান্ট ছিল তাদেরই আমরা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। কারণ প্রথম আসরেই তাদের হাত ধরে আমরা ভালো কিছু পেয়েছিলাম। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।’
এবারও খুলনার নেতৃত্ব পেয়ে খুশি জাতীয় দলের তারকা অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লাহ। এবার বড় চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে দ্বিতীয়বারের মতো অধিনায়কের ভার দেয়ায় ইনাম ভাইকে ধন্যবাদ। গত বছর আমরা পুরো দলের নৈপুণ্যেই সফলতা পেয়েছি। তার ধারাবাহিকতা এবার রাখতে পারলে আবারও সফল হবো। আর মাহেলার মতো তারকা কোচের অধীনে কাজ করতে আমরা মুখিয়ে আছি। তার কাছ থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে। শুধু আমিই নই, মাহেলা কোচ হিসেবে থাকায় উপকৃত হবে এদেশের তরুণ ক্রিকেটাররাও। আর অধিনায়কের যে চ্যালেঞ্জ তাতে জিততে চাই। লক্ষ্য অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়া। এবার দলটি হচ্ছে গতবারের তুলনাতে আরো বেশি শক্তিশালী ও ভারসাম্যপূর্ণ। তাই আশা করি ভালো কিছুই হবে। ভালো ক্রিকেট উপহার দিতে চাই।’