ঘটনাটি ম্যাচে বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলের পর। কাঁধের উপরেই বল রেখেছিলেন শ্রীলঙ্কান বোলার ইসুরু উদানা। এর আগের বলও তাই করেছিলেন তিনি। ফলে আম্পায়ারের কাছে আবেদন করেন উইকেটে থাকা ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ। লেগ-আম্পায়ার সাড়াও দেন।
কিন্তু বিপত্তি ঘটে লঙ্কান খেলোয়াড়রা এ ঘটনায় উল্টো আবেদন করেন। তখন মূল আম্পায়ার নো-বল নাকচ করে দেন। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মাঠের বাইরে চতুর্থ আম্পায়ারকে বিষয়টি জানান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনি মানতে নারাজ।
এক পর্যায়ে খেলোয়াড়দের মাঠ ছেড়ে আসতে বলেন অধিনায়ক। মাহমুদউল্লাহ অবশ্য উত্তেজনা থামলে তিন বলে ১২ রান নিয়ে ১ বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশকে এনে দেন ২ উইকেটের অবিস্মরণীয় জয়। বাংলাদেশ চলে যায় রোববারের ফাইনালে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে উত্তেজনায় ঠাসা এক ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে শুক্রবার কলম্বোর ম্যাচের শেষদিকে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাই ঘটেছিল। যা নিয়ে তখন থেকেই নানা আলোচনা ও সমালোচনা। দেশি-বিদেশি অনেক সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেটবোদ্ধারা এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন।
বিদ্ধ বাংলাদেশ দল। আবার কেউবা স্বাভাবিক দৃষ্টিতেই দেখছেন। তাদের মধ্যেই কেউ আবার টাইগারদের হয়েই কথা বলেছেন। তবে বিষয়টিকে ‘হিট অব দ্য মোমেন্ট’ বলেছেন বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে সংস্করণের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। এমনকি যা হয়েছে সেটাকে স্বাভাবিকও বলেছেন তিনি। তাই এ ঘটনাকে বড় করে দেখে এ নিয়ে আলোচনা না করার অনুরোধও করেন এ পেসার।
আর এই পুরো ঘটনাতে সতীর্থদের সমর্থন দিয়ে শনিবার মাশরাফী বলেছেন, ‘মাঠে ওটা হিট অব দ্য মোমেন্টে হয়েছে বলতে পারেন। আর যেটা বললাম নো-বলটা অবশ্যই আমাদের পক্ষেই আসার কথা ছিলো। আপনি দুইটা বাউন্সার মেরেছেন, এটাতো ক্রিকেটিং নিয়মে নেই।
এটা টেস্ট ম্যাচ না। দ্বিতীয় বলে যেটা হয়েছে সেটা আমাদের পক্ষেই আসার কথা ছিলো। ওইখানে হয়তো যেটা হয়েছে আমরা আবেদন করেছিলাম। নো বলটা আমাদের পক্ষে আসবে। আবেদন করায় খারাপ কিছু দেখি না। চতুর্থ আম্পায়ার মাঠের বাইরে ছিলেন। হয়তোবা আরেকটু সংযত হয়ে করা যেত। তবে যেটা বললাম হিট অব দ্য মোমেন্টে এটা হয়ে গেছে। আমার মনে হয় না এটা নিয়ে আলোচনার তেমন কিছু আছে।’
তবে উত্তেজনাকর সে ঘটনায় জরিমানা গুনতে হয়েছে বাংলাদেশের দুই খেলোয়াড়কে। ম্যাচ ফি ২৫ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়েছে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহানের। একটি করে ডিমেরিট পয়েন্টও পেয়েছেন দুজন। এ নিয়ে খুব বেশি কথা বলেননি মাশরাফী। তবে আম্পায়ারের ‘নো’ বল না দেওয়াকেই বড় করে দেখছেন তিনি।
তাই এ ঘটনায় দোষের কিছু দেখছেন না ওয়ানডে অধিনায়ক। ‘ওখানে আসলে কি হয়েছে ঠিক জানিনা। জানার পরে বলা যাবে। এতো আগে আমাদের মতামত দেওয়া ঠিক না। আর এ ধরনের ম্যাচে একটা উত্তেজনা থাকেই যেখানে জিতলেই ফাইনালে উঠবেন।’ মাশরাফী বলেছেন, ‘এখানে আমি আমাদের দোষের কিছু দেখছি না। পাশাপাশি এটাও বলা যায় হয়তো আরেকটু সংযত হওয়া যেত। তবে শেষ পর্যন্ত আমি এটা মনে করি সঠিক ক্রিকেট খেলেই আমরা ম্যাচ জিতেছি। হিট অব দ্য মোমেন্টের অনেক কিছুই মাঠে হয়। ‘
তবে সব ঘটনাকে ছাপিয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ দারুণ এক জয় পাওয়ায় বেজায় খুশি মাশরাফী। আশা করছেন ফাইনালেও ভারতের বিপক্ষে ভালো কিছুই হবে। তবে দ্রুতই মাঠের এ সব ঘটনাকে ভুলে জেতে অনুরোধ করেছেন তিনি। সব ভুলে ফাইনালে নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে নিদাহাস ট্রফির শিরোপা জয়টা সম্ভব বলে আশা করছেন মাশরাফী।