জাল সনদ ও জন্মনিবন্ধন জমা দিয়ে বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী পদে চাকরির আবেদন করেছিলেন এক প্রার্থী। তখন তাঁর জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এরপরও ওই ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাটোরের সিংড়া উপজেলার সরিষাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী পদে এ অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক। তিনি জেলা প্রেসক্লাবে গতকাল শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।
আবু বকর বলেন, বিদ্যালয়টির দপ্তরি কাম প্রহরীর শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ২০১৭ সালের শুরুতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তখন সাফি ইসলামসহ কয়েকজন প্রার্থী আবেদন করেন। আবেদনকারীদের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সাফি ইসলামের সনদ জাল বলে প্রমাণিত হয়। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রে ও জন্মনিবন্ধনের বয়সে সাত বছর গরমিল পাওয়া যায়। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সিংড়ার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিষয়টি তদন্ত করেন। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সাফির জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ ১৯৯০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। কিন্তু জন্মনিবন্ধনে জন্মতারিখ ১৯৯৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণি পাস করেছেন। এরপর পঞ্চম শ্রেণির জাল সনদ দিয়ে একটি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি দেখান। এরপর অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদ জোগাড় করেন।
আবু বকর আরও বলেন, জাল সনদ ও জন্মনিবন্ধনের বয়স ভুয়া প্রমাণিত হওয়ার পরও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সেই প্রার্থীকেই চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের সঙ্গে সাফির যোগাযোগ হচ্ছে। আমজাদের কার্যালয়ে সাফি নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন। কার্যালয়ে থাকেন এমন কয়েকজন ব্যক্তি তাঁকে (বকর) বলেছেন, সাফিকে চাকরি পাওয়ার বিষয়ে আমজাদ নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে আমজাদ হোসেন ও সাফি ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
ইউএনও সঞ্জীব কুমার সরকার বলেন, ঘটনার সময় তিনি দায়িত্বে ছিলেন না। তাই এ বিষয়ে যে তদন্ত হয়েছে, তা তিনি জানেন।
জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বলেছেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।