চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে দেশে ফেরার পরই মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নিয়ে শুরু গুঞ্জন। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের আগেই তাকে অধিনায়ক পদ থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের একটি সংবাদ সম্মেলনের পর। যদিও সেই সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি প্রধান এমন কথা মাশরাফিকে নিয়ে এমন কথা সরাসরি বলেননি। এর পরও গেল কয়েকদিন এ সংবাদ ঘিরে চলতে থাকে আলোচনা-সমালোচনার। অধিনায়ক হিসেবে যার বিকল্প নেই। বোলার হিসেবেও দলের সেরা পারফরমারদের একজন। তাহালে কেন তাকে বাদ ! নাজমুল হাসান পাপন গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিলেন এমন কোনো চিন্তাই নেই তাদের। বরং মাশরাফির ওপর তাদের এতটাই আস্থা যে সরাসরি বলে দিলেন, ‘একটা কথা আজকে পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, ও যতদিন খেলতে পারবে, ততদিন ওকে বাদ দেয়ার প্রশ্নই আসে না।’
নাজমুল হাসান বলেন, ‘সেদিন আমি যেটা বলেছি, সেটা পরিষ্কার। আপনারা তো পুরোটা দেখান না (টিভিতে), একটা অংশ দেখান তো, এতে লোকে বিভ্রান্ত হয়। ওখানে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ভারতের এমএস ধোনির উদাহরণ দিয়ে যে, ধোনি ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলবে না বলে এখনই ভারত তাদের নতুন অধিনায়ক এনেছে। বাংলাদেশে আমাদের সেই পরিকল্পনা আছে কি না। আমি বলেছিলাম, এটা যে চিন্তা-ভাবনায় আছে, সেটার সবচেয়ে বড় উদাহরণ টি-টোয়েন্টি। পরের বিশ্বকাপের কথা ভেবে যেটা আমরা করেছি। কিন্তু ওটার সঙ্গে ওয়ানডের কোনো সম্পর্ক নাই। ওয়ানডে নিয়ে, মাশরাফির অধিনায়কত্ব যাওয়া, না যাওয়া নিয়ে কথাই হয়নি। কিন্তু এমনভাবে সব জায়গায় প্রচারিত হচ্ছে, যেন মাশরাফিকে এখনই বাদ দেওয়া হচ্ছে, নতুন অধিনায়ক খোঁজা হচ্ছে। এরকম কোনো আলাপই হয়নি। হওয়ার কারণও নেই।’
তিনি বলেন, ‘দুটি ব্যাপার মনে রাখতে হবে। প্রথমত, মাশরাফি শুধু একজন খেলোয়াড়ই নন। সে অধিনায়ক। তার যে দায়িত্বটি আছে, এই ভূমিকাটা সে যেভাবে সম্পন্ন করে যাচ্ছে এবং করে আসছে, বাংলাদেশে তার বিকল্প পাওয়া প্রায় অসম্ভব। দ্বিতীয়ত আপনি যদি পারফরম্যান্সের কথা ধরেন, অবশ্যই পেস বোলার হিসেবে পারফরম্যান্সও তার অনেক ভালো। আমাদের যতজন ফাস্ট বোলার আছে, তার পারফরম্যান্স অনেক অনেক ভালো।’
বিসিবি প্রধান বলেন, ‘এসব প্রশ্ন এই সময়ে ওঠা উচিতই না। আমাদের সামনে আরও অনেক খেলা আছে। একটা বিকল্প যদি আমরা না পাই, তার আগেই যদি একটা খেলোয়াড়কে নিয়ে এসব প্রশ্ন হয়, তাহলে তার মনের অবস্থা কী হতে পারে! ওর কথা চিন্তা করে আমার নিজের ভেতরও তো একটা অস্বস্তি অনুভূত হয়। আমি যেটাই করি, আগে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলি। সেটাই হবে। যার কথা বলছি, সেই জানতে পারবে।’
নাজমুল হাসান পাপনের মতে, ভবিষ্যতের ভাবনা কেবলই প্রক্রিয়াগত। মাশরাফির ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত বোর্ড ছেড়ে দিচ্ছে তার ওপরই। তিনি বলেন, ‘মাথায় চিন্তা-ভাবনা সবসময় থাকবে, সাকিব চলে গেলে কী হবে, মুশফিক না থাকলে কী হবে। এই চিন্তা তো আমাদের সবসময় থাকবেই। কিন্তু এমন একটা ভাব হচ্ছে যেন আজকেই বাদ দিয়ে দিচ্ছি মাশরাফিকে। যেটা ওর জন্য অস্বস্তিকর, আমাদের জন্যও অস্বস্তি কর পরিবেশ তৈরি হয়।’