রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে স্থল ও সমুদ্র সীমান্তে কঠোর নজরদারি শুরু করেছে ভারত। রোহিঙ্গারা ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা কঠোরভাবে ঠেকাতে দিল্লির উর্দ্ধতর্ন মহল থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা পেয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। ওদিকে, ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, সমুদ্র সীমান্ত সিল করে দিয়েছে ভারতীয় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী।
এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, উপর মহলের নির্দেশনা মোতাবেক ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো শনাক্ত করেছে বিএসএফ। তারা পশ্চিমবঙ্গে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের যে কোন চেষ্টা প্রতিহত করতে প্রস্তুত। বিএসএফ সাইথ বেঙ্গলের আইজি পিএসআর আনাজানেয়ুলু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আমাদের যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা স্পষ্ট। সেটা হলো- তাদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করা। আমরা তাদের শনাক্ত করবো এবং পুশব্যাক করবো। আমরা সকল সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়মূলক বৈঠক করেছি। অনুপ্রবেশ রুখে দেয়ার জন্য সীমান্ত এলাকার দূর্বল স্থানগুলো শনাক্ত করেছি।’
বিএসএফ সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিগত সপ্তাহজুড়ে বিএসএস কর্মকর্তা ও নয়া দিল্লির উর্দ্ধতর্নদের সঙ্গে এ নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। এরপর কলকাতায় কয়েক দফা বৈঠক হয়। মঙ্গলবার কলকাতায় সাউথ বেঙ্গল সদরদপ্তরে বিএসএফ কমান্ডেন্টদের বৈঠকে তাদের পদক্ষেপ দেয়ার নির্দেশনা স্পষ্ট করা হয়। এর আগে বলা হয়েছিল, রোহিঙ্গাদের গ্রেপ্তার করে রাজ্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে। কিন্ত, এবার তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পুশ ব্যাক করতে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি দেশটির সুপ্রিম কোর্টে একটি এফিডেভিট দাখিল করেছে। এতে সরকার পশ্চিমবঙ্গে সীমান্ত নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। এতে সরকার রোহিঙ্গাদেরকে ভারতের জন্য ‘নিরাপত্তা হুমকি’ বলে আখ্যা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য, বলেছেন, তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের অবস্থান সমর্থন করেন। তিনি এও বলেছেন, ‘সকল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নয়।’
ওদিকে, ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়, রোহিঙ্গারা সমুদ্রপথে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এই সতর্কবার্তার পর সমুদ্র সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, রোহিঙ্গার বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকা বা মিয়ানমারের সমুদ্র এলাকা দিয়ে আন্দামান ও নিকোবার দ্বিপ থেকে প্রবেশ করতে পারে।
সরকারের সিনিয়র এক সূত্র ইন্ডিয়া টুডেকে বলেছেন, সমুদ্রসীমায় নজরদারি তৎপরতার মধ্যে রয়েছে নজরদাবি বিমান, হভারক্রাফট ও নজরদারি টহল জাহাজ।
এখন পর্যন্ত কোন অনুপ্রবেশ চেষ্টা দেখা যায় নি বলে খবরে বলা হয়। তবে, প্রহরা জোরদার করা হয়েছে আর উচ্চ সতর্কতায় আছে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো।