এমনই এক সংগ্রামী নারী পাঁচবিবি উপজেলার গনেশপুরের রাজ বানু। দুই ছেলে এক মেয়ের পরিবারে স্বামীর আয় দিয়ে সংসারে চলছিল না। তখন ঘরের কোনে খাঁচায় কোয়েল পালন শুরু করেন। সহায়তায় এগিয়ে আসে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘জাকস ফাউন্ডেশন’। তাকে আড়াই-তিন ফুট মাপের একটি খাঁচাসহ ৩০ দিন বয়সের ১শ’ কোয়েলের বাচ্চা দেয় সংস্থাটি।
৫০ দিন বয়স থেকে ডিম দেয়া শুরু করে এসব কোয়েল। সংসারে বাড়তি আয়ের পথ খুঁজে পান রাজ বানু।
বাড়ির মধ্যে বারান্দার এক কোনায় খাঁচার মধ্যে কোয়েল রয়েছে বাহির থেকে বুঝার উপায় নেই। বাড়ির অন্যান্য কাজের ফাঁকে ফাঁকে কোয়েলের যত্ন নেয়া সম্ভব হয়। এ জন্য বাড়তি জায়গা যেমন প্রয়োজন নেই, তেমনই সময়ও বাড়তি দিতে হয়না। রোগ বালাই নেই বললেই চলে।
রাজ বানু জানান, ১শ’ কোয়েল থেকে প্রতিদিন গড়ে ৭০-৭৫টি ডিম পেয়ে থাকেন। এ ডিম থেকে পরিবারের আমিষের চাহিদা মিটছে। পাশাপাশি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেন। ১০-১২ টাকা হালি দরে বাড়ি থেকেই নিয়ে যান ক্রেতারা। প্রতিদিন গড়ে ১৭০-২০০ টাকার ডিম বিক্রি করেন।
রাজ বানু জানান, কোয়েলের খাবার খরচ বাদে প্রতিদিন আয় থাকে গড়ে ১শ’ টাকা। সংসারে টুকিটাকি খরচের জন্য এখন আর স্বামীর দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়না তার। বরং কোয়েল পালনের আয় থেকে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়াসহ সংসারের অন্যান্য খরচও করেন তিনি।
রাজ বানুর সাফল্য উদ্বুদ্ধ হয়ে একে একে ১৫ জন মহিলা কোয়েল পালনে এগিয়ে আসেন। কোয়েল পালনের মাধ্যমে তারা এখন সংসারে বাড়তি আয় করছেন বলে জানান একই এলাকার রুবিনা, শাহনাজ, জাহেরা ও নাজমুন্নাহার।
জাকস ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক (কৃষি) ওবায়দুল ইসলাম জানান, সামান্য পুঁজিতে যে কেউ খাঁচায় কোয়েল পালন করতে পারেন। করতে পারেন বাড়তি আয়। গ্রামগঞ্জের নারীদের আয় বর্ধনমূলক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্তকরণ ও সংসারে বাড়তি আয়ের জন্য কোয়েল পালন হতে পারে সমাজের জন্য উজ্জল দৃষ্টান্ত। পাশাপাশি সমাজ থেকে দারিদ্র্য নিরসনেও পালন করতে পারে বিশেষ ভূমিকা।
পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে জয়পুরহাটের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘জাকস ফাউন্ডেশন’ এ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে বলে জানান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নুরুল আমিন।