প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কৃষিই এখনও দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে কৃষি খাতের অবদান সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে খাদ্য ঘাটতিমুক্ত করে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২১ ও ১৪২২ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিকে যথাযোগ্য গুরুত্ব দেয়া ও এই খাতে সরকারের সঠিক নজরদারির ফলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছে। শেখ হাসিনা বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে কৃষিখাত পিছিয়েছিল। সার চাওয়ায় কৃষককে হত্যা করেছিল তারা। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কৃষকের ঘরে ঘরে সার পৌঁছে দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক কৃষিতে ভর্তুকি ও বিএডিসির মতো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। তাদের পরামর্শে কৃষিতে ভর্তুকি ও বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন) বন্ধ করে দিলে, ফলাফল উল্টো হতো বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বুধবার চালু করা কৃষি বাতায়ন ও কৃষক বন্ধু ফোন সেবার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,এখন কোনো কৃষক চাইলে সরাসরি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে চাষাবাদে সমস্যার সমাধান করতে পারেন।
দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে কৃষি খাতের অবদানে সবচেয়ে বেশি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কৃষি বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কৃষকদের এসব অবদানকে স্বীকৃতি দিচ্ছে সরকার। বর্তমানে খাদ্যের মজুদ প্রায় চার লাখ টনে পৌঁছেছে। এ ক্ষেত্রে অবদান রাখছে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ, উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আবারো বন্যার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে দেশের মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সে জন্য সরকার সজাগ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের কাছে সরকারি-বেসরকারি মিলে প্রায় এক কোটি ছয় লাখ মেট্রিকটন খাদ্য আছে। তারপরও আমরা অতিরিক্ত খাদ্য আমদানি করে মজুদ ঠিক রাখছি—যেন দেশের মানুষ কোনোমতেই খাদ্যে কষ্ট না পায়। এ সময় আগামী প্রজন্মকেও কৃষির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কৃষিখাত দিনে দিনে অগ্রগতি লাভ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার ও গবেষণার ওপর বেশি জোর দিয়েছে বর্তমান সরকার। প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের কৃষকরা ধান উৎপাদনে এখন অনেক বেশি সফল। সেজন্য ধান উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ স্থান লাভ করেছে বাংলাদেশ।
এবার ৩২ জনকে জাতীয় কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক দেয়া হয়। বাণিজ্যিক খামার, কৃষি সম্প্রসারণ ও গবেষণা এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ ১০টি ক্যাটাগরিতে দেয়া হয় এ পুরস্কার।