৯১ রানে এগিয়ে থেকে প্রস্তুতি ম্যাচে দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিল তামিম ইকবালের সবুজ দল। চট্টগ্রামের সন্তান ও জাতীয় দলের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল ২৩ রানে অপরাজিত থেকে ব্যাট করতে নেমেছিলেন। সঙ্গে ছিল একই বিভাগের আরেক ক্রিকেটার মুমিনুল হক সৌরভ। কিন্তু তামিম নিজের নামের পাশে মাত্র ৬ যোগ করেই ফিরতে হয়েছে। তিনদিনের ম্যাচে মুমিনুলের ডাকে তাড়াহুড়া করে রান আউটের শিকার হন তিনি। বড় রান করার আশা ভেস্তে যাওয়াতে ভীষণ রেগে যান। প্রচণ্ড রাগ নিয়ে ড্রেসিং রুমে প্রবেশ করেন তামিম। এরপর সাব্বির এসে ১০ রানের বেশি অবদান রাখতে পারেননি। তবে হাল ধরে রেখেছিলেন মুমিনুল। সঙ্গে যোগ দেন নাসির হোসেন। যদিও দুজন ফিফটি হাঁকানোর পর তিন অঙ্কের আশা জাগিয়ে আউট হন। শেষ পর্যন্ত লেগ স্পিনার তানভির হায়দারের আরো একটি ফিফটি যোগ হলে সবুজ দলের সবকটি উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭৮.৩ ওভারে ২৮৩ রান। লিড ১৪৩ রানের। জবাব দিতে নেমে মুশফিকুর রহীমের লাল দলের শুরুটা গতকালও ভালো হয়নি। ওপেনার ইমরুল কায়েস পর পর দুই চারের মার হাঁকিয়ে আউট হয়ে ফিরেছেন সাজঘরে। সৌম্য ৯ ও নাজমুল হোসেন ৭ রান নিয়ে আজ তৃতীয় ও শেষ দিন শুরু করবেন। প্রথম দিনের মতো গতকালও বৃষ্টি হানা দিয়েছিল ম্যাচে। গতকাল সকালে খেলা শুরু হয় ১০টা ১৫ মিনিটে। এরপর ফের ১টা ১০ মিনিটে বৃষ্টি শুরু হলে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। তবে সেই বৃষ্টি বেশিক্ষণ না থাকলেও ৪.৪০ মিনিটের দিকে ফের শুরু হয় বৃষ্টি। তাতে দিনের খেলা শেষ করতে বাধ্য হন আম্পায়াররা।
নাসির হোসেন দীর্ঘদিন হলো টেস্ট দলে নেই। আর মুমিনুল শ্রীলঙ্কা সফরে শেষ ও শততম টেস্টে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। দু’জনই পরীক্ষাতে পাস করেছেন। তবে ৬২ রানের ইনিংসকে জাতীয় দলে ফেরার জন্য যথেস্ট কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নাসির জানান, এ নিয়ে তেমন কোনো চিন্তা নেই। তিনি বলেন, ‘আসলে আমার কাছে তেমন কোনো কিছু মনে হচ্ছে না। এটি প্রস্তুতি ম্যাচ, এখান থেকে যতটুকু সম্ভব আদায় করে নেয়া যায় নিজের জন্য সে চেষ্টাই করেছি। কারণ আমি ও আমরা অনেক দিন ধরে চার দিনের ম্যাচ খেলি না, টেস্ট ম্যাচ খেলি না। তাই চেষ্টা করছিলাম কিভাবে ইনিংসটা বড় করা যায়। হয়তোবা আরো বড় করতে পারতাম। কিন্তু আউট হয়ে গেছি।’
নাসির ব্যাট হাতে ৯২ বল খেলে ৩টি চারের মারে সঙ্গে হাঁকান ৩টি ছয়ের মার। এমন ইনিংসের পরও নাসির বলেন, ‘আমি আবার বলছি এই ম্যাচে খেলে জাতীয় দলে ফেরার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামিনি। খেলেছি খেলাটা ইনজয় করতে। আর অনেক দিন হলো লাল বলে খেলাটা আলাদা পাওয়া। তবে সেঞ্চুরিটি হলে বেশ ভালো হতো।’
দিনের শুরুটায় একটু অস্বস্তিতে ছিলেন মুমিনুল। তবে শুভাশিসকে দারুণ এক অন ড্রাইভে চার মারেন। পরের ওভারে রুবেলকে চার মারেন কাভার ড্রাইভে এভাবে এগিয়ে যান ফিফটির দিকে। মুমিনুল পেসারদের ভালো খেললেও স্পিনারের সামনে একটু এলোমেলোই থাকেন। শ্রীলঙ্কাতে নিজের খেলা শেষ টেস্টেও অফ স্পিনার দিলরুয়ান পেরেরার বলে আউট হয়েছিলেন। গতকাল অবশ্য ভালোই খেলছিলেন। কিন্তু স্পিনার সাকলাইন সজিবকে স্কুপ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে। হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়েন ১৩৫ বলে ৭৩ রান করা টেস্টের এই স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান। লেগ স্পিনার তানবীর হায়দার ৬১ বলে ৮টি চারের মারে ৫১ রান করে আউট হন। স্পিনার সানজামুল ২২ রান করে আউট হলেও পেসার শফিউল ১০ রানে অপরাজিত থাকেন।
তিন দিনের অনুশীলনের চেয়ে নাসির হোসেন এই প্রস্তুতি ম্যাচকে বেশ এগিয়ে রাখছেন। কারণ মাঠে লাড়াইয়ে ব্যাটসম্যান ও বোলাররা নিজেদের আসল পরীক্ষাটা দিতে পারছেন। প্রথম দিন পেসাররা উইকেট পেয়েছিলেন ৯টি। এর মধ্যে শফিউলের শিকার ছিল ৫ উইকেট। গতকাল অবশ্য পেসারদের মধ্যে রুবেল হোসেনই আলোতে ছিলেন। তার শিকার তিন উইকেট। অন্যদিকে স্পিনাররা গতকাল ছিলেন সফল। তাইজুলের ২টি, সাকলাইন ৩টি ও অফস্পিনার নাইম হাসান পেয়েছেন একটি উইকেট। আর শেষ বিকেলে মোস্তাফিজ ইমরুলকে আউট করে পেয়েছেন এক উইকেট।