দেশের ঘরোয়া লিগে ব্যাটিংয়ের রাজা বললে হয়তো ভুল হবে না। গত সপ্তাহে বিসিএলে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে সেঞ্চুরির হ্যাট্রিক করেছেন। ঘরোয়া লিগে ধারাবাহিকতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ দিয়েছেন প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তুষার ইমরান। তবে কোন কিছুতেই জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়নি। আপাতত নির্বাচকদের বিবেচনায় যে তিনি নেই সেটাও অনেকটাই পরিষ্কার।শুধু তুষারই নন, ২০১৫ সালে রেকর্ড ভেঙে ১ হাজার ৭১০ রান করেছিলেন শাহরিয়ার নাফিস। এছাড়া আব্দুর রাজ্জাক, নাঈম ইসলামরাও দুর্দান্ত সময় কাটাচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। তুষারের সঙ্গে তারাও নেই নির্বাচকদের বিবেচনায়।
তবে এখনও জাতীয় দলের ড্রেসিং রুমে জায়গা পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন ৩৪ বছর বয়সী তুষার ইমরান। আর অন্তত একটি বার পরীক্ষা দিতে চান তিনি। ক্রিকইনফোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন আকুতিই ফুটে উঠলো তুষারের কণ্ঠে।
‘নান্নু ভাই (মিনহাজুল আবেদীন নান্নু) পুরো ম্যাচ দেখেছেন। আমি মনে করি, ফাইনাল পরীক্ষার আগে যদি আমার একটা টেস্ট পরীক্ষা দেয়ার দরকার হয় তাহলে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিরিজ আসছে। এটা শাহরিয়ার নাফিস, নাঈম ইসলাম, অলক কাপালি এবং আব্দুর রাজ্জাকের জন্যও সুযোগ হতে পারে।’
বয়স বাড়ছে তার রানের চেয়ে দ্রুত। তাই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লড়াইয়ের মতো ফিটনেস আছে কিনা সে প্রশ্ন ঘুরে ফিরে চলেই আসে। তবে তুষারের পরিষ্কার জবাব, পুরোপুরি ফিট তিনি।
‘আমার ফিটনেস আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো তবে আমি ধারাবাহিকভাবে আমি নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করছি। আপনি যখন প্রচুর রান করবেন তখন আপনাকে ফিটনেসের জন্য অতিরিক্ত কিছু করতে হবে না। ২২ গজে কাজটা আমি করে যাচ্ছি।’
মাত্র ৫ টেস্ট আর ৪১ ওয়ানডেতেই থমকে আছে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত খেলা ম্যাচগুলোতে ছিলেন একেবারেই নিষ্প্রভ। আসলে অপ্রস্তুত একজন তরুণ আন্তর্জাতিক অঙ্গণে নিজেকে একেবারেই মানিয়ে নিতে পারেননি। তবে বছরের পর বছর পুড়ে পুড়ে খাঁটি হয়েছেন তুষার। ঘরোয়া লিগটা মাতিয়ে রাখলেও জাতীয় দলের বাস্তবতাটাও তিনি ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পারেন। তাই কেবল নিজের কাজটাই করে যেতে চান।
‘আমি আমার নিজে কাজটা করে যাচ্ছি তবে আমি যে পজিশনে ব্যাট করি সেখানে মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, সাকিব এবং মুমিনুল রয়েছে। তারা সবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিকতা দেখিয়ে আসছে আর আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে কাজটা করে যাচ্ছি।’
জাতীয় দলে সুযোগ না পাবার আক্ষেপ তো অনেক বড়। তবে ঘরো লীগে নিজের জুনিয়ের টিমমেট এবং জাতীয় দলের নিয়মিত মুখগুলোর চেয়ে বেশি রান করাটাই তৃপ্তি দেয় তাকে।
‘যখনই সম্ভব হয়, আমি আমার টিমমেট সৌম্য, ইমরুল, এনামুল বিজয় এবং মোহাম্মদ মিথুনের চেয়ে বেশি রান করার চেষ্টা করি। আর এটাই আমাকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’