মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্টির ওপর দেশটির সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্যাতন-নিপীড়ন ও হত্যার কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে চট্টগ্রামের কক্সবাজার ও উখিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এই সংখ্যা মোট রোহিঙ্গার ৬০ শতাংশ।
সম্প্রতি উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান সাকিব আল হাসান। অসহায় জীবন-যাপন করা শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান ইউনিসেফ বাংলাদেশের শুভেচ্ছাদূত সাকিব। এ সময় মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এই রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহবানও জানিয়েছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এক ভিডিও বার্তায় সাকিব বলেন, ‘আমি পুরো জায়গাটা ঘুরে দেখেছি। দেখেছি শিশুদের দুর্বিষহ অবস্থা। আমি চাই আপনারা সবাই সাহায্য করুন।’
২০১৩ সাল থেকে জাতিসংঘের শিশু উন্নয়ন তহবিল প্রকল্প ইউনিসেফ বাংলাদেশের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নাম লেখান সাকিব। এরপর থেকে শিশুদের জন্য নানা কর্মকাণ্ডে তাকে অংশ নিতে দেখা যায়। বাংলাদেশ দল এই মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি নিলেও সাকিব দেশেই রয়েছেন। সাদা পোশাকের ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম চেয়ে আপাতত ছুটিতে আছেন তিনি।প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে দেশ ছাড়ার আগের সময়টাতে তাই তিনি চলে যান উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। সেখানে শিশুদের অসহায় অবস্থা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
মিয়ানমারে জাতিগত রোষের কবলে পড়ে শতশত শিশুর ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া অনেকেই মা-বাবাকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। না খেয়ে, না ঘুমিয়ে, দিনের পর দিন, রাতের পর রাত হেঁটে বা দৌড়ে বাংলাদেশে আসতে গিয়ে পূর্ণ বয়স্কদের পাশাপাশি অনেক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে অনেক প্রসূতি মা রয়েছেন। অনেকেই আবার পথিমধ্যে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। বাংলাদেশে আসার পরে অনেক রেহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে। সব মিলিয়ে জরুরি সেবার প্রয়োজন এমন শিশুর সংখ্যা দুই লাখের বেশি।
সেই সব শিশুদের পাশে দাঁড়তে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের আকুল আবেদন, ‘আমি জানি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সাহায্য আসছে। বাংলাদেশও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তারপরও তাদের অনেক সাহায্য প্রয়োজন। কেননা এখানে নারী এবং বাচ্চার সংখ্যা অনেক বেশি।’