আগামী ২৩ শে জানুয়ারি রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার কথা। তবে প্রকৃতপক্ষে কখন রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটির ফিরে যেতে পারবেন সে বিষয়ে রয়েছে অস্পষ্টতা। এমনটা জানিয়েছেন বাংলাদেশের দু’জন সিনিয়র কর্মকর্তা। এ নিয়ে আজ সোমবার মিয়ানমারের রাজধানী ন্যাপিডতে দু’দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক শুরু হয়েছে। ওই দুই কর্মকর্তা এই আলোচনার সঙ্গে যুক্ত। তারা বলেছেন, এখনও অনেক কিছু সমাধান করার বাকি রয়েছে। তবে এমন অবস্থার মধ্যে দেশে ফেরত পাঠালে তাতে রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ বাড়বে বলে মনে করছেন অনেক রোহিঙ্গা। তারা মনে করছেন, এর আগেও এমনভাবে তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি তাদের অনুকূলে যায় নি। তাই তারা এবারও আতঙ্কে। এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে আজ জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ আলোচনার টেবিলে। আলোচনার মূল ইস্যুগুলোর অন্যতম হলো ফেরত যাওয়া শরণার্থীদের পরিচয় যৌথভাবে কিভাবে যাচাই করা হবে তা নিয়ে। আলোচনায় যোগ দিয়েছে বাংলাদেশের ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলের। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব শহিদুল হক এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, যেকোনো (রোহিঙ্গার) ফেরত যাওয়া একটি বিশৃংখল ও জটিল বিষয়। তাদের ফিরে যাওয়ার উপযোগী একটি পরিবেশ সৃষ্টি করাই একটি চ্যালেঞ্জ। ওদিকে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জাওয়া হতাই বলেছেন, ফেরত যাওয়া ব্যক্তিরা তাদের যাচাইকরণ প্রক্রিয়ায় পাস করার পরই কেবল নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তিনি আরো বলেন, প্রথম দফায় যে ৫০০ হিন্দুর বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে আসার কথা, তাদের সঙ্গে আরও ৫০০ মুসলিমেরও আসার কথা। তারা স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে চেয়েছেন। তিনি আরো বলেন, প্রথম দফা শরণার্থীদের ফিরে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আমরা ভাল বা মন্দ সব রকম অভিজ্ঞতার শিক্ষা নিতে পারবো। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, আর মাত্র সাতদিন পর ২৩ শে জানুয়ারি রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটির বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ১৯৯২ সালে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা ৭১ বছর বয়সী রোহিঙ্গা মুসলিম হামিদ হোসেন। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পাদিত একটি প্রত্যাবাসন চুক্তির অধীনে গত বছর তিনি ফিরে গিয়েছিলৈন মিয়ানমারে। কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে সেখানে আবার সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর তিনি পালিয়ে আবার বাংলাদেশে চলে আসেন। তিনি বলেন, মিয়ানমার আমাদেরকে আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবে, এমন নিশ্চয়তা আমাদেরকে দিয়েছিল বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। আমাদেরকে বলা হয়েছিল আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবো। তাই আমরা ফিরে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো কিছুই পরিবর্তন হয় নি। তাই যদি আমাদের অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়ে চিরদিনের জন্য নিশ্চয়তা দেয়া হয় তাহলেই আমরা আবার ফিরে যাবো।